Status

গাজীপুরের মামলার আসামি ও পলাতক যুবলীগ নেতা কিশোরগঞ্জে প্রকাশ্যে: গড়ে তুলেছেন ঠিকাদারি সাম্রাজ্য

গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের আস্থাভাজন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামি ও যুবলীগ নেতা তানভীর সিদ্দীকী এখন প্রকাশ্যে কিশোরগঞ্জ জেলায় ঘুরে বেরাচ্ছেন। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের শাসনামলে কিশোরগঞ্জে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক শক্তিশালী ঠিকাদারি সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন যা এখনো বহাল। তার সিন্ডিকেট এতোটাই শক্তিশালী তিনি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামি হয়েও পুলিশ প্রশাসনের নাকের ডগায় বীর দর্পে ঠিকাদারি সাম্রাজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ও মামলা থাকলেও রহস্যজনক কারণে তার বিরুদ্ধে এখনো কোন ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। 

 

 

গত ২৫ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কিশোর গঞ্জ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জন্য পন্য সামগ্রী ও লিলেন সামগ্রী ধৌতকরন সরবরাহের জন্য উন্মুক্ত দরপত্রের আহ্বান জানান হাসপাতাল কতৃপক্ষ। অত্র টেন্ডারেও অংশগ্রহণ করেন গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের আস্থাভাজন ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ২৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের আহ্বায়ক মেসার্স সিদ্দিক এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী তানভীর সিদ্দীকী। এর জ্বের ধরেই কিশোরগঞ্জে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। কিশোরগঞ্জ জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি ও ব্যবসায়ী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের এক সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেন, মেসার্স সিদ্দীকী এন্ট্রারপ্রাইজ এর স্বত্ত্বধীকারী ও গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের আস্থাভাজন যুবলীগ নেতা ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামি তানভীর সিদ্দীকী হাসপাতাল কতৃপক্ষকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে টেন্ডারে অংশগ্রহণ করেছেন এবং কাজ বাগিয়ে নিতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। তানভীর সিদ্দীকীর প্রতিনিধি ফাহিম নামে এক ব্যক্তি জেলাজুড়ে বলে বেড়াচ্ছেন হাসপাতাল কতৃপক্ষকে সাড়ে ১২ লাখ টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেই তারা কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন। 

 

 

 

স্থানীয় এলাকাবাসী ও নাগরিকরা জানান, টেন্ডারে অংশগ্রহণ করা একজন ঠিকাদারের নাগরিক অধিকার রয়েছে। কিন্তু বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামি ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নেতা এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেরাচ্ছে এটা সত্যিই হতাশাজনক। এদের যারা আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছেন তাদের কারনেই আগামীতে ছাত্র-জনতার আন্দোলন বৃথা যাবে। আমরা চাই দ্রুত তাকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।

 

 

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলায় অভিযুক্ত আসামী তানভীর সিদ্দীকী কিশোরগঞ্জ জেলায় অবস্থান সম্পর্কে অবহিত করন প্রসঙ্গে গত ৩ মার্চ কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপার ও শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বরাবর লিখিত আবেদন দেন কিশোরগঞ্জ জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি ও ব্যবসায়ী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। আবেদনে তিনি উল্লেখ করে বলেন, মোঃ ছোবাহান আলী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ৪নং আমলী আদালত গাজীপুরে একটি সি আর মোঃ নং-৬৫৫/২০২৪ দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে গাছা থানাকে এফআইআর এর আদেশ দেন।

 

 

গাছা থানায় মামলাটি এফআইআর হিসেবে গন্য করা হয় যার নং-০৩, তাংঃ ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩২৬/৩০৭/১০৪/৩৪ দঃবিঃ তৎসহ বিস্ফোরক আইনের ৪/৫ ধারা। উক্ত মামলার এজাহারভূক্ত ৫১ নং আসামী তানভীর সিদ্দীকী গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এর ২৯ নং যুবলীগের আহবায়ক। সে মেসার্স সিদ্দীকী এন্ট্রারপ্রাইজ এর স্বত্ত্বধীকারী হিসাবে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাব বিস্তার করে ২০২৩-২৪ অর্থ বছর থেকে অবৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। বর্তমানেও আপনার এলকায় অবস্থান করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে অভিযুক্ত আসামীর এহেন অবস্থান সত্যিই হতাশাজনক। তাই উক্ত আসামীকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আপনার পদক্ষেপ প্রয়োজন। বিষয়টি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আপনার মর্জি হয়।

 

 

শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কিশোরগঞ্জ এর পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) হেলিশ চন্দ্র সরকার বলেন, মেসার্স সিদ্দীকী এন্ট্রারপ্রাইজ এর ঠিকাদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে আমি একটি আবেদন পেয়েছি। এটার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিবে কমিটি। আগামী মিটিং এ আমি কমিটির সভাপতির বরাবর এই কাগজপত্রগুলো উপস্থাপন করব। কমিটি কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নিবে।

 

 

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

 

Source link

Leave a Reply

Back to top button