Status

নান্দাইলে সংবর্ধনা নিতে এসে তোপের মুখে এলাকা ছাড়লেন বিএনপি নেতা

নান্দাইলে সংবর্ধনা নিতে এসে স্থানীয় নেতাকর্মীদের তোপের মুখে এলাকা ছেড়েছেন উপজেলা বিএনপির নতুন কমিটির আহ্বায়ক ইয়াসের খান চৌধুরী। শনিবার সকালে নান্দাইলের নিজ বাড়ির সামনে বহিরাগত এনে অস্ত্রের মহড়া দেন তিনি। এসময় স্থানীয় এলাকাবাসী ও পদবঞ্চিত বিএনপি নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেন। এতে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি টিম। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পাহারায় নান্দাইল ত্যাগ করেন তিনি।

জানা গেছে, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ইয়াসের খান চৌধুরীকে আহ্বায়ক ও এনামুল কাদিরকে সদস্য সচিব করে নান্দাইল উপজেলা বিএনপির ১১২ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এছাড়া সাবেক মেয়র আজিজুল ইসলাম পিকুলকে আহ্বায়ক ও সাবেক কাউন্সিলর রফিকুজ্জামান মনিরকে সদস্য সচিব করে নান্দাইল পৌর বিএনপির কমিটি ঘোষণা করা হয়। পরদিন থেকেই শুরু হয় লাগাতার আন্দোলন। ক্ষোভে ফেটে পড়ে তৃণমূল নেতাকর্মীরা। কমিটি ঘোষণার ১৮ দিন পার হলেও নেতাকর্মীদের ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি। কমিটি বাতিলের দাবিতে লাগাতার প্রতিবাদ মিছিল ও বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। আন্দোলনের মুখে উপজেলায় আনন্দ মিছিল কিংবা যৌথসভা করতে পারেননি নতুন কমিটির নেতারা।

নান্দাইল থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আকরাম খান ফেরদৌস বলেন, নতুন কমিটি ঘোষণার পর ১৬-১৭ দিন এলাকায় আসতে পারেননি ইয়াসের খান। শনিবার ভোররাতে ৪টায় ইয়াসের খান নান্দাইলের মোয়াজ্জেমপুরের নিজ বাড়িতে আসেন সংবর্ধনা নেয়ার জন্য। সকাল থেকে তার বাড়ির সামনে ভাড়া করা সন্ত্রাসীরা মহড়া দেয়। এ খবর পেয়ে সংক্ষুব্ধ বিএনপির কর্মীরা সেখানে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। একপর্যায়ে ইয়াসের খানের সহযোগী কামরুল রিভলবার দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর গুলি ছোড়ে। এতে মো. মিলন ভুইয়া, মো. আল আমিন, মো. আব্দুল জলিল, মো. আসাদুল, মো. রাকিব আহত হন। এরমধ্যে গুরুতর আহত ২ জনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে নিজ বাড়িতে মসজিদের মিনারে দাঁড়িয়ে তাড়াহুড়ো করে বক্তব্য দিয়ে এলাকা ত্যাগ করেন ইয়াসের খান। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, আমরা যারা দলের জন্য জেল খেটেছি, জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছি তাদের কমিটিতে পদ দেয়া হয়নি। আর যারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে দীর্ঘদিন আঁতাত করে ব্যবসা-বাণিজ্য করে আসছে তাদেরকে পদ দেয়া হয়েছে। এই কমিটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত ইয়াসের খানকে নান্দাইলে রাজনীতি করতে দেয়া হবে না।

নান্দাইল স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব টিপু সুলতান বলেন, ইয়াসের খান রাতের আধারে সংবর্ধনা নিতে এসে বাহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে অস্ত্রের মহড়া দিয়েছেন। কিন্তু সাধারণ নেতাকর্মীদের প্রতিবাদের মুখে তিনি এলাকা ছেড়েছেন।

স্থানীয় নেতারা জানান, ১১০ সদস্য বিশিষ্ট উপজেলা কমিটি আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসর ১৯ জন। বয়োবৃদ্ধ ও নিষ্ক্রিয় ১১ জন। ডাবল নাম আছে তিনজনের। অন্য উপজেলার বাসিন্দা একজন। উপজেলার বাইরে অন্যত্র বসবাস করেন তিনজন। অপরিচিত দুই জন। এছাড়া নান্দাইল পৌর বিএনপির ৮১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির মধ্যে আওয়ামী লীগ ও দোসর চার জন। বয়োবৃদ্ধ ও নিষ্ক্রি একজন। অপরিচিত একজন। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক হলো রাজপথে সক্রিয়, ত্যাগী, মামলা হামলায় জর্জরিত অধিকাংশ নেতৃবৃন্দকে উক্ত কমিটিতে রাখা হয়নি। কমিটিতে যাদের স্থান দেয়া হয়েছে তাদেরকেও অবমূল্যায়িত অবস্থানে রাখা হয়েছে।

Source link

Leave a Reply

Back to top button