যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা বন্ধ, চাপে ইউক্রেন

তিন বছর ধরে চলমান যুদ্ধের মধ্যে চরম বিপাকে পড়েছে ইউক্রেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইউক্রেনের জন্য সব ধরনের সামরিক সহায়তা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। এর ফলে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি নতুন সংকটের মুখে পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি, রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিলের পরিকল্পনাও করছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউসে বৈঠকে বসেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তবে বৈঠকটি উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডার মধ্য দিয়ে শেষ হয়। এতটাই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে যে, আপ্যায়ন গ্রহণ না করেই হোয়াইট হাউস ত্যাগ করেন জেলেনস্কি। এ ঘটনার পর থেকেই সামরিক সহায়তা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, যা শেষ পর্যন্ত বাস্তবে পরিণত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথকে অস্ত্র চালান স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প। এ বিষয়ে আলোচনায় বসেন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড ও ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ। আলোচনার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, ইউক্রেনে চলমান সামরিক সহায়তা সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে।
ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে পাঠানো অস্ত্রগুলোর চালান ফেরত আনতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। পোল্যান্ডে ট্রানজিট এলাকায় মজুত থাকা অস্ত্রসহ বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জামও যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। এ সিদ্ধান্তের ফলে ইউক্রেনকে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে নতুন কৌশল নিতে হবে, যা তাদের জন্য অত্যন্ত কঠিন হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের পর ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, “ইউক্রেনে টেকসই শান্তির লক্ষ্যে আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শক্তিশালী নেতৃত্বের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।” এছাড়াও, ওয়াশিংটনের সঙ্গে খনিজ সম্পদ চুক্তিতে যাওয়ারও ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তিনি।
বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন সহায়তা বন্ধ হওয়া ইউক্রেনকে আত্মসমর্পণের পথে ঠেলে দিতে পারে। বিশেষ করে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসতে ইউক্রেনকে এখন চরম চাপে পড়তে হবে। ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্ত কিয়েভের যুদ্ধ কৌশলে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে, যা পুরো পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে। তথ্যসূত্র : দ্য গার্ডিয়ান, ব্লুমবার্গ