
<p>মহান আল্লাহ তায়ালা আল কুরআনে সর্বমোট ১৩ বার বিভিন্ন আঙ্গিকে ‘সাওম’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন এবং তাকিদ সহকারে সাওম পালন করার নির্দেশ প্রদান করেছেন। নিম্নে ১৩টি স্থানের পরিচিতি তুলে ধরা হলো।<br />১. ‘তাছুমু’ রূপে আল কুরআনের ২নং সূরা আল বাক্বারাহ-এর ১৮৪ নং আয়াতে এসেছে একবার। ইরশাদ হয়েছে : আর সিয়াম পালন করাই তোমাদের জন্য অধিকতর কল্যাণের যদি তোমরা জানতে।</p>
<p>২. আর ‘ফালইয়াছুমহু’ রূপে ২নং সূরা বাক্বারাহ-এর ১৮৫ নং আয়াতে একবার এসেছে। ইরশাদ হয়েছে : কাজেই তোমাদের মধ্যে যে এ মাস পাবে সে যেন এ মাসে সিয়াম পালন করে।</p>
<p>৩. আর ‘সাওমান’ রূপে ১৯ নং সূরা মারয়ামের ২৬ নং আয়াতে এসেছে একবার। ইরশাদ হয়েছে : অতঃপর মানুষের মধ্যে কাউকেও যদি তুমি দেখ তখন বলো, আমি দয়াময়ের উদ্দেশ্যে মৌনতা অবলম্বনের মানত করেছি। কাজেই আজ আমি কিছুতেই কোনো মানুষের সাথে কথা বলব না।</p>
<p>৪. আর ‘আসসিয়াম’ রূপে ২নং সূরা বাক্বারাহ-এর ১৮৩ নং আয়াতে, ১৮৭ নং আয়াতে, ১৯৬ নং আয়াতে এবং ২৯৬ নং আয়াতে মোট ৪ বার এসেছে এবং এর সব আয়াতেই সিয়াম পালনকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।<br />৫. আর ‘আসিয়াম’ রূপে ৪ নং সূরা নিসা-এর ৯২ নং আয়াতে এসেছে একবার। ইরশাদ হয়েছে : আর যে সঙ্গতিহীন সে একাধিক্রমে দু’মাস সিয়াম পালন করবে।</p>
<p>৬. আর ‘ফাসিয়ামু’ আকারে ৫ নং সূরা আল মায়েদাহ-এর ৮৯ নং আয়াতে এসেছে একবার। ইরশাদ হয়েছে : কিংবা সেটার কাফফারা হবে দরিদ্রকে খাদ্যদান করা কিংবা সমান সংখ্যক সিয়াম পালন করা।</p>
<p>৭. আর ‘ফাসিয়ামু’ আকারে ৫৮ নং সূরা মুজাদালাহ-এর ৪নং আয়াতে এসেছে একবার। ইরশাদ হয়েছে : কিন্তু যার এ সামর্থ্য থাকবে না, একে অন্যকে স্পর্শ করার আগে তাকে একাধিক্রমে দু’মাস সিয়াম পালন করতে হবে, সে তাতেও অসমর্থ, সে ষাটজন মিসকীনকে খাওয়াবে, এটা এ জন্য যে, তোমরা যেন আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ওপর ঈমান আন।</p>
<p>৮. আর ‘আসসায়িমীনা’ রূপে ৩৩ নং সূরা আল আহযাব-এর ৩৫ নং আয়াতে এসেছে একবার। ইরশাদ হয়েছে : নিশ্চয়ই সাওম পালনকারী পুরুষ ও সাওম পালনকারিণী নারী-এর জন্য আল্লাহ তায়ালা রেখেছেন ক্ষমা ও মহাপ্রতিদান।</p>
<p>৯. আর ৩৩ নং সূরা আল আহযাবের ৩৫ নং আয়াতে ‘ওয়াসসায়িমাতি’ রূপে এসেছে একবার। ইরশাদ হয়েছে : “নিশ্চয়ই সাওম পালনকারিণী নারীদের জন্য আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা ও মহাপ্রতিদান রেখেছেন।</p>
<p>মোটকথা সূরা আল আহযাব-এর ৩৫ নং আয়াতটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এতে আল্লাহ তায়ালার ক্ষমা ও মহাপ্রতিদান প্রাপ্তদের পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে : “নিশ্চয়ই মুসলিম পুরুষ ও মুসলিম নারী, মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী, অনুগত পুরুষ ও অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদী নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও ধৈর্যশীল নারী, বিনীত পুরুষ ও বিনীত নারী, দানশীল পুরুষ ও দানশীল নারী, সাওম পালনকারী পুরুষ ও সাওম পালনকারী নারী, যৌনাঙ্গ হিফাজতকারী পুরুষ ও যৌনাঙ্গ হিফাজতকারী নারী, আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী নারীÑ তাদের জন্য আল্লাহ তায়ালা রেখেছেন ক্ষমা ও মহাপ্রতিদান।” এই আয়াতে কারীমার মর্মের প্রতি গভীর দৃষ্টিতে তাকালে অবশ্যই অনুধাবন করা যায় যে, সিয়াম পালনকারী পুরুষ ও সিয়াম পালনকারী নারীগণ আদতেই ভাগ্যবান। কারণ, তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহাপ্রতিদান। এটাই আল্লাহ তায়ালার ওয়াদা। এহেন ক্ষমা ও মহাপ্রতিদানে যারা বিভূষিত হবে, তারাই সফলতা লাভে ধন্য হবে। এর কোনো অন্যথা হবার নয়। বস্তুতঃ মাহে রমযানে নেক আমলের যে সকল সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে, তা যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারলে সফলতা লাভ করা অবধারিত। মহান রাব্বুল আলামীন প্রত্যেক সিয়াম পালনকারী নর ও নারীকে চূড়ান্ত সফলতা লাভের তাওফিক দান করুন, আমীন!</p>
Source link