
বাংলাদেশের অন্যতম চিন্তাবিদ ও লেখক বদরুদ্দীন উমর প্রত্যাখ্যান করলেন দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘স্বাধীনতা পুরষ্কার’। গতবছর বাংলাদেশে রক্তাক্ত গণবিক্ষোভের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কড়া সমালোচনা করেছিলেন তিনি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে বদরুদ্দীন উমরকে সর্বচ্চো নাগরিক সম্মাননা দেয়ার কথা ঘোষণা করা হয়।
স্বাধীনতা পুরস্কার না নেয়ায় ঘোষণা করে লেখক গবেষক ও রাজনীতিক বদরুদ্দীন উমর বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে জানান, ১৯৭৩ সাল থেকে আমাকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে পুরষ্কার দেয়া হয়েছে। আমি সেগুলোর কোনটি গ্রহণ করিনি। এখন বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা করেছেন। এজন্য তাদের ধন্যবাদ। কিন্তু তাদের দেয়া এই পুরস্কারও আমার পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।
লেখক বদরুদ্দীন উমর ১৯৩১ সালে বর্ধমানে (পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলা) জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা অবিভক্ত ভারতের অন্যতম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নাম আবুল হাশিম। ১৯৫০ সালে উমর পরিবার ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। উমর ১৯৪৮ সালে বর্ধমান টাউন স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৫০ সালে তিনি বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৩ সালে স্নাতক সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। দর্শন বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৫৫ সালে। ১৯৬১ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিলোসফি, পলিটিক্স অ্যান্ড ইকোনমিক্স ডিগ্রি লাভ করেন।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বদরুদ্দীন উমর বরাবর কমিউনিস্ট শিবিরে আছেন। পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশ তৈরির পর তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস ও সামাজিক বিবর্তন লিখে আসছেন। একইসঙ্গে সব সরকারের আমলে তিনি রাষ্ট্র পরিচালনা নিয়ে কড়া সমালোচক।
স্বাধীনতা পুরস্কার বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার। প্রতিবছর ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। এ বছর (২০২৫) সম্মাননা প্রাপকদের তালিকায় আছেন মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি এম এ জি ওসমানী, বিজ্ঞানী অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম, ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ, লেখক ও বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর, কবি আল মাহমুদ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অন্যতম নকশাকার নভেরা আহমেদ, পপসম্রাট আজম খান ও আবরার ফাহাদ।