
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে একেবারেই ছন্দে ছিলেন না জাতীয় দলের দুই অভিজ্ঞ তারকা মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তাতে প্রচ- সমালোচনায় বিদ্ধ হন। তবে ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা চলছে প্রিমিয়ার লিগেও। ব্যর্থ হয়েছেন সদ্যই অবসর নেওয়া তামিম ইকবালও। তাতে লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে নবাগত গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের কাছে উড়ে গেছে মোহামেডান। গতকাল বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে ১০৭ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে গুলশান ক্রিকেট ক্লাব। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ইফতেখার হোসেন ইফতির সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৯৮ রান করে নবাগত দলটি। জবাবে ৪০.২ ওভারে মাত্র ১৯১ রানে গুটিয়ে যায় মোহামেডান।
শুধু গতবারের রানার্সআপ মোহামেডানই নয়, হেরেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনীও। সাদা-কালোদের যেমন হারিয়েছে এক নবাগত দল আবাহনীর হন্তারকও তাই। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ২০২৪-২৫ মৌসুমটা শুরু হলো হইচই ফেলেই। দিনের অন্য ম্যাচে শামীম হোসেনের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়িয়ে রূপগঞ্জ টাইগার্সকে হারিয়েছে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব।
বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে প্রথমে ব্যাট করে গুলশান করেছিল ৮ উইকেটে ১৯৮ রান। ৩৪ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ওপেনার জাওয়াদ আবরার ও ইফতেখার হোসেন দলের হাল ধরেন। ৪ চার ও ৫ ছক্কায় ৮৬ বলে ৭৫ রান করে জাওয়াদ আউট হন। তবে ইফতেখার ফিরেছেন এবারের লিগের প্রথম সেঞ্চুরিটি তুলে নিয়েই। ৯ চার ও ৩ ছক্কার ইনিংসে ১১০ বলে ১০৮ রান করে আবু হায়দার রনির বলে তামিমের হাতে ক্যাচ দেন তিনি।
রান তাড়ায় ৪০.২ ওভারে ১৯১ রানে অলআউট হয় মোহামেডান। তামিম ইকবাল (২২), মুশফিকুর রহিম (৭) ও মাহমুদউল্লাহর (১০) মতো তারকারা ব্যর্থ হয়েছেন। দলটির পক্ষে ৭৯ বলে সর্বোচ্চ ৭৩ রান করেন আরিফুল ইসলাম। সেঞ্চুরির পর বল হাতেও ৩ উইকেট নিয়ে গুলশানের সেরা বোলার ইফতেখার।
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর হারটাকে অঘটন বলা যাবে কি! জাতীয় দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন ও সাবেক টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক আবাহনীতে আছেন। তবে অগ্রণী ব্যাংকের খেলোয়াড়দের তুলনায় কাগজে-কলমে খুব একটা এগিয়ে রাখা যায় না আবাহনীকে। মিরপুরে আবাহনী ব্যাটিংয়ে তেমন সুবিধা করতে পারেনি। পারভেজ হোসেন ও মোসাদ্দেক হোসেনের ফিফটিতে ২৩৪ রান করে অলআউট হয় তারা।
ইনিংসের তৃতীয় বলে ওপেনার শাহরিয়ার কমলকে হারানোর পর আবাহনীর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন ও ওপেনার পারভেজ হোসেন জুটি বাঁধেন। ৫৪ রানের ওই জুটি ভাঙে নাজমুল ৫১ বলে ২০ রান করে নাঈম হাসানের বলে এলবিডব্লিই হলে। আরেক প্রান্তে ফিফটি তুলে নেন পারভেজ। ৭৪ বলে ৬ চারে ৫০ রান করেন তিনি। তার বিদায়ের পর আবাহনীর ব্যাটসম্যানরা আসা-যাওয়ার মিছিলে ছিলেন। এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে ৬৫ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৩ রান করেন মোসাদ্দেক।
রান তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতেই ৫৮ রান তুলে ফেলে অগ্রণী ব্যাংক। দুই ওপেনারের মধ্যে ৩৫ বলে ৩৫ রান করেন ইমরানুজ্জামান, ৭০ বলে ৪৬ রান করেছেন সাদমান ইসলাম। এরপর অগ্রণী ব্যাংককে টেনে নেন অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। জয় থেকে ৬ রান দূরে থাকতে ৯৪ বলে ৩ চার ও ৭ ছক্কায় ৯৪ রান করে আউট হয়ে যান তিনি।
দিনের আরেক ম্যাচে বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে রূপগঞ্জ টাইগার্সের দেওয়া ২১৭ রানের লক্ষ্য ছুঁতে নেমে ১১৩ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে প্রাইম ব্যাংক। সেখান থেকেই প্রত্যাবর্তনের দুর্দান্ত গল্প লিখে দলকে জেতান শামীম হোসেন। খালেদ আহমেদকে নিয়ে ১০৭ রানের জুটি গড়ে দলকে জিতিয়েই ড্রেসিংরুমে ফেরেন জাতীয় দলের এই ব্যাটসম্যান। প্রাইম ব্যাংক জিতে যায় ৩৩তম ওভারে। ৮৩ বলে ১০ চার ও ৪ ছক্কায় ৯৮ রানে অপরাজিত ছিলেন শামীম। খালেদ অপরাজিত ছিলেন ২৮ রানে।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে আবদুল মজিদের ৭৩ বলে ৫৩ ও তানভীর হায়দারের ৫৬ বলে ৪৭ রানের পর ২১৬ রানে অলআউট হয় রূপগঞ্জ। ৩টি উইকেট করে নেন প্রাইম ব্যাংকের আরাফাত সানি ও নাজমুল ইসলাম।