
বদলে গেছে কুষ্টিয়ার শেখ কামাল স্টেডিয়ামের নাম। নতুন নাম করণ করা হয়েছে বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদের নামে। সব কিছু প্রস্তুুত এখন উদ্ধোধনের অপেক্ষায় আধুনিক মানের এই স্টেডিয়ামটি। বড় বড় গর্ত আর এবড়ো-থেবড়ো পরিখার পরিবর্তে এখন সবুজ, মসৃণ গাসে শোভা পাচ্ছে কুষ্টিয়ার শহীদ আবার ফায়াদ ষ্টেডিয়াম। আন্তজার্তিক মানের ৭০ গজ রেজিমেন্টে ক্রীকেট মাঠের পাশাপাশি থাকছে ফুটবল খেলারও সব ধরণের ব্যবস্থা। গতকাল সরজমিনে কুষ্টিয়া আবরার ফাহাদ স্টেডিয়ামে গেলে দেখা যায়, রং তুলির আঁচড় চলছে। ভেতরে মঞ্চ নির্মাণের কাজ ও বাইরে বিশাল মঞ্চ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। নাম ফলক স্থাপন, ভিআইপি প্যাভিলিয়ন, প্রধান ফাটকের সামনে মাটি সমান, রং ও ধোয়া মুছার কাজ প্রায় শেষের দিকে।
কুষ্টিয়ার ক্রীড়াঙ্গনে এত আধুনিক মানের স্টেডিয়ামের উদ্ধোধনের কথা শুনে মাঠে ছুটে এসেছেন সাবেক ফুটবলার আলমগীর কবির হেলাল ও অভি তারা জানালো, ক্রীড়া চর্চার শুরুতে এমন স্টেডিয়াম পেলে আজ ক্রীড়াঙ্গনে আরও গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা রাখতে পারতাম। তবে আমরা আশাবাদি কুষ্টিয়ার ক্রীড়া মোদীরা এখান থেকে নতুন উদ্যোমে জাতীয় পর্যায়ে আরও বেশি বেশি অবদান রাখতে সক্ষম হবেন। এই স্টেডিয়ামটির পরিচর্যা এবং সংরক্ষণের উপর গুরুত্বাারোপ করে বলেন, যে কোন প্রতিষ্ঠানই, জিনিস যদি ব্যবহারের পর পরিচর্যা, পরিস্কার, পরিচ্ছন্ন না রাখা যায় সেটা দিনে দিনে ক্ষয়ে যায়, নষ্ট হয়। সৌন্দর্য্য হারায়। আমরা আশা করি জেলা ক্রীড়া পরিষদসহ এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণ এই ষ্টেডিয়ামটির নান্দনিক দৃষ্টি ভঙ্গি ধরে রাখতে সক্ষম হবেন। কথা হয় জেলা ক্রীড়া অফিসার ও ক্রীড়া পরিষদের সদস্য সচিব তানভির হোসেনের সাথে তিনি জানান, জুলাই-আগষ্টে বিপ্লবের পর কিছুদিন কাজ বন্ধ থেকেছে তখনও কিছু কিছু কাজ পরিষদসহ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদারকি করা হয়েছে। কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন কললে তিনি বলেন, কাজের মানের সাথে আমরা কোন আপোষ করিনি। যখনই কোন ঢালাই হয়েছে তখনই আমরা উপস্থিত থেকে সেটার মান যাচাই-বাছাই করেছি। তিনি বলেন, সৈকত এন্টারপ্রাইজ, শরিফ এন্ড সন্স ঠিকাদারী কোম্পানী নির্মাণ করেছে এই নান্দনিক স্টেডিয়ামের গ্যালারী আর খেলোয়াড়দের থাকা ও পাভলিয়নের কাজ করেছেন এস, এম ফাষ্ট ও রফিক এন্টারপ্রাইজ। এ স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৪০ কোটি টাকা। তিনি আরও বলেন, শেষ মুহুর্তে চলছে রং আর সাজ-সজ্জার কাজ। খুলনা বিভাগের মধ্যে এক মাঠে দুই খেলার এটিই প্রথম স্টেডিয়ামের। শহীদ আবরার ফাহাদের মা রোকেয়া খাতুনের সাথে তার বাড়ীতে পুত্রের নামে ষ্টেডিয়ামটির নামকরণের বিষয় নিয়ে কথা বলতে গেলে, তিনি কাঁন্না জড়িত কন্ঠে জানালেন, ওর বয়সতো অল্প ছিল। তার পরও ওর মধ্যে যে দেশ প্রেম ছিল যার জন্য ওঁকে প্রাণ দিতে হয়েছে। আমি আগে জানতাম না কি নাম ছিল ষ্টেডিয়ামের। কেননা আমিও একজন মা। আমারও সন্তান আছে, সন্তান গেছে। তার পরও কুষ্টিয়াসহ দেশের মানুষের আবরারের প্রতি ভালোবাসা মহান রাব্বুল আলামিন আমার আবরারকে জান্নাত বাসী করুন। তিনি বলেন, এই স্টেডিয়াম নামকরণের ফলে কুষ্টিয়াসহ দেশবাসীর কাছে চীর দিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে আমার আবরার।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া পরিষদের আহবায়ক মোঃ তৌফিকুর রহমান জানান, ৬ মার্চ স্টেডিয়ামটি উদ্ধোধন করবেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভুঁইয়া। কুষ্টিয়ার ক্রীড়া মোদীর জন্য একটি আধুনিক, আরামদায়ক ষ্টেডিয়াম এটি। সকল প্রস্তুুতি সম্পন্ন এখন মাননীয় উপদেষ্টার জন্য অপেক্ষার পালা।