Status

আফগান রূপকথায় ইংল্যান্ডের বিদায়

ফজলহক ফারুরির স্লোয়ার বলে জফ্রা আর্চারের বড় শট খেলার চেষ্টায় টাইমিং হলো না ঠিকমতো, ক্যাচ নিলেন মোহাম্মদ নাবি। ইংল্যান্ডের নিভু নিভু সম্ভাবনার প্রদীপটাও যেন নিভে গেল সেখানেই। শেষ ওভারে তারা পারল না নাটকীয় কিছু করে দেখাতে। স্নায়ুর চাপ সামলে আজমাতউল্লাহ ওমারজাইয়ের দারুণ বোলিংয়ে আরেকটি রূপকথার জন্ম দিল আফগানিস্তান। ইংল্যান্ডকে বিদায় করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমি-ফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখল তারা। গতকাল লাহোরে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ৮ রানে হারিয়েছে আফগানিস্তান। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩২৫ রান তুলেছিল দলটি। রান তাড়ায় নেমে এক বল বাকি থাকতে ৩১৭ রানে গুটিয়ে যায় ইংলিশরা।
সময়ের হিসেবে হয়তো ১৬ মাস পেরিয়ে গেছে। তবে সবশেষ আইসিসি বিশ্বকাপেই ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চমক দেখিয়েছিল আফগানিস্তান। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই হয়তো আত্মবিশ্বাসী ছিল দলটি। সেই আত্মবিশ্বাস কাজে দিয়েছে দলটির। এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও তাদের বিপক্ষে জয় তুলে নিলো তারা। আর তাদের এই জয়ের মূলনায়ক ইব্রাহিম জাদরান। দুর্দান্ত ১৭৭ রান করে ইতিহাস গড়েন এই ওপেনার। এই ইনিংসে ভর করেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩২৫ রানের শক্তিশালী স্কোর গড়ে আফগানরা। দীর্ঘ ইনজুরি থেকে ফিরে আসা জাদরান ১২টি চার ও ছয়টি ছক্কা হাঁকিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস খেলেন। একইসঙ্গে, তিনি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে করা নিজের ১৬২ রানের রেকর্ড ভেঙে আফগানিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ওয়ানডে স্কোরের নতুন মাইলফলক স্থাপন করেন।
এদিন গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ৩২৫ রানের পুঁজি নিয়েও স্বস্তিতে থাকার উপায় ছিল না আফগানদের। কারণ কদিন আগেই এই মাঠে অস্ট্রেলিয়া সহজেই ৩৫১ রান তাড়া করে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দেয়। তবে ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারানোর অভিজ্ঞতা উজ্জিবিত রেখেছিল তাদের। শেষ পর্যন্ত স্নায়ুচাপ ধরে রেখে দারুণ জয় তুলে ইংল্যান্ডকে বিদায় করে দেয় দলটি। রূপকথার এক জয়ই বলতে হবে এটিকে। রূপকথার ম্যাচও কি নয়? জাদরানের রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি, দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে জো রুটের (১১১ বলে ১২০) পাল্টা জবাব, এক সময় লাগাম ইংল্যান্ডের হাতে চলে যাওয়া, সেখান থেকে আফগানদের নাটকীয়ভাবে ঘুরে দাঁড়ানো, কী ছিল না ম্যাচে! এত নাটকের পর শেষ হাসিটা হাসল আফগানরাই, ৮ রানে জিতে টিকে থাকল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। অন্যদিকে পরপর দুই হারে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শেষ হয়ে গেল অন্যতম ফেবারিট ইংল্যান্ডের।
ইংলিশদের বিপক্ষে আফগানিস্তানের টানা দ্বিতীয় জয় এটি। দুই দলের আগের দেখায় ২০২৩ বিশ্বকাপে দিল্লিতে ৬৯ রানের অবিস্মরণীয় জয় পেয়েছিল তারা। এই সংস্করণে দুই দলের চারবারের দেখায় প্রথম দুটিতে ইংল্যান্ডের জয়ের পর দুটি জিতল আফগানরা। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে হেরেছিল দুই দলই। তাই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে জেতে না চাইলে দুই দলেরই সমীকরণ ছিল একটাই, জয়। আর সেই কাক্সিক্ষত জয় তুলে নিয়ে আসরে টিকে রইল আফগানরা। আর বাড়ির পথ নিশ্চিত হলো ইংল্যান্ডের। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শেষ ম্যাচটি তাদের জন্য এখন নিছক আনুষ্ঠানিকতার।

Source link

Back to top button