
রমজানকে সামনে রেখে খুলনার বাজারে বেড়েছে মাছ-মাংসের দাম। লেবু, শসা ও বেগুনের দামও বেড়েছে। তবে রমজানে বেশি বিক্রি হওয়া পণ্য খেজুর, ছোলা, চিড়া, মুড়ির দাম এখন পর্যন্ত স্থিতিশীল। এদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ, সিন্ডিকেটের কবলে সয়াবিন তেলে দেখা দিয়েছে কৃত্রিম সংকট।
শনিবার (১ মার্চ) নগরীর পাইকারি বাজার এবং বিভিন্ন কাচা বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
বাজারে দেখা যায়, ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১০০-১১০ টাকা কেজি দরে। আর খেসারির ডাল ১১০-১২০ টাকা ও মসুর ডাল ১২০-১৩০ টাকা, বেসন ১৪০-১৬০ টাকা, চিনি ১৩০-১৪০ টাকা কেজি, চিড়া ৭০-৮০ টাকা, মুড়ি প্রকারভেদে ১০০-১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে, বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট বাজারে। কিছু কিছু দোকানে তেল পাওয়া গেলেও ৫ লিটারের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ টাকায়, আর খোলা তেল ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
খেজুরের বাজার ঘুরে দেখা যায়, সাধারণ মানের খেজুর কেজিপ্রতি ২০০-২৫০ টাকা এবং বিভিন্ন মানের খেজুর ৫০০ থেকে শুরু করে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
মাংসের বাজারে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগি ২০০ টাকা, সোনালি ৩০০ টাকা এবং কক মুরগি ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, গরুর মাংস ৭০০ টাকা কেজি এবং খাসির মাংস ১১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
সবজির বাজারে লেবু ৪০-৬০ টাকা হালি, শসা কেজি ৬০-৭০ টাকা, টমেটো ১০-১৫ টাকা, বেগুন ৭০-৮০ টাকা ও গাজর ৩০-৪০ টাকা, পেঁয়াজ ৫০-৫৫ টাকা, আলু ২০-২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
অপরদিকে তেলাপিয়া ১৪০-১৬০ টাকা, পাবদা ৪০০-৪৫০ টাকা, রুই ৩০০-৩৫০ টাকা, টেংরা ৫০০-৬০০ টাকা, চিংড়ি প্রকারভেদে ৫০০-৭০০ টাকার মধ্যে, ভেটকি মাছ ৪০০-৫০০ টাকা, পাঙাশ আকারভেদে ১৮০-২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। অথচ এক সপ্তাহ আগে সব মাছের দাম কেজিপ্রতি ৪০-৫০ টাকা কম ছিল।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত এক সপ্তাহ ধরে রমজানের বাজার করতে ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন। অনেকে পুরো মাসের বাজার একদিনে করছেন। সরবরাহের তুলনায় বেশি বিক্রি হচ্ছে। তবে তেলের সংকট নতুন কিছু নয়। গত এক মাস ধরেই বড় বড় কোম্পানিগুলো চাহিদার তুলনায় সয়াবিন তেল কম সরবরাহ করছে।
বড় বাজারের ব্যবসায়ী সালেহ আহমেদ জানান, গত এক বছরে সব পণ্যের দাম কিছুটা বেড়েছে। সরবরাহ কম থাকলে সে পণ্যের দাম বেশি থাকে। এজন্যই তেলের দাম বেশি। আর বাজারে তেল সরবরাহ কম।
ক্রেতা ফরহাদ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, সব সময় ব্যবসায়ীর কোনো না কোনো পণ্য নিয়ে সিন্ডিকেট করবেই। এ বছর রমজানকে টার্গেট করে ব্যবসায়ীরা সয়াবিন তেল নিয়ে সিন্ডিকেট শুরু করেছে। তবে অন্যান্য পণ্যের দাম এখনো বাড়েনি।
গল্লামারি বাজারে আসা আরিফ বিল্লাহ বলেন, সবজি, আলু-পেঁয়াজের দাম অনেকটা কম। তবে তেল ও চালের দাম বেশি। আর লেবুর দাম বৃদ্ধি হওয়া অযৌক্তিক। বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না।
খুলনার বাজার নিয়ন্ত্রণ টাস্কফোর্সের আহ্বায়ক ও খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নূরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ বলেন, সিন্ডিকেট রুখতে এবং বাজার নিয়ন্ত্রণে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া রমজান মাসে পণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।
মো. আরিফুর রহমান/জেডএইচ/এমএস