Status

ইউরোপের প্রতিরক্ষা খাতে ঐতিহাসিক বাজেট বৃদ্ধি ঘোষণা

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (EU) নেতারা প্রতিরক্ষা শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) ব্রাসেলসে এক জরুরি শীর্ষ সম্মেলনে ইউরোপের সামরিক সক্ষমতা জোরদারের জন্য ব্যাপকভাবে বাজেট বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়া হয়। ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এই পদক্ষেপকে ইউরোপের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও স্বয়ংসম্পূর্ণ ও শক্তিশালী করার কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে।

 

শীর্ষ সম্মেলন শেষে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কোস্টা এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন ইউরোপকে নতুন করে প্রতিরক্ষা কৌশল নির্ধারণ করতে বাধ্য করেছে। কোস্টা বলেন, “আজকের সিদ্ধান্ত ইউরোপের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়। এটি শুধু সামরিক খাতে নয়, বরং ইউরোপের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যও এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।”

 

এই পরিকল্পনার আওতায় ইউরোপের প্রতিরক্ষা খাতকে শক্তিশালী করতে ৮০০ (€) বিলিয়ন ইউরো (প্রায় ৮৬৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) বিনিয়োগের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। প্রথম ধাপে, স্ট্যাবিলিটি অ্যান্ড গ্রোথ প্যাক্টের জাতীয় এস্কেপ ক্লজ সক্রিয় করা হবে, যা সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতিরক্ষা বাজেট তাৎক্ষণিকভাবে বাড়ানোর অনুমতি দেবে। পাশাপাশি, নতুন একটি ১৫০ (€) বিলিয়ন মূল্যের ঋণ সহায়তা পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে, যা ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ক্রয় প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করবে।

 

ভন ডার লেয়েন বলেন, “এই সিদ্ধান্তের ফলে ইউরোপের দেশগুলো দ্রুত প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে পারবে। আমাদের লক্ষ্য ইউরোপের সামরিক সক্ষমতা শক্তিশালী করা এবং নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রদান করা।” এছাড়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলো স্বেচ্ছায় প্রতিরক্ষা বাজেট বৃদ্ধির জন্য বিশেষ তহবিল গঠনের পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছে।

 

ইইউ নেতারা স্পষ্ট করেছেন যে, এই প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা শুধু ইউরোপের জন্য নয়, ইউক্রেনের নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কোস্টা বলেন, “ইউরোপের প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করা মানেই ইউক্রেনের জন্য একটি কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। ইউক্রেনের নিরাপত্তা ইউরোপের নিরাপত্তার সঙ্গেও ওতপ্রোতভাবে জড়িত।” একইসঙ্গে, ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে সহায়তা অব্যাহত রাখার ওপরও গুরুত্ব দিয়েছেন নেতারা।

 

এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেখিয়ে দিল যে, তারা আর শুধু প্রতিরক্ষা নির্ভরশীলতার নীতিতে থাকবে না, বরং নিজেদের সামরিক শক্তিকে আরও সমৃদ্ধ করবে। ইউক্রেন সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে নেওয়া এই পদক্ষেপ শুধু প্রতিরক্ষার জন্য নয়, বরং সামগ্রিকভাবে ইউরোপের সার্বভৌমত্ব রক্ষার একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি

Source link

Back to top button