ভারতসহ কয়েকটি দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতসহ আরও কয়েকটি দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। ট্রাম্প কংগ্রেসে ভাষণ দেওয়ার সময় জানান, আগামী এপ্রিল থেকে এই শুল্ক কার্যকর হবে। তিনি বলেছিলেন, দীর্ঘদিন ধরে অন্য দেশগুলো আমেরিকার ওপর শুল্ক চাপিয়ে আসছে, এবার আমেরিকা পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে। ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা এবং মেক্সিকোসহ কয়েকটি দেশের ওপর শুল্ক আরোপের বিষয়টি তার ভাষণে উঠে এসেছে।

 

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “আমরা আগামী ২ এপ্রিল থেকে পারস্পরিক শুল্ক আরোপ করব।” ভারত বিশেষভাবে উল্লেখ করে তিনি জানান, ভারত আমেরিকার ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, যা তিনি ন্যায্য মনে করেন না। তার মতে, এ ধরনের ব্যবস্থার ফলে আমেরিকার ক্ষতি হচ্ছে এবং সে কারণে পারস্পরিক শুল্ক আরোপ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 

এছাড়া, ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেন যে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, ব্রাজিল, ভারত ও অন্যান্য দেশগুলো যখন মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করবে, আমেরিকা তখন তাদের পণ্যের ওপরও শুল্ক আরোপ করবে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতি সম্পর্কে আগেই মোদি সরকারকে সতর্ক করেছিলেন, এবং এর পরেই মোদি সরকার কিছু পণ্যের ওপর শুল্ক কমিয়ে দিয়েছে।

 

ট্রাম্প তার ভাষণে আরও বলেন, “আমরা পারস্পরিক শুল্ক চাপানোর নীতি থেকে এক সেকেন্ডের জন্যও পিছপা হব না।” তার কথায়, যে দেশ মার্কিন পণ্যের ওপর যত বেশি শুল্ক চাপাবে, আমেরিকাও সেই দেশের পণ্যের ওপর তত শুল্ক বসাবে। ট্রাম্পের এই নীতি “টিট ফর ট্যাট” হিসেবে পরিচিত, যা প্রতিশোধমূলক শুল্ক ব্যবস্থাকে নির্দেশ করে।

 

ভারত, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সম্পর্কে কিছু সময় আগেই আরও একবার সতর্ক করে দেয় ট্রাম্প। তার সঙ্গে বৈঠকে মোদি সরকারও বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন। ট্রাম্প তার বক্তব্যে বলেন, “আমি বলেছিলাম, আপনি শুল্ক আরোপ করুন বা না-করুন, আমরাও শুল্ক আরোপ করব।” ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময়ও এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল।

 

এই পাল্টা শুল্কের ঘোষণার পর মোদি সরকার তৎপরতা শুরু করে। সম্প্রতি বাজেটে ভারত যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা হুইস্কি এবং মোটরবাইকসহ একাধিক পণ্যে শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। মার্কিন বোরবন হুইস্কির ওপর ১৫০ শতাংশ শুল্ক আগে ছিল, তবে এটি ১০০ শতাংশে কমানো হয়েছে। মোটরবাইকেও শুল্ক কমানো হয়েছে, বিশেষত হারলে ডেভিডসন ব্র্যান্ডের ক্ষেত্রে।

 

এই শুল্ক পরিবর্তন এবং বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পর্কিত অন্যান্য পদক্ষেপগুলি ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে নতুন এক দিক দিচ্ছে। যদিও ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পর পরিস্হিতি কেমন হবে তা এখনও পরিষ্কার নয়, তবে এটি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। তথ্যসূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস

Source link

Exit mobile version