হরিরামপুরে এ্যাম্বুলেন্স আছে ড্রাইভার নেই, স্বাস্থ্য কর্মকর্তার ড্রাইভার দিয়েই চলছে রোগীদের সেবা

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ্যাম্বুলেন্স থাকলেও আট বছর ধরে নেই নিয়োগপ্রাপ্ত এ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার। ফলে রাত বেরাত জরুরি রোগীদের পরতে হয় বিপাকে। এমন পরিস্থিতি সামলাতে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার নিজস্ব জীব ড্রাইভার দিয়েই প্রায় দুই মাস যাবৎ রোগীদের সেবা দিয়ে আসছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়।
সূত্র জানায়, ১৯৯১ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকারের সময়ে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণে এ উপজেলার ৩১ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আওয়ামী শাসনামলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় রূপান্তরিত করা হয়। উপজেলার তিন লক্ষাধিক জনগোষ্ঠীর জন্য ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি পরিচালিত হচ্ছে ৩১ শয্যার জনবল দিয়েই। এতে করে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি দিনে দিনে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও হাসপাতাল পরিচালনায় বৃদ্ধি পায়নি জনবল। ফলে বর্তমানে জনবল সংকটে হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা দিতে অনেকটাই হিমশিম পোহাতে হচ্ছে বলে দাবি করেন কর্তৃপক্ষ।
আরও জানা যায়, প্রায় আট বছর আগে হাসপাতালে এ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার অবসরে গেলে এখন পর্যন্ত আর দেয়া হয়নি ড্রাইভার নিয়োগ। এতে করে এ্যাম্বুলেন্স থাকলেও সেবা থেকে বঞ্চিত এ উপজেলার হতদরিদ্রসহ নিম্ন আয়ের মানুষেরা। এ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভারের পদটি শূন্য থাকলেও নিয়োগের কোনো উদ্যোগ নেই অধিদপ্তরের। ফলে রোগীদের সেবা দিতে অবশেষে বাধ্য হয়েই প্রায় দুই মাস ধরে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার ব্যক্তিগত ড্রাইভার দিয়েই রোগীদের এ্যাম্বুলেন্স সেবা দিয়ে আসছে বলে সূত্র জানায়।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তার ব্যক্তিগত জীব গাড়ির ড্রাইভার মো. সালাম জানান, এ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার নেই। বাধ্য হয়ে রোগীদের বিপদের কথা চিন্তা করে স্যারের গাড়ি চালানোর পাশাপাশি আমাকে বিকেল ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত এ্যাম্বুলেন্স চালাতে হচ্ছে। এতে আমার অনেক কষ্ট হয়। তারপরেও রোগীদের বিপদের কথা চিন্তা করে সেবা দিতে হচ্ছে। আমি নিজেও শারীরিকভাবে অসুস্থ। তারপরেও কি আর করব, মানুষের কথা চিন্তা করে এ কাজ করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এ. কে. এম কাজী রাসেল জানান, দীর্ঘদিন ধরে এ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার নিয়োগ নেই। কিন্তু হাসপাতালে রাতে জরুরি রোগী আসলে তো এ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভারের প্রয়োজন হয়। বার বার ড্রাইভারের জন্য চাহিদাপত্র দিয়েও আমরা ড্রাইভার পাচ্ছি না। সরকারিভাবে আমাদের এখানে ড্রাইভারের পদটি প্রায় আট বছর ধরে শূণ্য রয়েছে। অবশেষে একপ্রকার বাধ্য হয়েই প্রায় দুই মাস ধরে আমার ব্যক্তিগত জীব ড্রাইভার দিয়ে রোগীদের সেবা দিতে হচ্ছে।
এখানে অপেক্ষাকৃত মফস্বল এলাকা হওয়ায় যাতায়াতে রাতে সাধারণত তেমন কোনো যানবাহনও পাওয়া যায় না। ফলে রোগীদের মাঝে মাঝেই ভোগান্তিতে পরতে হয়। এজন্য বিকেল ৫টা থেকে সকাল ৮ টা পর্যন্ত এই সার্ভিস দিতে হচ্ছে।