যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে নিরাপত্তা গ্যারান্টি দেবে না : ট্রাম্প

টানা তিন বছর ধরে চলমান রাশিয়ার চলমান আগ্রাসনের শুরু থেকেই ইউক্রেনকে বিপুল পরিমাণে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে গত মাসেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেন নীতিতেও এসেছে নাটকীয় পরিবর্তন। আর এমনই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প।
খনিজ চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটন সফরে আসছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে নিরাপত্তা গ্যারান্টি দেবে না। এছাড়া ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে শুক্রবার ওয়াশিংটন ডিসি সফর করবেন বলেও তিনি নিশ্চিত করেছেন।
ট্রাম্প বলেন, আমি (ইউক্রেনকে) খুব বেশি নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে যাচ্ছি না। আমরা চাই ইউরোপ এটি করুক।
জেলেনস্কি এর আগে বলেছিলেন, ইউক্রেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি প্রাথমিক অর্থনৈতিক চুক্তি প্রস্তুত রয়েছে, তবে এই চুক্তিতে এখনও কোনো মার্কিন নিরাপত্তা গ্যারান্টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। যদিও রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শেষ করার জন্য এমন কিছুকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে কিয়েভ।
এই সপ্তাহের শেষের দিকে ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার ফলাফলের ওপর চুক্তির পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে বলেও প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি কিয়েভে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন। তিনি বলেছেন, এই চুক্তিটি একটি দুর্দান্ত সাফল্য হতে পারে এবং বড় সাফল্য নির্ভর করছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে আমাদের কথোপকথনের ওপর।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, সম্ভাব্য এই চুক্তিটিতে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণ-মাত্রায় আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য মার্কিন সহায়তার ক্ষতিপূরণ হিসাবে ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে।
হোয়াইট হাউস মহাকাশ, প্রতিরক্ষা এবং পারমাণবিক শিল্পে ব্যবহৃত খনিজগুলোর বিশাল ভাণ্ডারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য কিয়েভের ওপর ব্যাপক চাপ প্রয়োগ করেছে। ট্রাম্পের কাছ থেকে শক্তিশালী সমর্থন নিশ্চিত করার জন্য ইউক্রেনের প্রচেষ্টার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এই চুক্তিটি। অন্যদিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের দ্রুত সমাপ্তি চান ট্রাম্প।
ট্রাম্প বুধবার বলেন, তিনি এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন যার ফলে যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভের লাভজনক ‘রেয়ার আর্থ’ খনিজের ওপর বস্তুত অধিকার পাবে। এর ফলে রাশিয়ার তিন বছরব্যাপী আগ্রাসী যুদ্ধে ওয়াশিংটন ইউক্রেনকে যে অস্ত্র পাঠিয়েছিলে তার মূল্য পুষিয়ে নেবে ওয়াশিংটন।
ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার এই নতুন মেয়াদের প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে বলেন, এই চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য এবং যুদ্ধের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য জেলেনস্কি শুক্রবার হোয়াইট হাউসে আসবেন। ট্রাম্প বলেন, এই চুক্তি আমাদের জন্য বিশাল সম্পদ নিয়ে আসছে। তবে তিনি বলেন, তার প্রথম লক্ষ্য হচ্ছে এই যুদ্ধ বন্ধ করা যার ফলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের লাখ লাখ সৈন্য এবং ইউক্রেনের বেসামরিক লোকজনও হতাহত হয়েছেন।