Status

রাজশাহীর পবায় রিকশাচালককে সমাজসেবা কর্মকর্তার জুতাপেটার ভিডিও ভাইরাল

লাট সাহেব’ বলায় মেজাজ হারিয়ে রাজশাহীর পবা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জাহিদ হাসান রাসেল এক রিকশাচালককে জুতাপেটা করেছেন। পায়ের জুতা খুলে ওই রিকশাচালককে পিটিয়েও তাঁর মনের ক্ষোভ মেটেনি। পরে তার প্রাইভেটকারের ব্যাকডালা থেকে একটি লাঠি বের করে ওই রিকশাচালককে লাঠিপেটাও করেন তিনি। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) এ ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। যদিও ঘটনাটি ঘটেছে গত ২ ফেব্রুয়ারি দুপুরের। সেটি শুক্রবার ভাইরাল হয়।

 

 

ফুটেজে দেখা যায়, একটি রিকশায় চড়ে জাহিদ হাসান বাসার সামনে নামেন এবং ৩০ টাকা ভাড়া দেন। তখন ওই রিকশাচালক তাকে বলেন, ‘বলে উঠবেন’ (ভাড়া ঠিক করে)। এ সময় জাহিদ হাসান বলেন, ‘বলে উঠবোনি, কিন্তু ভাড়া ৩০ টাকার বেশি কেউ চায় না।’ এ সময় রিকশাচালক কিছু একটা বলেন। তখন পেছনে ঘুরে এসে জাহিদ হাসান বলেন, ‘…আরেকবার বলতেছো কেন? আরেকবার বল।’ এরপরই তিনি পায়ের জুতা খুলে রিকশাচালকের মাথায় ও গালে মারতে থাকেন।’ হতবিহবল রিকশাচালক রিকশার ওপরেই বসে থাকেন। জাহিদ হাসান এ সময় জুতা পরে পাশেই রাখা তাঁর প্রাইভেট কারের দিকে যান। গাড়ির ব্যাকডালা থেকে লাঠি বের করে রিকশাচালককে মারতে থাকেন। কয়েকটি আঘাত রিকশায় লাগে। এ সময় তিনি বলতে থাকেন, ‘আগা, আগা (চলে যা)। তখন রিকশাচালক রিকশা নিয়ে দ্রুত চলে যায়।’

 

 

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে শুক্রবার দিনভর সমাজসেবা কর্মকর্তা জাহিদ হাসানের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ধরেননি। তবে পবা উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়ে খোলা একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জাহিদ হাসান নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন।

 

 

 

জাহিদ হাসান লেখেন, ‘আমি জাজেস কোয়ার্টার ফাল্গুনির তিনতলায় থাকি। রাজশাহীর লক্ষ্মীপুর থেকে বাসায় গেটে এসে ৩০ টাকা ভাড়া দিয়েছি। সে আরও ১০০ টাকা লুঙ্গি কিনতে চায়। আমি তাকে নাই বলে নিষেধ করি। সে বারবার বলে। শেষে ভাড়া দিয়ে নেমে আসার সময় আমাকে ছোট ছোট করে “লাট সাহেব” বলে গালি দিলে পরবর্তী ঘটনা ঘটে।’

 

 

জাহিদ হাসানের স্ত্রী রাজশাহীর একজন বিচারক। নগরের রাজপাড়া থানা এলাকার ওই কোয়ার্টারে বিচারকেরা পরিবারসহ থাকেন। ওই ঘটনার ফুটেজ একজন বিচারক তাঁর ব্যক্তিগত সিসি ক্যামেরা থেকে ফাঁস করেছেন বলে জাহিদ হাসান দাবি করেন। তিনি লেখেন, ‘ঘটনার ফুটেজ ওই বিচারক সমাজসেবা অধিদপ্তরকে দিয়েছিলেন। কিন্তু বিষয়টি ব্যক্তিগত ইস্যু বলে “ডিপার্টমেন্ট” এগোয়নি।’ ওই বিচারক এটি ভাইরাল করেন বলেন জাহিদ হাসান দাবি করেন।

 

 

বিষয়টি নিয়ে পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরাফাত আমিন আজিজ বলেন, ‘বিষয়টা অবশ্যই দুঃখজনক। সমাজসেবা অফিস অন্য ডিপার্টমেন্টে। তারপরও বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে। এখন তারা যেভাবে চিন্তা করে সেভাবে করবে।’

 

 

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, এ রকম কোনো বিষয় তার জানা নেই। রিকশাচালক কোনো অভিযোগ করেননি।

 

 

সমাজসেবা অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মনিরা খাতুন বলেন, ‘ভিডিওটা একটু আগেই দেখলাম। বিষয়টা নিয়ে জাহিদ হাসানের সঙ্গে কথা বলতে হবে। এখনো কথা বলিনি।’ এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেখি, আগে কথা বলি। আমাদের বিভাগীয় পরিচালক স্যারও আছেন। আলাপ করে দেখি।’

 

Source link

Leave a Reply

Back to top button