Facebook Bio Status

যত্রতত্র বাস দাঁড় করিয়ে যানজট সৃষ্টি, চালককে ‘লাঠিপেটা’


সড়কে যত্রতত্র বাস দাঁড় করিয়ে রেখে যাত্রী উঠা-নামা করায় বাসচালককে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আতিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলে তারা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখেন শ্রমিকরা। এতে যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন। পরে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।

শ্রমিকরা জানান, সকালে পৌর শহরে ইসলাম পরিবহনের কাউন্টারের সামনে বাস দাঁড় করান চালক মো. আকাশ ওরফে ভুলু (৪৬)। এসময় যানজট নিয়ন্ত্রণে রাখতে এখানে বাস দাঁড়াতে নিষেধ করে প্রশাসন। বাস দাঁড় করানোকে কেন্দ্র করে ইউএনও চালককে লাঠি দিয়ে মারধর করেন। এরই প্রতিবাদে ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা।

সড়ক অবরোধে অংশ নেওয়া মাসুদ মিয়া নামের এক পরিবহন শ্রমিক জাগো নিউজকে বলেন, গাড়ি চালানো অবস্থায় একজন চালককে ইউএনও যেভাবে মারলেন সেটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ ঘটনার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করা হয়েছে।

মারধরের শিকার বাসচালক মো. আকাশ ওরফে ভুলু বলেন, বাস স্টপেজে দাঁড়ানোর আগেই ইউএনও আমার বাসে উঠে পড়েন। তিনি নিজের গাড়ির চালককে লাঠি আনতে বলতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি কোনো কথা না শুনে আমার হাতে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন।

রুস্তম আলী নামের একজন বাসচালক বলেন, ইউএনও’র কাছ থেকে এমন আচরণ আশা করি না। তিনি মারধর না করে ধমক দিতে পারতেন। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।

তবে উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল সড়কের মুক্তাগাছা পৌর এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এজন্য থানার সামনের সড়কের ওপর থেকে বাসস্ট্যান্ড সরিয়ে পৌর বাস টার্মিনালে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরও সড়কের ওপর বাস দাঁড়িয়ে থাকে এবং যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজট রোধে সকালে ইউএনও আতিকুল ইসলাম পৌরসভার পুরোনো বাসস্ট্যান্ড মোড় এলাকায় যান।

ওই সময় সড়কের ওপর ইসলাম পরিবহনের একটি বাস দাঁড়িয়ে ছিল। ইউএনও বাসটিকে সরিয়ে নিতে বলেন। এ ঘটনা নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়। তখন পরিবহন শ্রমিকরা চালককে মারধর করার অভিযোগ এনে সড়ক অবরোধ করে ইউএনওর বিচার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, উপজেলা পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, বাসগুলো পৌর বাস টার্মিনালে সরিয়ে নেওয়া হবে। তারপরও সড়কের ওপর বাস দাঁড়াচ্ছিল। সকালে সড়কের ওপর বাস দাঁড় করিয়ে রাখায় কারণ জানতে চেয়েছিলাম। এ কারণে চালকরা ইস্যু সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। লাঠিপেটার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

মুক্তাগাছা উপজেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক বাবুল মিয়া বলেন, ভুল বোঝাবুঝি থেকে এ ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে। আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করা হবে।

ময়মনসিংহ জেলা মোটরযান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলীর মোবাইল নম্বরের একাধিকবার কল করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইফতেখার আহমেদ রনি জাগো নিউজকে বলেন, বাসচালকরা অশিক্ষিত। ইউএনও শিক্ষিত মানুষ। চালক ভুল করলে বুঝাতে পারতেন, ধমক দিতে পারতেন।

এ বিষয়ে মুক্তাগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, বাসচালককে ইউএনও মারধর করেছেন এমন অভিযোগে শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সেনাবাহিনী গিয়ে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।

কামরুজ্জামান মিন্টু/জেডএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।



Source link

Leave a Reply

Back to top button