Status

মনোহরগঞ্জে সড়কের বেহাল দশায় ১০ গ্রামের মানুষের ভোগান্তি!

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার শিংজোড়-উত্তর হাওলা সড়কটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ৩/৪ ইউনিয়নের মানুষের চলাচলের অন্যতম সড়ক। ২০২৪সালের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পর সংস্কার না হওয়ায় ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। খানাখন্দ ও বড় বড় গর্ত হয়ে সড়কটি যেন মরন ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে যানবাহন ও স্থানীয়রা। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।উপজেলা প্রকৌশলী বলছেন খুব দ্রুতই সমস্যার সমাধান করা হবে।

 

গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দিয়ে নাথেরপেটুয়া ও লক্ষণপুর থেকে শোয়ারি, মান্দুয়ারা, জোড়পাইয়া, বরল্লা, হাজরামুড়ী, উত্তর হাওলা ও ঠেঙ্গারবামসহ অন্তত ১০টি গ্রামের লোকজন বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন। প্রতিদিন এই সড়কে দিয়ে হাজার হাজার মানুষ ও শত শত যানবাহন চলাচল করে।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, শিংজোড় থেকে উত্তর হাওলা পর্যন্ত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাড়ে ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত রয়েছে।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পরবর্তী সময়ে সড়কটি সংস্কার না করায় সামান্য বৃষ্টিতে গর্তে পানি জমে যায়। সড়কের উপরের পিচ উঠে অনেক জায়গায় জমেছে ১ থেকে ৬ ইঞ্চি পর্যন্ত কাঁদা ও বালি। সড়কের শিংজোড় জামে মসজিদ, শোয়ারি নতুনপাড়া জামে মসজিদ এলাকাসহ অন্তত ৭/৮টি স্থান দেবে গেছে। এসব জায়গায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন ও স্থানীয়রা।

 

 

এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী ইজিবাইক চালক মো. রাজু বলেন, ‘রাস্তার যে বেহাল দশা, তাতে চলাচল করা খুবই কষ্ট। কয়েকদিনে দুইবার আমার ইজিবাইক উল্টে গেছে। তারপরও গাড়ি নিয়ে বের হতে হয়, গাড়ি না চালালে খাব কী।’

 

 

লক্ষণপুর ইসলামিয়া ফাযিল মাদ্রাসার আলিম ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী মাহজাবিন তাবাস্মুম বলেন, ‘দুই কিলোমিটার হেঁটে মাদরাসায় যেতে হয়। কোন যানবাহন পাওয়া যায় না ভাঙা রাস্তার জন্য। বৃষ্টির সময় কয়েকবার গর্তের মধ্যে পড়ে গেছি। গর্তে পড়ে অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।’বেশ কয়েকজন পুঙ্গু হয়েছে। আমি সড়কটি দ্রুত সংস্কার চাই।

 

 

প্রিকাভ চালক ওমর ফারুক বলেন, ‘নাথেরপেটুয়া থেকে জোড়পাইয়া মাত্র আড়াই কিলোমিটার পথ যেতে স্বাভাবিকভাবে ২০ মিনিট লাগার কথা। কিন্তু খানাখন্দের কারণে প্রায় পোনে এক ঘণ্টার সময় লাগে। অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। যাত্রীরাও চরম ভোগান্তির শিকার হয়। আমাদের গাড়ির বেশ ক্ষতি হয়।’

 

 

পথচারী ও গাড়িচালকরা জানান, নিম্নমানের কাজ হওয়ায় সড়কের পিচ উঠে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না গাড়িগুলো। শিগগিরই সড়ক মেরামত করা না হলে এ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

 

আলম শেখ নামে এক বৃদ্ধ আক্ষেপ করে বলেন, ‘চারদিকে এত উন্নয়ন তবুও আমাদের এই সড়কটি সংস্কার হয় না। ২ থেকে ৩ বছর ধরে রাস্তাটির খারাপ অবস্থা। মানুষজন অসুস্থ হলে হাসপাতালেও নেয়া যায় না, আর কবে সংস্কার হবে এই রাস্তা?’

 

 

হাজী কনস্ট্রাকশন এন্ড বিল্ডার্স এর স্বত্বাধিকারী ও উত্তর হাওলা ইউনিয়ন পরিষদের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো.দিদারুল ইসলাম বলেন, ‘তিন বছরের বেশি সময় ধরে রাস্তাটির বেহাল দশা। সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য নিজের পকেটের টাকা দিয়ে খানাখন্দে ইট দিয়েছি, কিন্তু এখন আর দেয়ার মতো জায়গা নেই। সব জায়গায় খারাপ অবস্থা। এখনই যদি এই সড়ক সংস্কার না করা হয়, তাহলে রাস্তা দিয়ে আর মানুষ যাতায়াত করতে পারবে না।’

 

 

মনোহরগঞ্জ উপজেলার প্রকৌশলী শাহ আলম বলেন, ‘সড়কটি সংস্কারের জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সাড়ে ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির প্রয়োজনীয় অংশ গুলো সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। খুব দ্রুত কাজ শুরু হবে।’
সড়কের বাকি কাজ আগামী অর্থবছরে করার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান এই প্রকৌশলী।

Source link

Leave a Reply

Back to top button