
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকের সঙ্গে ৮১২ কোটি টাকা দুর্নীতির চারটি মামলার আসামি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) প্রধান প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান। দুর্নীতির অভিযোগ থাকার পরও তাকে এক বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিতে যাচ্ছে সংস্থাটি। গত সোমবার বিকালে বেবিচক কার্যালয়ে বোর্ড সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এর আগে হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে হাবিবুর রহমানকে চাকরি থেকে কেন বরখাস্ত করা হবে না তা-ও জানতে চেয়েছেন আদালত। এ বিষয়ে করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও মুবিনা আশরাফের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারি করেছিলেন।
এদিকে দুর্নীতির অভিযোগ থাকার পরও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কর্মকর্তা- কর্মচারীরা ক্ষোভ জানিয়েছেন। হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে অনিয়মের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। টেন্ডারের কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ঘুষ নিয়েও কাজ না দেওয়া এবং হুমকির প্রেক্ষিতে ডিএমপির থানায় একাধিক জিডি রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি দুর্নীতির অভিযোগে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকীসহ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) ১৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। ওই মামলায় বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান ও সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আবদুল মালেকের নাম রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় প্রকৌশল বিভাগ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগে বলা হয়েছে, বেচিকের যত মেগা প্রকল্প রয়েছে, প্রায় সবগুলোতেই অর্থ-বাণিজ্য করেছেন তিনি। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিনা টেন্ডারে ১৬ কোটি টাকার কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন। কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন কাজে পিডি থাকার সময় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়মের প্রমাণ পায় মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি। পরে তাকে পিডির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
সিভিল সার্কেল-১-এর দায়িত্বে থাকাকালে দুর্নীতি ও খামখেয়ালিপনার প্রমাণ পাওয়ায় হাবিবুর রহমানকে বেবিচকের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব না দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু এসব নির্দেশনা উপেক্ষা করে অদৃশ্য কারণে তাকে একের পর এক মেগা প্রকল্পে পিডির দায়িত্ব দেওয়া হয়। এতসব অভিযোগ থাকার পরও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তিনি আওয়ামী লীগবিরোধী বলে প্রচার করতে থাকেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় দুদক তদন্ত অব্যাহত রেখেছে।