নতুন বাংলাদেশ গড়তে শাসনকাঠামো পরিবর্তন করতে হবে :নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, পুরোনো সংবিধান ও শাসনকাঠামো রেখে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব নয়। এগুলো পরিবর্তন করে নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু করতে হবে। গতকাল সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বারবার দীর্ঘায়িত করা হয়েছে। এবার যাতে আর দীর্ঘায়িত না হয়, চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান ব্যর্থ না হয়। পুরোনো সংবিধান এবং পুরোনো শাসনকাঠামো রেখে একটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব নয়। কেবল সরকার পরিবর্তন করেই জনগণের কল্যাণ ও প্রকৃত গণতন্ত্র বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এ জন্য আমরা বলছি, চব্বিশের যে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে, ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়েছে—তাতে কেবল সরকার পরিবর্তন নয়, বরং শাসনকাঠামো ও সাংবিধানিক পরিবর্তন করে নতুন একটি বাংলাদেশের যাত্রা শুরু করতে চাই, যেখানে প্রকৃত গণতন্ত্র, ইনসাফ ও সাম্য নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর প্রথম কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল এনসিপির নেতা–কর্মীরা জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। পরে দেশের মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ১৯৪৭ থেকে ২০২৪ এর সব লড়াইয়ের আকাক্সক্ষাকে ধারণ করে আমরা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করব এবং সেই লক্ষ্যে এনসিপি কাজ করে যাচ্ছে। আমরা বলেছি, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পেলেও আমাদের সার্বভৌমত্ব বারবার হুমকির মুখে পড়েছে। আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো বারবার ভেঙে পড়েছে। আমরা একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান গড়ে তুলতে পারিনি। একটি একদলীয় সংবিধানের মাধ্যমে ফ্যাসিজম এবং একদলীয় স্বৈরতন্ত্রের বীজ বপন করা হয়েছিল।
সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, আমরা বলেছি, একটি নতুন প্রজাতন্ত্র আমাদের করতে হবে এবং তার জন্য একটি নতুন সংবিধান এবং গণপরিষদ প্রয়োজন। সেই জায়গা থেকে আমরা “সেকেন্ড রিপাবলিক”-এর কথা বলেছি এবং আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। জাতীয় নাগরিক পার্টির এ মুহূর্তে প্রথম লক্ষ্য হচ্ছে সাংগঠনিকভাবে তার কার্যক্রম বিস্তৃত করা, তৃণমূলে সাংগঠনিক কার্যক্রম বিস্তৃত করা। নিবন্ধন নিতে যে ধরনের শর্তাবলি পূরণ করা প্রয়োজন, সে শর্তাবলি দ্রুত সময়ের মধ্যে পূরণ করে আমরা নিবন্ধনের দিকে এগোব। এ মাসের মধ্যে আমাদের যে গঠনতন্ত্রের কাজ, সেই কাজ শুরু করব।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে গণ-অভ্যুত্থান এবং গত ১৫ বছরে হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আহ্বান জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত গণহত্যার বিচার দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর দেখতে চাই। বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ফয়সালা এই বাংলার মাটিতে করতে হবে। গণ-অভ্যুত্থানে আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিল, যারা এই হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত এবং ১৫ বছর ধরে নানা ধরনের জুলুম করেছে, তাদের বিচার এই বাংলার মাটিতে হতে হবে। এই বিচার বাংলাদেশের মানুষ দেখতে চায়। বিচারের পর সংস্কার কার্যক্রম করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্রুত জাতীয় সংলাপে গিয়ে আমাদের জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন আমরা দেখতে চাই।