Status

যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ বিভাগে গোলাপগঞ্জের শামসুল হক বিরল সম্মান ভূষিত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে ক’জন বাংলাদেশী নিজ যোগ্যতার বলে সাফল্যের উচ্চ আসন লাভ করতে সক্ষম হয়েছেন,তাদের মধ্যে একজন হলেন গোলাপগঞ্জ উপজেলার ১নং বাঘা ইউনিয়েনের গৌরা বাড়ী গ্রামের মরহুম আাব্দুল মুছাব্বিরের পুত্র শামসুল হক।

 সম্প্রতি তিনি সে দেশের পুলিশ বিভাগের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদ লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (এন ওয়াই পিডি) থেকে অবসর গ্রহন করেন। অবসরকালীন  সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে বিরল সম্মানে ভূষিত হন তিনি। দীর্ঘ একুশ বছর সে দেশের পুলিশ বিভাগে একজন উচ্চ পদস্হ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বাংলাদেশীদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন তিনি । তার সাফল্যে নিয়ে নিজ উপজেলা গোলাপগঞ্জের মানুষ গর্ববোধ করছেন। শামসুল হক গোলাপগঞ্জ উপজেলার এক আলোকিত পরিবারের সন্তান। তার বড় ভাই আব্দুর রহমান যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশী ও মুসলিম কমিউনিটির কাছে অত্যন্ত এক সু-পরিচিত ব্যক্তিত্ব। দ্বিতীয় ভাই আাব্দুল হক বাঘা ইউনিয়নের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ হাজী আাব্দুল আহাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন স্বনামধন্য শিক্ষক ছিলেন। তিনিও বর্তমানে স্হায়ী ভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। তৃতীয় ভাই মাওলানা নজরুল হক বহু প্রতিভার অধিকারী এক ব্যক্তিত্ব।

 

তিনি সরকারী আলিয়া মাদ্রাসা থেকে কামিল পাশ করার পাশাপাশি জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধীনে এমএ ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনিও বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। দেশে থাকাকালীন সময়ে তিনি দীর্ঘ দিন গোলাপগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রানাপিং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে দায়ীত্ব পালন করেন। এছাড়া নিজ এলাকার টাইটেল মহিলা মাদ্রাসার প্রিন্সিপালের দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের সর্ব কনিষ্ঠ ভাই বদরুল হক যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ বিভাগের একজন কর্মকর্তা। দেশে থাকাকালীন সময়ে তিনি সাংবাদিকতা পেশার সাথে জড়িত ছিলেন। গোলাপগঞ্জের সাংবাদিক সমাজকে নিয়ে একটি অপরাধ মুক্ত সমাজ গঠনে তার প্রশংসনীয় ভূমিকা ছিল। তিনি দীর্ঘ দিন গোলাপগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। গোলাপগঞ্জের একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবার হিসেবে শামসুল হকের পরিবারের যথেষ্ট পরিচিতি ও সুনাম রয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়

 

শামসুল হকের পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেওয়ার পথ ছিল ব্যতিক্রমী। উচ্চ বিদ্যালয়ের ডিগ্রি ছাড়াই নিউইয়র্কে আগত শামসুল হক কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে নিজের জন্য একটি সুদৃঢ় ভবিষ্যৎ গড়ে তোলেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি উচ্চ শিক্ষায়ও বিশেষ কৃতিত্ব অর্জন করেন। তিনি বারুচ কলেজ থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতক ডিগ্রি (বিবিএ) অর্জন করেন এবং সেখানে সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক (সিইউএনওয়াই)-এর ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট সিনেটের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি বিশ্বখ্যাত কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে মাস্টার্স ডিগ্রি (এমপিএ) লাভ করেন।

এনওয়াইপিডিতে তার কর্ম জীবন ছিল সততা, পেশাদারিত্ব এবং কর্তব্য পরায়ণতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি রাস্তায় টহল পুলিশ থেকে শুরু করে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে জবাব দিহিতার বিষয় গুলো তদারকি করেছেন। তার দৃঢ় মনোবল এবং কর্তব্য নিষ্ঠার জন্য তিনি সহকর্মী ও কমিউনিটির মানুষের শ্রদ্ধা অর্জন করেছেন। অবসরের সময় তিনি নিজের ইউনিটের সবচেয়ে সিনিয়র লেফটেন্যান্ট কমান্ডার ছিলেন।

এনওয়াইপিডিতে দীর্ঘ ক্যারিয়ার শেষে এক অভিমত প্রকাশ করে শামসুল হক কৃতজ্ঞতার সাথে বলেন, প্রতিটি দিন নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছে, কিন্তু সেই সঙ্গে মূল্যবান শিক্ষা দিয়েছে— ধৈর্য, সততা, এবং টিমওয়ার্কের শক্তি সম্পর্কে। আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ যে আমি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সেরা সদস্যদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি।

 
যদিও তিনি এনওয়াইপিডি থেকে অবসর নিচ্ছেন, নিউইয়র্ক এবং এখানকার মানুষের প্রতি তাঁর ভালোবাসা অটুট থাকবে বলে তিনি জানালেন। ভবিষ্যতে তিনি কমিউনিটির উন্নয়নের জন্য কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।  গোলাপগঞ্জ উপজেলার আলোকিত এই পরিবারের এব্যাপারে অভিমত প্রকাশ করতে গিয়ে মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্হার সভাপতি, ঐতিহ্যবাহী সরকারী এম সি একাডেমীর প্রাক্তন শিক্ষক অধ্যাপক মাহমুূদ চৌধুরী বলেন শামসুল হক নিজ যোগ্যতায় আজ পৃথিবীর সুপার পাওয়ার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভাবনীয় সম্মান অর্জন করেছে, এর জন্য আমরা গর্বিত। অনুরুপ ভাবে সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ১ এর বার বারের নির্বাচিত সভাপতি ও সচিব,গোলাপগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি,গোলাপগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সেক্রেটারী সিনিয়র সাংবাদিক আাব্দুল আহাদ বলেন শামসুল হক ও তার পরিবারের কারনে আজ গোলাপগঞ্জের গোলাপের সৌরভ  বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। শামসুল হকের সাফল্য আমাদের জন্য প্রেরনা হয়ে কাজ করবে।

 

Source link

Leave a Reply

Back to top button