Facebook Bio Status

‘সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে খেলাধুলার উন্নতি করতে চাই’


তিনটি আন্তর্জাতিক গেমস সামনে রেখে আগামী ১০ মাস ব্যস্ত থাকতে হবে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনকে (বিওএ)। অক্টোবরে বাহরাইনে এশিয়ান যুব গেমস, নভেম্বরে সৌদি আরবে ইসলামিক সলিডারিটি গেমস এবং পরের বছর জানুয়ারিতে পাকিস্তানে হবে সাউ এশিয়ান (এসএ) গেমস। এই তিনটি গেমসে অংশ নেওয়ার জন্য ঈদের পরই প্রস্তুতিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পুরোদমে শুরু করবে বিওএ।

ডিসেম্বরে হওয়ার কথা রয়েছে বিওএর নির্বাচন। সবকিছু মিলিয়ে দেশের খেলাধুলার অন্যতম এই অভিভাবক সংস্থার কর্মকর্তাদের কাটবে ব্যস্ত সময়। এরই মধ্যে বিওএতে যোগ দিয়েছেন নতুন মহাপরিচালক। অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ বি এম শেফাউল কবীর বিওএ’র চতুর্থ মহাপরিচালক হিসেবে যোগ দিয়েছেন গত ১ মার্চ।

বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনে মহাপরিচালক পদটি সৃষ্টি হয়েছে ২০১১ সালে। এ বি এম শেফাউল কবীরের আগে তিনজন এই গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তারা হলেন-কর্ণেল ওয়ালী উল্লাহ (অব.), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুদ্দিন হায়ার (অব.) এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শামছুল আলম খাঁন (অব.)।

১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেছিলেন এ বি এম শেফাউল কবীর। এলপিআর-এ যান গত বছর মে মাসে। এরই মধ্যে আড়াই মাস দায়িত্ব পালন করেছেন সাভারে আর্মি ইন্সটিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এআইবিএ) পরিচালক হিসেবে। খেলাধুলাপ্রেমী অবসরপ্রাপ্ত এই সেনা কর্মকর্তা এখন দেশের খেলাধুলার প্রাণকেন্দ্রে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে এসেছেন।

বিওএতে যোগদানের প্রথম ১১ মাস তাকে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনটি গেমস নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিতে হবে বিভিন্ন ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনকে। নতুন কর্মজীবন, খেলাধুলার প্রতি ভালোবাসা এবং খেলাধুলার উন্নয়নে নিজের পরিকল্পনা নিয়ে জাগো নিউজকে তিনি দিয়েছেন বিশেষ সাক্ষাৎকার।

প্রশ্ন: বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। অভিনন্দন।
উত্তর: আপনাকে ধন্যবাদ।

প্রশ্ন: দেশের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকরি করেছেন। গত আড়াই মাস কাজ করেছেন সাভারে আর্মি ইন্সটিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এআইবিএ) পরিচালক হিসেবে। এবার আসলেন খেলার ভুবনে। কেমন উপভোগ করছেন নতুন দায়িত্ব?
উত্তর: আমি একজন খেলাপাগল মানুষ। ছোটবেলা থেকেই আমি স্পোর্টস লাভার। নির্দিষ্ট কোনো ডিসিপ্লিনে নয়, আমি সব খেলাতেই অংশ নিয়েছি। যখন বিওএতে যোগ দিলাম, তখন পরিচিত মানুষদের কাছ থেকে অনেক অভিনন্দন পেয়েছি। অনেকে লিখেছেন, ‘রাইট ম্যান ইন রাইট প্লেস।’ আমিও মনে করি, আমার প্রিয় জায়গাতেই এসেছি। আশা করি, এখানে কিছু অবদান রাখতে পারবো।

প্রশ্ন: সব ধরনের খেলাই খেলতেন। তার মধ্যে বিশেষ কোনো খেলার কথা কি বলবেন?
উত্তর: আমি টেনিস খেলেছি। গলফও খেলেছি। আর্মি গলফ ক্লাবের অধিনায়ক ছিলাম, সহসভাপতি ছিলাম। ভাটিয়ারি গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবেরও সহসভাপতি (প্রশাসন ও অর্থ) ছিলাম। তিন বছর ছিলাম বাংলাদেশ গলফ একাডেমির রেক্টর।

প্রশ্ন: অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন থেকে যখন এই দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব পেলেন, তখন কি কোনো ভাবনা-চিন্তা করেছিলেন, নাকি আগ্রহ নিয়েই সম্মতি জানিয়েছিলেন?
উত্তর: বিওএর এই পদে দায়িত্ব পালনের প্রস্তাব পাওয়ার পর আমি তখনই সম্মতি জানিয়েছিলাম। কারণ, আমারই পছন্দের খেলাধুলার অঙ্গনে কাজের সুযোগ পেয়েছি।

