Facebook Bio Status

যে কারণে অস্কার জিতেও ক্ষমা চাইলেন অভিনেত্রী


এবারের অস্কারে ১৩টি মনোনয়ন নিয়ে আসা ‌‘এমিলিয়া পেরেজ’ শেষ পর্যন্ত দুটি পুরস্কার জিতেছে। তার একটি হলো সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী হিসেবে জো সালদানার পুরস্কৃত হওয়া। পুরস্কার জিতে আপ্লুত তিনি। ধন্যবাদ জানিয়েছেন দর্শক, ছবির টিম ও অস্কার কর্তৃপক্ষকে। তিনি বক্তব্য দিতে গিয়ে মেক্সিকানদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন।

‘এমিলিয়া পেরেজ’ মূলত চার নারীর সংগ্রাম ও বন্ধুত্বের গল্প। তবে ছবিটি নানা কারণে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ছবিটি সমকামীদের কাছ থেকে সমালোচনা পেয়েছে। মুসলিমদের নিয়ে বিতর্কিত কিছু টুইটের জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছেন ছবিটির প্রধান অভিনেত্রী কার্লা সোফিয়া গাসকন। পাশাপাশি মিউজিক্যাল সিনেমাটি দেখে ম্যাক্সিকানরা অবহেলিত অনুভব করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

এক সাংবাদিক অস্কার নেয়ার পর জো সালদানাকে প্রশ্ন করেছিলেন, এই ছবিটি মেক্সিকানদের জন্য খুবই কষ্টকর হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তিনি কি বলবেন? জবাবে সালদানা বলেন, ‘আমি খুব দুঃখিত যে আপনি এবং অনেক মেক্সিকান এই ছবির জন্য কষ্ট পেয়েছেন। আমাদের কখনও এরকম কিছু করার উদ্দেশ্য ছিল না। আমরা ছবিটি ভালবাসা থেকে করেছি।’

সালদানা আরও বলেন, ‘মেক্সিকোকে টার্গেট করে এই ছবিটি তৈরি হয়নি। আমরা একটি বন্ধুত্বের গল্প বলতে চেয়েছিলাম। আমরা চারজন নারীর গল্প বলতে চেয়েছিলাম। এই নারীরা রাশিয়ান হতে পারতো, ডোমিনিকান হতে পারতো, ডেট্রয়েটের কৃষ্ণাঙ্গ হতে পারতো, ইসরায়েলের হতে পারতো, গাজার হতে পারতো। সেটা গল্প বলার সহজ আয়োজনের উপর নির্ভর করে। আমাদের সিনেমার নারীরা এমন চরিত্র যারা প্রতিদিন সংগ্রাম করছেন। আমি এই সংগ্রামের দিকে ফোকাস করতে চাই।’

মেক্সিকানদের প্রতি ভালোবাসার আহ্বান করে তিনি আরও বলেন, ‘সবকিছুর পরও আমি আমার মেক্সিকান ভাই-বোনদের সঙ্গে, ভালোবাসা এবং সম্মানের সঙ্গে এটি নিয়ে আলাপ করতে প্রস্তুত আছি। ‘এমিলিয়া পেরেজ’ ছবিটিকে যেন তারা আরও ভালোভাবে গ্রহণ করতে পারেন।’

তার এই বক্তব্যের আগে ছবিটির পরিচালক জ্যাক অডিয়ারও মেক্সিকানদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যদি ‘এমিলিয়া পেরেজ’ ছবিতে মেক্সিকানদের কষ্টের কিছু থাকে সেটা অনিচ্ছাকৃত। এজন্য আমি দুঃখিত। সিনেমা কখনো উত্তর দেয় না। সিনেমা কেবল প্রশ্ন তোলে। আমরা সমাজে কিছু প্রশ্ন রেখে যেতে চেয়েছিলাম। হতে পারে ‘এমিলিয়া পেরেজ’ ছবির কিছু প্রশ্ন ভুল ছিল।

এদিকে জো সালদানা অস্কার হাতে মঞ্চে উঠে আবেগে আপ্লুত হয়ে কাঁদতে কাঁদতে নিজের মাতৃভূমি ও আমেরিকান অভিবাসীদের স্মরণ করেন। তিনি তার মা ও দাদিকেও স্মরণ করেন। সালদানা বলেন, ‘এই সম্মান পেয়ে আমি অত্যন্ত অভিভূত। আমার দাদী ১৯৬১ সালে এই দেশে (আমেরিকা) এসেছিলেন। আমি গর্বিত একজন অভিবাসী বাবা-মায়ের সন্তান, যারা স্বপ্ন, সম্মানবোধ ও কঠোর পরিশ্রমের মানসিকতা নিয়ে বড় হয়েছেন।’

নিজেকে একজন গর্বিত ডোমিনিকান দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমি ডোমিনিকান বংশোদ্ভূত প্রথম আমেরিকান, যে একাডেমি অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করছে। আমি জানি, আমি শেষ ব্যক্তি নই। আমি আশা করি, এই পুরস্কার পাওয়ার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই চরিত্রে আমি গান গাওয়ার ও স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। যদি আমার দাদি আজ বেঁচে থাকতেন, তিনি অত্যন্ত আনন্দিত হতেন।’

তার এই বক্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে, যখন যুক্তরাষ্ট্রে তখনকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন অভিবাসন নীতিতে কঠোর অবস্থান নিচ্ছেন। সালদানা তার এই ভাষণের মাধ্যমে অভিবাসীদের অবদানের গুরুত্ব এবং তাদের সংগ্রামের গল্প তুলে ধরেন, যা উপস্থিত দর্শক ও বিশ্বের জন্য একটি শক্তিশালী বার্তা হয়ে ওঠেছে।

এলআইএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।



Source link

Leave a Reply

Back to top button