বেহাল সড়ক, ভোগান্তিতে কয়েক লাখ মানুষ


বরিশাল সদর উপজেলার লাকুটিয়া গ্ৰামের ভ্যানচালক সোবহান আলী। দীর্ঘ ১৮ বছরের বেশি সময় ধরে লাকুটিয়া থেকে বাবুগঞ্জ সড়কে ভ্যান চালিয়ে তার পাঁচ সদস্যের সংসার চলে। আগে মোটামুটিভাবে দিন চললেও এখন চলছে টানাপোড়েনের মধ্যদিয়ে। কারণ যে সড়কে ভ্যান চালিয়ে তার আয় হয়, সে সড়কটি বর্তমানে চলাচলের অনুপযোগী।

প্রতিদিন ওই সড়কে ভ্যান চালিয়ে ৫০০-৭০০ টাকা আয় হলেও দিন শেষে তার অর্ধেক টাকা ব্যয় হয় ভ্যান মেরামতে। ফলে ভাঙাচোরা সড়কটির কারণে তার সংসারে টানাপোড়েন লেগেই আছে।

বরিশাল সদর উপজেলার লাকুটিয়া বাজার থেকে বাবুগঞ্জ কলেজ গেট পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার ভাঙাচোরা সড়কটির কারণে এভাবেই নিজের ক্ষোভের কথা বলছিলেন ভ্যানচালক সোবাহান আলী।

শুধু সোবহান আলীই নয়, প্রতিদিন সড়কটি দিয়ে বরিশালের সঙ্গে চারটি (বাবুগঞ্জ, হিজলা, মুলাদী ও মেহেন্দিগঞ্জ) উপজেলার মানুষের যাতায়াত। তাদের সবারই একই অভিযোগ সড়কটি নিয়ে। বর্ষায় সড়কটি পুরোটাই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে বলে জানান এলাকাবাসী।

সরেজমিন দেখা গেছে, বরিশাল সদর উপজেলার লাকুটিয়া বাজার থেকে বাবুগঞ্জ কলেজ গেট পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার সড়কটির পুরোপুরি খানাখন্দে ভরা। কোথাও বেশি বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, আবার কোথাও ছোট ছোট গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ভোগান্তি নিয়েই চলাচল করছে মানুষ।

লাকুটিয়া-বাবুগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা সাব্বির আহমেদ, আনোয়ার হোসেন, জাহিদুল ইসলাম, উজ্জ্বল ও মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় ধরে দেখছি রাস্তার এই বেহাল দশা। কোনো সরকারের আমলেই রাস্তাটি ঠিক করা হলো না। সবাই শুধু আশা দেয়। পরে খবর নেয় না।’

স্থানীয় স্কুলশিক্ষক সাইদুল ইসলাম জানান, রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে তিন বছর আগে তার ছোট ভাই অকালে প্রাণ হারান। তিনি বরিশাল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে গাড়ির এক চাকা খাদে পড়ে গাড়ির নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

কথা হয় বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শামসুল আলম ফকিরের সঙ্গে। তিনি বলেন, রাস্তাটি সংস্কারের জন্য একাধিকবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে। তারা উদ্যোগ না নিলে সেখানে আমাদের কিছু করণীয় নেই।

এ বিষয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক আহমেদ বলেন, আসলেই রাস্তাটির অবস্থা খুবই খারাপ। শিগগির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

বরিশাল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, রাস্তাটি সংস্কারের জন্য গত জুনে এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তারা অনুমোদন দিলে সড়কটি সংস্কার করা হবে। শুধু সংস্কার নয়, পাশাপাশি রাস্তাটি ১২ ফুট থেকে বর্ধিত করে ১৮ ফুট কার্পেটিংসহ ২৪ ফুট চওড়া করা হবে।

এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।



Source link

Exit mobile version