বিদ্যমান কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে নতুন কমিটি ঘোষণা আরেকাংশের


আওয়ামী লীগের পতনের পর সম্মিলিতভাবে পদত্যাগ করেন বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটির নেতারা। এরপর নতুন কমিটি ঘোষণা করে অর্থোপেডিক চিকিৎসকদের একটি অংশ। তবে এতে সম্মত না হয়ে চিকিৎসকদের আরেকটি পক্ষ বিদ্যমান কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন হলে সংবাদ সম্মেলন করে ১৬১ সদস্য বিশিষ্ট নতুন এই কমিটি ঘোষণা করা হয়। নতুন কমিটিতে ডা. মো. ওয়াকিল আহমদকে আহ্বায়ক, ডা. সৈয়দ জাকির হোসেন বিপ্লবকে সাধারণ সম্পাদক ও ডা. মো. তাজুল ইসলাম রবিকে কোষাধ্যক্ষ করা হয়। এছাড়া কমিটির প্রধান উপদেষ্টা করা হয় অধ্যাপক ডা. রফিকুল কবীর লাবুকে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটি ১৯৭৯ সালে গঠিত হওয়ার পর থেকে ঐতিহাসিক পরিক্রমায় একটি মর্যাদাপূর্ণ পেশাজীবী সংগঠন হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। এই সংগঠনটি অর্থোপেডিক চিকিৎসা সেবায় অগ্রণী ভূমিকা রাখার পাশাপাশি চিকিৎসকদের দেশে-বিদেশে উন্নত প্রশিক্ষণ, বৈজ্ঞানিক কর্মশালা, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজনসহ নানাবিধ জনকল্যাণমূলক কাজ করে থাকে।

তারা আরও বলেন, জুলাই-আগষ্টের রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের পর সোসাইটির পূর্ববর্তী কমিটির সম্মিলিত পদত্যাগে একটি প্রশাসনিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়, যার ফলে সোসাইটির কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়ে। কিছুদিন আগে দেশের জাতীয়তাবাদী অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞদের সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে, কাউকে কিছু না জানিয়ে অল্প সংখ্যক চিকিৎসককে নিয়ে একটি মহল চর দখলের মতো ফ্যাসিস্ট কায়দায় একটি কমিটি ঘোষণা করে। সেই কমিটি সমগ্র অর্থোপেডিক চিকিৎসক সমাজ প্রত্যাখান করে এবং সঙ্গে সঙ্গেই এই ফ্যাসিস্ট কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে গণতন্ত্রকামী দেশসেরা চিকিৎসকদের নিয়ে, নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে ডা. ওয়াকিল আহমদ, ডা. সৈয়দ জাকির হোসেন বিপ্লব, ডা. তাজুল ইসলাম রবির নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে। নবগঠিত কমিটির পরিচিতি সভার দিন প্রত্যাখাত কমিটির নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য কর্মকাণ্ডের কারণে উদ্‌ভূত পরিস্থিতিতে সিনিয়র নেতৃবৃন্দের পরামর্শে ডিরেক্টর নিটোর এর অফিস কক্ষে এবং উভয় কমিটির উপস্থিতিতে বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটির সব কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। যার ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত আছে। যদিও সিংহভাগ অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ডা. ওয়াকিল-ডা. বিপ্লব-ডা রবি পরিষদের সঙ্গেই ছিলেন। তবু বৃহত্তর স্বার্থে আমরা এতে সম্মত হই।

বক্তারা যোগ করেন, কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে ওই ক্ষুদ্র গোষ্ঠী পুনরায় আলাপ আলোচনার তোয়াক্কা না করে এবং ওয়াদা বরখেলাপ করে একটি পরিবর্তিত ও অগ্রহণযোগ্য কমিটি ঘোষণা করে যেখানে ফ্যাসিবাদী চক্রের সম্পৃক্ততা স্পষ্ট। আমরা অর্থোপেডিক চিকিৎসক সমাজের বৃহত্তর অংশের পক্ষ থেকে এই অগণতান্ত্রিক ও বিভ্রান্তিকর কমিটিকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। একই সঙ্গে ডা. ওয়াকিল, ডা. বিপ্লব, ডা. রবির নেতৃত্বে ১৬১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করছি।

এ সময় সোসাইটির পক্ষ থেকে পাঁচ দফা কর্মপরিকল্পনাও তুলে ধরেন নতুন কমিটির নেতারা।

সেগুলো হলো-

১. দেশে শক্তিশালী চিকিৎসা ব্যবস্থা তৈরির অংশ হিসেবে জুনিয়র অর্থোপেডিক সার্জনদের দেশে বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে তাদের সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি।

২. উপজেলা জেলা ও বিভাগীয় শহরে কর্মরত অর্থোপেডিক সার্জনদের বিশ্বের উন্নত প্রযুক্তি ও আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থার সমপর্যায়ে প্রশিক্ষিত করার জন্য বিভাগীয় পর্যায়ে বৈজ্ঞানিক সম্মেলন ও ওয়ার্কশপের আয়োজন।

৩. একটি শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করে সোসাইটির সব সদস্যের অংশ নেওয়ার মাধ্যমে এবং গণতান্ত্রিক উপায়ে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে নির্বাচিত নেতৃত্বের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর।

৪. সোসাইটির কার্যক্রম গতিশীল করার জন্য বিভাগীয় পর্যায়ে অর্থোপেডিক সোসাইটির কমিটি গঠন করা।

৫. সোসাইটির সদস্যবৃন্দ/প্রতিনিধিবৃন্দের বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে যোগদান করে সোসাইটিকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সমুন্নত করা।

এএএম/এএমএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।



Source link

Exit mobile version