‘বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর সব গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য উন্মুক্ত’

বিশ্বের গণমাধ্যম কর্মীদের বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর সকল গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য উন্মুক্ত। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় মেক্সিকোতে আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেছেন, একসময় পেশাগত কারণে বাংলাদেশ সফর বিদেশি সাংবাদিকদের জন্য অনেকটা নিষিদ্ধ ছিল, এখন তা উন্মুক্ত ও অবারিত। বর্তমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই এই অলিখিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকর্মীদের বাংলাদেশ সফর করে প্রকৃত পরিস্থিতি অনুধাবনের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সরকার প্রধান নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূস।
মতবিনিময়কালে বিশ্বের গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব নেয়ায় মুশফিকুল ফজল আনসারীকে অভিনন্দন জানিয়ে বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি, নির্বাচন ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চান। জবাবে মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশে চলা দীর্ঘ স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়ে এক বিষ্ময়কর নজির স্থাপন করেছে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা। হাজারো তরুণকে জীবন বিলিয়ে দিতে হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের সাম্প্রতিক রিপোর্টকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, এমন বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞে শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে অনুসন্ধানী দল। ছাত্রদের নেতৃত্বে এ বিজয় অর্জিত হয়েছে উল্লেখ রাষ্ট্রদূত মুশফিক বলেন, গণতন্ত্র পূনরুদ্ধার ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় হত্যা, গুম, কারাবরণকে মাথায় নিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল হাসিনার দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করে গেছেন।
বাংলাদেশে একটি অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান আয়োজনে প্রধান উদেষ্টার প্রতিশ্রুতির কথা জানিয়ে মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেন, ধ্বংস হয়ে যাওয়া প্রথা ও প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় সংস্কার করে চলতি বছরের শেষে অথবা আগামী বছরের শুরুতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিকে অগ্রসর হচ্ছে সরকার। মেক্সিকোর সাথে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, এবছর দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠিত হবে। পারস্পরিক যোগাযোগ ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারে ভূমিকা থাকবে সচেষ্ট। বাংলাদেশে মেক্সিকোর একটি দূতাবাস স্থাপন জরুরি বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী।
মেক্সিকো সিটিতে বাংলাদেশ হাউসে আয়োজিত এই অনাড়ম্বর সংবর্ধনায় যোগ দেন বিবিসির মেক্সিকো, মধ্য আমেরিকা ও কিউবাবিষয়ক প্রতিবেদক ও আলোচিত দচড়ঢ়ঁষরংঃধ: ঞযব জরংব ড়ভ খধঃরহ অসবৎরপধ’ং ২১ংঃ’ বইয়ের লেখক উইল গ্র্যান্ট, গার্ডিয়ানের সাংবাদিক টমাস গ্রাহাম, ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সিনিয়র সাংবাদিক হোসে ডে কর্দোভা, দ্য ইকোনমিস্টের লেখক ও ক্রাউন প্রিন্স ফ্রেডরিক ফেলো মি হ্যারিস ডাল হলেন এবং কলামিস্ট ম্যাট ইয়্যক, ডিপ্লোমেটিক ম্যাগাজিন- মোনডো এর সম্পাদক কারমেন ওথেরো, ব্লুমবার্গ নিউজের ব্যুরো প্রধান ক্যারোলিনা মিলান, বোস্টন গ্লোবের কলামিস্ট ও জাতীয় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়-উনাম’র অধ্যাপক, ড. ম্যারিয়ন লয়েড, এপি’র ক্যাটেরিনা মরবিয়াতো, ইনসাইট ক্রাইমের ভিক্টোরিয়া ডিটমার, ওসিসিআরপি’র জনি ওয়ারেট, ইবারো আমেরিকানা ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ডঃ আরিবেল কনটেরাস প্রমুখ।