রোহিঙ্গা শিশুদের সহায়তায় ৩৩ লাখ ডলার দেবে জাপান

রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুদের জন্য মানবিক সহায়তা জোরদার করতে জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)-এর সঙ্গে ৩৩ লাখ মার্কিন ডলারের (৫০০ মিলিয়ন জাপানি ইয়েন) অনুদান চুক্তি স্বাক্ষর করেছে জাপান সরকার। এই অনুদানের মাধ্যমে বাংলাদেশে অবস্থানরত ৪১ হাজার শিশুসহ ৬৫ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী স্বাস্থ্য, পুষ্টি, শিক্ষা এবং পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি সুবিধা পাবে। কক্সবাজার ও ভাসানচরে এসব সেবা প্রদান করা হবে। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) ঢাকায় ইউনিসেফ কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে জাপানের রাষ্ট্রদূত হিজ এক্সেলেন্সি সাইদা শিনইচি ও ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স আনুষ্ঠানিকভাবে এক্সচেঞ্জ অব নোটস স্বাক্ষর করেন। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনইচি বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোতে ইউনিসেফের প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পুষ্টি, সুরক্ষা এবং পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধির মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে শিশুদের সহায়তার জন্য ইউনিসেফ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এই সংকট মোকাবিলায় অর্থায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং জাপান মানবিক সহায়তা ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের লক্ষ্যে ইউনিসেফসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাবে।’
ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, ‘প্রতিদিন রোহিঙ্গা শিশুরা সীমাহীন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। তারা শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে না, সাংস্কৃতিক প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছে এবং নিরাপদ পানি, পুষ্টি ও স্বাস্থ্যসেবার অভাবে কষ্ট ভোগ করছে। তারা যেমন অন্য শিশুদের মতোই শিক্ষা, নিরাপত্তা ও সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার অধিকার রাখে, তেমনি তাদের জন্য আরও বেশি সহায়তা প্রয়োজন। জাপান সরকারের নিরবচ্ছিন্ন সহযোগিতার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। এই অংশীদারত্ব আমাদের সকল শিশুর অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার প্রতি প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছে।’
সাত বছর আগে মিয়ানমারে সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে লাখো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে, যেখানে আগের বিতাড়িত রোহিঙ্গারা ইতোমধ্যে অবস্থান করছিল।
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী ক্যাম্পে প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা শিশু বেড়ে উঠছে, যাদের অনেকেই শরণার্থী হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছে। তারা সম্পূর্ণরূপে মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। ২০১৭ সালের আগস্টে সংকটের সূচনা থেকে জাপান সরকার বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী সহায়তার জন্য জাতিসংঘ সংস্থাগুলো ও এনজিওগুলোর মাধ্যমে প্রায় ২৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান প্রদান করেছে। ইউনিসেফ বাংলাদেশ সরকার ও সহযোগী সংস্থাগুলোর সঙ্গে একযোগে কাজ করে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে শিশুদের জন্য নিরাপদ পানি, স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টিকর খাদ্য, সুরক্ষা ও শিক্ষা নিশ্চিত করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।