
গতবছর হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই এখন পর্যন্ত তিনি অবস্থান করছেন ভারতে। মোদির আশ্রয়ে বাংলাদেশকে অশান্ত করার একাধিক প্রচেষ্টা করে যাচ্ছেন হাসিনা এবং তার দল আওয়ামীলীগ। বাংলাদেশের হাজার হাজার ছাত্র-জনতাকে খুন করার পরেও মোদি যেন ভুলতেই পারছে না আওয়ামীলীগ সভানেত্রীকে। এ যেন বিশ্বকবি,রবীন্দ্রনাথের গান, ‘তোরা যে যা বলিস ভাই,আমার সোনার হরিণ চাই’। আদতে হাসিনা মোদির কাছে সেই হরিণের মতো।
কেননা একমাত্র হাসিনাই পারে মোদির সকল মনস্কামনা পূরণ করতে। দেশের সকল স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে ভারতের উন্নয়নে বাংলাদেশের ক্ষতিসাধন কার্যক্রমে শেখ হাসিনার জুড়ি মেলা ভার। তাইতো নানা গুজব এবং অপতথ্য প্রচার করে বাংলাদেশের জনগণকে স্ববিরোধী এবং দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
সম্প্রতি ‘এই মুহূর্তে কলকাতায় বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বৈঠক করবেন আমেরিকার গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গাবার্ডের সাথে’ শীর্ষক একটি ভিডিও সোশ্যাল হ্যান্ডেল ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে ভিডিওটি সত্য না মিথ্যা, তা নিয়ে তৈরি হয় ধোঁয়াশা।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাবার্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকের তথ্যও সঠিক নয়। পুরনো সরকারি সফরের ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।
ভিডিওটি নিয়ে গবেষণা করা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বাংলাদেশের ফ্যাক্ট চেকিং বা তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে ভিডিওটি আসল সত্যতা উঠে এসেছে।
গতকাল সোমবার (৩ মার্চ) রিউমার স্ক্যানারের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুরনো সরকারি সফরের ভিডিওকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাবার্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। যা মূলত মিথ্যা এবং আওয়ামী অপপ্রচারেরই একটি অংশ।
এছাড়াও ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, মূল ভিডিওটির ০০:১৫ থেকে ০০:৪১ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটি আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে। ভিডিওর সেই অংশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গণমাধ্যমের সামনে বক্তব্য প্রদান করতে দেখা যায়। পরবর্তী সময়ে, ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম Ekattor TV এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৯ সালের ২২ নভেম্বর ‘একান্ত বৈঠকে বসছে শেখ হাসিনা ও মমতা’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনটি পর্যবেক্ষণ আরও দেখা যায়, সেই ভিডিওতে শেখ হাসিনার পরনে থাকা শাড়ির সঙ্গে আলোচিত ভিডিওতে থাকা তার পরনে শাড়ির মিল রয়েছে। প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান সৌরভ গাঙ্গুলীর আমন্ত্রণে বাংলাদেশ-ভারতের ঐতিহাসিক দিবারাত্রি টেস্টের উদ্বোধনীতে অংশ নিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে বছর ২২ নভেম্বর সরকারি সফরে কলকাতা পৌঁছান।
প্রসঙ্গত, আওয়ামীলীগের পেইজ বিভিন্ন ভুয়া পেজ এবং তথাকথিত সাংবাদিকরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিকে উসকে দিতে এমন চটকদার মিথ্যা খবর এবং প্রোপাগান্ডার আশ্রয় নিচ্ছে হাসিনার পতনের পর থেকেই।