সরকারের কাছে ৭ হাজার কোটি টাকা চায় বিকেএমইএ

আসছে ঈদুল ফিতরের আগে দেশের রফতানি খাত সামাল দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে ১৫ রমজানের মধ্যে ৭ হাজার কোটি টাকা সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)। নিটওয়ার কারখানা মালিকদের সংগঠনের দাবি- অর্থ সহায়তা না পেলে ঈদে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ নিয়ে চরম বিপাকে পড়তে পারে পোশাক খাত। গতকাল মঙ্গলবার অর্থ সহায়তা সংক্রান্ত একটি চিঠি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিবের কাছে পাঠায় বিকেএমইএ। বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমের সই করা চিঠিতে সরকারের কাছে নগদ সহায়তার জন্য এই আবেদন জানানো হয়। চিঠিতে বিকেএমইএ জানায়, রাজনৈতিক পরিবর্তিত পরিস্থিতির পাশাপাশি তৈরি পোশাক শিল্পে বিরাজমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে শিল্প প্রতিষ্ঠান সমূহ এক কঠিন সময় অতিবাহিত করছে। পরিস্থিতিতে কার্যাদেশ বাড়লেও বিভিন্ন কারখানাতে নগদ অর্থের সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়াও সামনেই রয়েছে বেতন ও ঈদ বোনাসের বিশাল চাপ। এমন এক কঠিন পরিস্থিতিতে বেতন-বোনাসসহ অন্যান্য ভাতা পরিশোধ করতে না পারলে পুনরায় শ্রম অসন্তোষ ঘটার আশঙ্কা রয়েছে এবং স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার সুযোগ পেয়ে যাবে। এ পরিস্থিতিতে নগদ সহায়তা বাবদ ৭ হাজার কোটি টাকা ছাড় করা না হলে রপ্তানি খাতে একটা মারাত্মক বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। চিঠিতে বলা হয়, বর্তমানে তৈরি পোশাক শিল্পে বিরাজমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহ এক কঠিন সময় অতিবাহিত করছে। বিগত সময়গুলোতে দেশের বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলের কারখানাগুলোতে শ্রম অসন্তোষ ছিল। এর ফলে কারখানাসমূহ বন্ধ থাকায় উৎপাদন কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যহত হয়েছে। ফলে এ সময়ে অস্বাভাবিকভাবে উৎপাদন খরচও বেড়েছে। কিছু দেশের রপ্তানি শিল্পের ওপর বায়ারদের আস্থা ধরে রাখার স্বার্থে তৈরি পোশাক শিল্প উদ্যোক্তারা অনেক ক্ষেত্রেই মূল উৎপাদন খরচের থেকে কম মূল্যে কার্যাদেশ গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। উল্লিখিত পরিস্থিতিতে কার্যাদেশ বাড়লেও বিভিন্ন কারখানা নগদ অর্থের সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়াও সামনেই রয়েছে বেতন ও ঈদ বোনাসের বিশাল চাপ। এমন এক কঠিন পরিস্থিতিতে বেতন-বোনাসসহ অন্যান্য ভাতা পরিশোধ করতে না পারলে পুনরায় শ্রম আসন্তোষ ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে তৈরি পোশাক শিল্প স্থিতিশীলতা এবং উৎপাদন ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সরকারের তথা অর্থ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
জানা গেছে, বর্তমান ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে রফতানি ভর্তুকি বা নগদ সহায়তা বাবদ মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে দাবি জমা ৭ হাজার কোটি টাকা। যদি দ্রুততম সময়ের মধ্যে (১৫ রমজানের মধ্যে) নগদ সহায়তা বাবদ এই পাওনা ৭ হাজার কোটি টাকা ছাড় করা না হয় তবে রফতানি খাতে একটা মারাত্মক বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। এমতাবস্থায় অতি জরুরি ভিত্তিতে চলতি মার্চের (১৫ রমজানের মধ্যে) মধ্যে নগদ সহায়তা বাবদ প্রাপ্য ৭ হাজার কোটি টাকা ছাড়করণের বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানায় বিকেএমইএ।