সাহরি খাওয়ার ৫ উপকারিতা

রোজার জন্য সাহরি খাওয়া অপরিহার্য নয়। সাহরি না খেলেও রোজা হয়ে যায়। কেউ যদি ইচ্ছাকৃত সাহরি না খায়, তবুও তার গুনাহ হবে না এবং তার রোজারও কোনো ক্ষতি হবে না। তবে সাহরি খাওয়া নবিজির (সা.) সুন্নত। নবিজি (সা.) নিজে সাহরি খেতেন এবং তার সাহাবিদেরও সাহরি খেতে উৎসাহ দিতেন। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেছেন, আপনারা সাহরি খাও। কেননা, সাহরিতে বরকত রয়েছে। (সহিহ মুসলিম)
ইরবায ইবনে সারিয়াহ (রা.) বলেন, রমজানে একদিন আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) আমাকে সাহরি খেতে ডাকলেন; বললেন, বরকতময় খাবার খেতে আসুন। (মুসনাদে আহমদ)
সাহরি খাওয়াকে মুসলমানদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে নবিজি (সা.) বলেছেন, আমাদের রোজা ও আহলে কিতাব বা পূর্ববর্তী আসমানি কিতাবের অনুসারীদের রোজার মধ্যে পার্থক্য হলো সাহরি খাওয়া। (সহিহ মুসলিম)
আরেকটি বর্ণনায় নবিজি (সা.) বলেছেন, সাহরি খাওয়া বরকতপূর্ণ কাজ। সুতরাং আপনারা তা পরিত্যাগ করবেন না। এক ঢোক পানি দিয়ে হলেও সাহরি করুন। যারা সাহরি খায় আল্লাহ তাআলা তাদের ওপর রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতারা তাদের জন্য রহমতের দোয়া করেন। (মুসনাদে আহমদ)
তাই নবিজির (সা.) অনুসরণ ও বরকত লাভের নিয়তে সাহরি খেয়েই রোজা রাখার চেষ্টা করা উচিত। সুযোগ থাকলে সাহরির বরকত হাতছাড়া করা উচিত নয়।
রোজার জন্য সাহরি খাওয়ার অনেক উপকারিতা আছে। এর মধ্যে কয়েকটি হলো—
১. সাহরি খেলে নবিজির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সুন্নত ও নির্দেশ পালনের সওয়াব পাওয়া যায়। তিনি নিজে সাহরি খেয়েছেন এবং সাহাবিদেরও সাহরি খাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এবং সাহরির খাবারে আল্লাহ তাআলা বরকত দান করেন, ফেরেশতাদের দোয়া পাওয়া যায় যেমন উল্লিখিত হাদিসগুলোতে বর্ণিত হয়েছে।
২. সাহরির জন্য উঠলে অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ নামাজ তাহাজ্জুদ আদায়ের সুযোগ পাওয়া যায়। অন্যান্য সময় যারা তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করতে পারেন না, তারাও রোজা উপলক্ষে তাহাজ্জুদ আদায়ের সুযোগ পান।
৩. সাহরি খেলে সুবহে সাদিকের আগেই আনুষ্ঠানিকভাবে রোজার নিয়ত করার সুযোগ পাওয়া যায়। রোজার জন্য নিয়ত জরুরি আর তা রাতের মধ্যে করা কখনও জরুরি কখনও উত্তম। উম্মুল মুমিনিন হাফসা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি সুবহে সাদিকের আগে রোজা রাখার নিয়ত করবে না তার রোজা (পূর্ণাঙ্গ) হবে না। (সুনানে আবু দাউদ: ১/৩৩৩)
৪. রোজা শুরুর পূর্বমুহূর্তে সাহরি খেলে সারাদিন রোজার জন্য না খেয়ে থাকা সহজ হয়। তীব্র ক্ষুধা ও তৃষ্ণার অনুভূতি কম হয়।
৫. সুবহে সাদিকের আগে সাহরি করা ও সূর্যাস্তের সাথে সাথে ইফতার করার মাধ্যমে বিশেষভাবে প্রকাশ পায় যে, মুমিন বান্দা শুধু আল্লাহর নির্দেশের আনুগত্য করার জন্য ও তার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যেই সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়টুকু না খেয়ে থাকছে।
ওএফএফ/জিকেএস