
সীতাকুণ্ডে দুই খুনের মামলার আসামি দুর্ধর্ষ যুবলীগ ক্যাডার মেজবাহউদ্দিন মিঠুকে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছে তারই স্ত্রী। সোমবার রাত ১২টায় পৌরসভার প্রেমতলাস্থ নিজ বাসভবনে আত্মগোপন থাকা অবস্থায় স্ত্রীর দেখানো মতে মিঠুকে গ্রেফতার করে সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ। পরে তাকে আবার ছেড়ে দেয়া হয়েছে এমন খবরে গভীর রাতে থানা ঘেরাও করে জামায়াত শিবির কর্মীরা।
স্থানীয়রা জানায়, ৫ আগস্ট এর পর গোঁফ দাড়ি লম্বা রেখে শালু কাপড় জড়িয়ে সন্ন্যাসীবেশে চলাফেরা করতো মিঠু। তার ছদ্মবেশ এতটাই নিখুঁত ছিল চিরচেনা লোকও তাকে দেখে চেনার উপায় ছিল না। কিন্তু কথায় আছে দশ দিন চোরের একদিন গৃহস্থের। অবশেষে তাকে গ্রেফতার হতে হলো পুলিশের হাতে।
তারা আরও জানায়, মিঠু গত ১৭ বছর পৌরসভা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। তার হাত থেকে বিরোধী মতের কেউ নিরাপদ ছিল না। গভীর রাতে পুলিশের পোশাক পরে পুলিশের সাথে সে অভিযানে নামতো। এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে জামাত বিএনপির লোকদের পুলিশে সোপর্দ করতো। সীতাকুণ্ডের পৌরসভা কেন্দ্রিক জামায়াত বিএনপির বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার অধিকাংশের মাস্টারমাইন্ড এই মিঠু।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঢাকা থেকে মিঠু বাড়িতে প্রবেশ করেছে গোপন সূত্রে এমন খবর পেয়ে পুলিশ তার বাড়িতে তল্লাশি চালায়। কিন্তু ছদ্দবেশী ধূর্ত মিঠুর সামনে দাঁড়িয়েও পুলিশ নিশ্চিত হতে পারেনি। এ সময় মিঠুকে পুলিশ তার নাম জিজ্ঞেস করলে সে বলেছিল মিঠু একটু আগে চলে গেছে। কিন্তু পাশে থাকা তার স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলে তিনি পুলিশকে বলেন, ওনি আমার স্বামী নাম মিঠু। এরপরই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
এদিকে মিঠুকে গ্রেফতারের পর সীতাকুণ্ড থানা পুলিশের নিরবতায় ক্ষিপ্ত স্থানীয় জামায়াত শিবিরের নেতা-কর্মীরা। এ সময় মিঠুকে ছেড়ে দেয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়লে রাত ১টায় জামাত শিবির কর্মীরা থানা ঘেরাও করে। এক পর্যায়ে সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি মজিবুর রহমান মিঠুর বিরুদ্ধে পূর্বে দায়েরকৃত মামলায় আদালতে চালান দেয়া হবে এমনটা আশ্বস্ত করলে নেতা কর্মীরা থানা ছেড়ে যান।
মজিবুর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মিঠুকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে একটি রাজনৈতিক মামলায় মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরী বলেন, মিঠুর বিরুদ্ধে জামায়াত-শিবিরের দুই নেতাকে হত্যার পৃথক মামলা রয়েছে। সে একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। জামায়াত শিবির নেতা হত্যার দায়ে আমরা তার ফাঁসি দাবি করছি।