প্রশ্ন: আপনি রংপুর ক্যাডেট কলেজে লেখাপড়া করেছেন। ওই সময় খেলাধুলার সাথে কেমন সংশ্লিষ্টতা ছিল?
উত্তর: আমি যখন রংপুর ক্যাডেট কলেজের শিক্ষার্থী, তখন থেকেই বিভিন্ন খেলাধুলা করেছি। নিজে খেলেছি এবং আমাদের কলেজের বিভিন্ন খেলার দলকে সংগঠিত করেছি। ওই সময় থেকে সংগঠকের দীক্ষাও আমার হয়েছে।

প্রশ্ন: অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান কাজই হলো বিভিন্ন ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনের সাথে সমন্বয় রক্ষা করা। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গেমসে অংশগ্রহণের বিষয়টি দেখভাল করা। এ কাজগুলো করতে গিয়ে আপনার কৌশল কী থাকবে?
উত্তর: আমি চেষ্টা করবো যত স্টেকহোল্ডার আছে, সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে। আইওসির অলিম্পিক মুভমেন্টকে গুরুত্ব দিয়েই ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনগুলোর সাথে সমন্বয় করে খেলাধুলার উন্নয়নে কাজ করতে হবে।

প্রশ্ন: অনেক দিন পর বিওএ’র গঠনতন্ত্র সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গঠনতন্ত্রে কী পরিবর্তন আসতে পারে?
উত্তর: বিওএ’র বর্তমান গঠনতন্ত্র ২০০০ সালে আইওসির অনুমোদিত। অনেক দিন হয়েছে। এখন রিভিউ দরকার। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে কিছু সংযোজন-বিয়োজন হবে। কিছু বিষয় থাকে যে, আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট দিয়ে বিচার করতে হয়। একটা কমিটি গঠনতন্ত্র সংশোধনের কাজ করছে। আশা করছি, তারা সবকিছু বিবেচনা করেই যুগোপযোগী একটি রিপোর্ট প্রদান করবে।

প্রশ্ন: গঠনতন্ত্র অনুমোদনের জন্য তো সাধারণ সভা (এজিএম) প্রয়োজন হবে। তাহলে ডিসেম্বরের নির্বাচন কি সংশোধিত গঠনতন্ত্রের আলোকে করা সম্ভব হবে?
উত্তর: গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটি সভা করে কাজ গুছিয়ে আনছে। তারা সংশোধনী প্রস্তাব দিলে বিওএ সভা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

প্রশ্ন: আপনি দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনটি গেমস নিয়ে কাজ শুরু করতে হচ্ছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমস, যা আগামী বছর জানুয়ারিতে পাকিস্তানের তিনটি শহরে অনুষ্ঠিত হবে। কবে নাগাদ এই গেমসের প্রস্তুতি শুরু করার পরিকল্পনা আছে বিওএ’র?
উত্তর: আমাদের হোমওয়ার্ক শুরু হয়ে গেছে। আমাদের বাজেট তৈরি করে সরকারের কাছে দিতে হবে। কোন ডিসিপ্লিনে কতজন অ্যাথলেট, কতজন কোচ, কতজন কর্মকর্তা পাঠানো হবে-এসব বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে।

প্রশ্ন: ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনগুলোর সঙ্গে গেমস নিয়ে কবে আলোচনা করবেন?
উত্তর: প্রথমে আমরা পরিকল্পনা গ্রহণ করবো। তারপর ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনগুলোর সাথে বসে তাদের কিছু গাইডলাইন দেওয়া হবে। এসএ গেমসের আগে এশিয়ান যুব গেমস ও ইসলামিক সলিডারিটি গেমস আছে। সেখানে দল পাঠানো, প্রস্তুতির বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিতে হবে দ্রুত। তিনটি গেমস নিয়েই আমাদের ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে বসতে হবে।

প্রশ্ন: এসএ গেমসকে দক্ষিণ এশিয়ার অলিম্পিক বলা হয়। এই গেমসে ভালো রেজাল্ট করা বাংলাদেশের জন্য কৃতিত্বের। সেই পরিকল্পনা কীভাবে সাজাবেন?
উত্তর: আগেই বলেছি, আমরা হোমওয়ার্ক শুরু করেছি। ঈদের পর পুরোদমে কাজ শুরু হবে। এরপর এসএ গেমস ও অন্য দুটি গেমসের প্রস্তুতি শুরুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। আমরা এসএ গেমসকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে কাজ শুরু করতে যাচ্ছি। আমরা চাইবো যত বেশি ডিসিপ্লিনে দল পাঠানো যায় এবং যতটা সম্ভব ভালো ফলাফল করা যায়। সেভাবেই আমাদের পকিল্পনা তৈরি করা হবে।

প্রশ্ন: সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
উত্তর: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।

আরআই/এমএমআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।



Source link

Back to top button