সিলেটে চাঁদাবাজির দায়ে যুবদলের ৩ নেতা বহিষ্কার, কিন্তু বিএনপির দখলবাজরা অপ্রতিরোধ্য: নেপথ্যে শীর্ষ নেতাদের সমঝোতা!

সিলেটে বহিষ্কার হলেন আরেক যুবদল নেতা। নগরীর একটি বাসায় চাঁদাবাজীর অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে সিলেটে যুবদলের ৩ নেতাকে বহিস্কার করলো দলটি। সর্বশেষ বুধবার (৫ মার্চ) বহিষ্কার করা হয় সিলেট জেলা যুবদলের সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক কাওছার আহমদ জুম্মানকে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ দপ্তর সম্পাদক   মিনহাজুল ইসলাম ভূইয়ার স্বাক্ষরিত এক নোটিশে  বহিস্কার করার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয় তার। তবে বহিস্কারের এমন ঘটনায় স্বস্তি পাচ্ছে সাধারন নেতাকর্মী। সেই সাথে বাড়ছে দলের ইমেজও।

 

কিন্ত বিএনপির পদ পদবী ব্যবহার করে বড় বড় দখলবাজরা এখনও রয়েছেন নিশ্চিন্তে। তারা সরকার জমিও দখল করেছেন ৫ আগস্টের পর। এছাড়া রয়েছে আওয়ামীলীগের সাথে ব্যবসায়িক সখ্যতা। কিন্তু তাদের ব্যাপারে অভিযোগ থাকলেও কিছু হচ্ছে না তাদের ব্যাপারে। মোটকথা বিএনপির দখলবাজ রাগববোয়ালরা ধরাছােঁয়ার বাইরে।  গত স্বৈরাচার সরকারের আমলে অর্জিত অর্থের হিংসা নেতাদের পকেটে দিয়ে নিশ্চিন্তে সময় পার করছেন তারা। এছাড়া দখলবাজী ও চাদাবাজীর বিভিন্নখাত দলের স্থানীয় র্শীষ নেতাদের কানে দিয়ে ঠান্ডা করে রাখছেন তারা।

 

এসব রাগববোয়াল দখলবাজদের বেশিরভাগই ফেঞ্চুগঞ্জ সারকারখানা, কোম্পানীগঞ্জ,  গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুরে। সেখানের স্থানীয় শীর্ষ নেতারা সরাসরি চাঁদাবাজী, চোরাকারবারী, দখলবাজীতে জড়িত।  সম্প্রতি যুবদলের ৩ চাদাবাজ নেতা বহিস্কারের পর এসব এলাকার নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা দ্রুত বিএনপির দখলবাজদের চিন্থিত করে ব্যবস্থা নেবে কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দ। কারন এই সব দখলবাজ ও চোরাকারবারীরা থানা , উপজেলা প্রশাসনসহ দলের সাধারন নেতাকর্মীদের সামনে শীর্ষ নেতাদের সাথে তাদের সর্ম্পকের গভীরতা কৌশলে তুলে ধরে নিজেদের জাহির করছে। প্রচ্ছন্ন ভাবে বুঝিয়ে দিতে চায় দলের উর্ধ্বতন নেতাদের ইশরায় তারা এসব অপর্কমে জড়িত থাকতে হচ্ছে। কারন নেতাদেরও কাঁচা টাকার দরকার।

 

এদিকে, জুম্মানের বহিস্কারদেশে বল হয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগে সিলেট জেলা যুবদলের সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক কাওছার আহমদ জুম্মানকে প্রাথমিক সদস্য পদ সহ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।  বহিষ্কৃত নেতৃবৃন্দের কোন ধরনের অপকর্মের দায়-দায়িত্ব দল নিবেনা। যুবদলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তাদের সাথে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন ইতোমধ্যে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন।

 

জানা যায়, জুম্মান এর বিরুদ্ধে সিলেট নগরীর কুয়ারপাড় এলাকায় একটি বাসায় চাঁদা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে। এর আগে,  সিলেটে যৌথবাহিনীর অভিযানে অস্ত্র ও মাদকসহ আটক  সিলেট জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমাদ উদ্দিন আহমেদকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। রোববার (২ মার্চ) যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূইয়া স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। ৫ ফেব্রুয়ারি সিলেট নগরীর বনকলাপাড়া এলাকার নূরানী ৫২ নম্বর বাসায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে ইমাদ উদ্দিন আহমেদকে আটক করে। এসময় ইমাদের আরও তিন সহযোগীকে আটক করা হয়। আটকের সময় তাদের কাছ থেকে ১টি রামদা, ৫টি ছোরা, ২টি কাটি, ১টি পিস্তল সদৃশ গ্যাস লাইটার, খালি মদের বোতল, মদ পানের গ্লাস ও বিভিন্ন ধরণের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস জব্দ করা হয়েছে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আরেক যুবদল নেতাকে বহিষ্কার করা হয়।

 

বহিষ্কৃত মহানগর যুবদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়দেব চৌধুরী মাধবের বিরুদ্ধে হকারদের কাছে চাঁদা দাবি ও চাঁদা না দেয়ায় হকারকে অপহরণের অভিযোগ রয়েছে। জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন। ২৮ ফেব্রুয়ারি  নগরীর জিন্দাবাজারে সড়ক অবরোধ করেন হকাররা। চাঁদা না দেয়ায় হকারকে উঠিয়ে নেয়ার অভিযোগ এনে তাদের মুক্তি ও চাঁদাবাজী বন্ধের দাবিতে আন্দোলনে নামেন তারা। রাত ৯টা থেকে ১০ টা নগরীর প্রাণকেন্দ্র জিন্দাবাজার পয়েন্টে অর্ধশতাধিক হকার সড়ক অবরোধ করে রাখেন। তাদের আন্দোলনের ২ ঘন্টা পর ২৮ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত ১২টার দিকে জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূইয়ার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে মাধবকে বহিস্কার করা হয়।

Source link

Exit mobile version