রাউজানে ঋণের প্রলোভনে প্রায় অর্ধকোটি  টাকা হাতিয়ে লাপাত্তা প্রতারকচক্র

চট্টগ্রামের রাউজানে সহজশর্তে ঋণ দেওয়ার প্রলোভনে কয়েকশত গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা একটি প্রতারক চক্র। সমাজ কল্যাণ  উন্নয়ন সংস্থা এর ব্যানার শাটিয়ে ও একই সংস্থার ঋণ কর্মসূচীর বই প্রদান করা হয় বলে দাবি ভুক্তভোগীদের।

 

 

২৭ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার ঋণ প্রদানের কথা ছিল। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন এলাকায় সহজশর্তে ঋণ প্রদানের কথা বলে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ৪-৫জনের গ্রুপ করে প্রতি লাখে ১০ হাজার টাকা করে সঞ্চয় জমা নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাউজান পৌরসভার পাকখাইন্যা পুকুর পাড় এলাকায় জাহাঙ্গীর নামে দুই ব্যক্তির যৌথ মালিকানাধীন বাসা ভাড়ায় অফিসে গিয়ে ঋণের চেক গ্রহণের কথা বলেছিল প্রতারক চক্রের সদস্যরা। সেখানে গিয়ে কয়েকজন ব্যানার দেখতে পেলেও ঋণগ্রহীতারা আসতে শুরু করলে ব্যানার নিয়ে পালিয়ে যায় প্রতারক চক্রের সদস্যরা।

 

 

মুন্সিরঘাটায় একটি কলোনিতে বসবাসকারী খতিজা বেগম বলেন, ৫জন বিশিষ্ট গ্রুপ ভিত্তিক কেন্দ্রঘর করে ৫২ হাজার টাকা নিয়েছিল। আজ বৃহস্পতিবার ঋণের চেক দেওয়ার কথা ছিল। অফিসে গিয়ে দেখতে পায় তারা নেই,বাইরের ব্যানারটিও নেই। তাদের মোবাইলে কল যাচ্ছে না। নুর আয়েশা নামে এক নারী বলেন, দুই বছর মেয়াদী দুই লাখ টাকা নেওয়ার জন্য আমি ২২ হাজার  ৪০০ টাকা প্রদান করি। চেক নিতে আসলে দেখি তারা নেই, বাড়ির মালিক বলছে, তারা ভাড়া নেয়নি, এক তারিখ থেকে উঠার কথা বলেছিল। কৌহিনুর নামে আরেক নারী বলেন, আমি ১১ হাজার ২০০ টাকা দিয়েছি, এখন আমি কী করবো।

 

 

শিল্পী পাল নামে আরেক নারী বলেন, ঋণ নেওয়ার জন্যই আমি ১০ হাজার টাকা দিয়েছি। নিজের ১৭ হাজার টাকা সহ  ৫জন মিলে ৫২ হাজার টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন রাউজান পৌরসভার বাসিন্দা রশিদা বেগম। শুধু তারা নয়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা বাড়ি ভিত্তিক গ্রুক করে কয়েকশ মানুষের কাছ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে ধারণা ভুক্তভোগীদের। প্রতারকচক্রের ভাড়া নেওয়া অফিস পরিদর্শনে  দেখা যায়, দুটি কক্ষে কাপড় মোড়ানো দুটি টেবিলের পাশে ৬টি করে প্লাস্টিকের চেয়ার, অপর কক্ষে কয়েকটি প্লাস্টিকের চেয়ার এবং বড় টেবিল পাখা রাখা আছে।

 

 

কথা হয় ভবন মালিক জাহাঙ্গীরের সাথে। তিনি বলেন, তারা এক তারিখ থেকে ভাড়া নেওয়ার কথা বলেছিল, আজ একটি অনুষ্ঠান করার কথা বলেছিল। আমি এসে দেখি কেউ নাই, তারা চলে গেছে। এরপর থেকে ভুক্তভোগীরা আসতে থাকেন। আমার সাথে তাদের কোনো চুক্তি হয়নি, এক তারিখ উঠার আগেই চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিসান বিন মাজেদ বলেন,  আমার কাছে এইরকম কোনো অভিযোগ আসেনাই। যেহেতু এটি একটি প্রতারণার ঘটনা সেহেতু ভুক্তভোগীরা যারা আছে তারা চাইলে একপক্ষ হয়ে পুলিশের কাছে মামলা করতে পারে,পুলিশ মামলা না নিলে কোর্টে মামলা করতে পারে। অনুমোদনপ্রাপ্ত এনজিও প্রজেক্ট যেগুলো আছে আমরা শুধুমাত্র তাদের সাথে সম্পৃক্ত।

Source link

Exit mobile version