প্রতিরক্ষা-অবকাঠামো খাতে বিপুল বিনিয়োগে জার্মানির দল গুলোর মধ্যে ঐক্যমত

জার্মানির খ্রিস্টান ডেমোক্রেটিক পার্টি (CDU) এবং সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (SPD) একটি বড় সমঝোতা করেছে, যার লক্ষ্য দেশটির প্রতিরক্ষা ক্ষমতা ও অবকাঠামো উন্নয়নকে শক্তিশালী করা। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) এই দুই দলের নেতারা একটি বিশেষ তহবিল তৈরি করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন, যা জার্মানির প্রতিরক্ষা এবং অবকাঠামো খাতে শত শত বিলিয়ন ইউরোর বিনিয়োগ করবে।
এই সিদ্ধান্তের ভিত্তি ছিল জার্মানির সাংবিধানিক ঋণ সীমাবদ্ধতা (Debt brake) সংস্কারের প্রস্তাব, যা এখনো সরকারকে সীমিত পরিমাণে ঋণ নিতে বাধ্য করে। CDU এবং SPD এই সীমাবদ্ধতা পরিবর্তন করতে চায়, যাতে তারা জরুরি প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগ করতে পারে এবং জার্মানির অবকাঠামোকে উন্নত করতে পারে।
খ্রিস্টান ডেমোক্রেটিক দলের নেতা ফ্রিডরিখ মের্জ এই পরিকল্পনা ঘোষণার সময় বলেন, বিশ্বে বাড়তে থাকা ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা এবং মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির পরিবর্তনের কারণে জার্মানির প্রতিরক্ষা শক্তি বাড়ানো প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, “আমরা যে কোনও মূল্যেই আমাদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা শক্তিশালী করতে হবে।”
মের্জ আরও বলেন, এই প্রস্তাব অনুযায়ী, জার্মানি আগামী সপ্তাহে একটি আইন প্রস্তাব পেশ করবে, যার মাধ্যমে বর্তমান সাংবিধানিক ঋণ সীমাবদ্ধতা থেকে এক শতাংশ জিডিপির সমান অর্থ ছাড় দেওয়া হবে, যা প্রতিরক্ষা খাতে ব্যবহৃত হবে। এছাড়াও, সরকার ৫০০ বিলিয়ন ইউরো (প্রায় ৫৩০ বিলিয়ন ডলার) একটি বিশেষ তহবিলের জন্য বরাদ্দ করবে, যা দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতা বাড়াতে ব্যবহার করা হবে।
এই প্রস্তাবগুলির জন্য আগামী সপ্তাহে জার্মান পার্লামেন্টে ভোট হওয়ার কথা, তবে ২৫ মার্চের আগে এগুলি পাস হওয়া জরুরি, কারণ এই পদ্ধতিতে দুটি-তৃতীয়াংশ ভোটের সমর্থন প্রয়োজন। তবে, নতুন পার্লামেন্টে এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে বাঁধা হতে পারে, বিশেষ করে বামপন্থী দল এবং উগ্র-ডান দল আফডি থেকে।
ফেব্রুয়ারি ২৩ তারিখে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে খ্রিস্টান ডেমোক্রেটিকরা ২৮.৫ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হলেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। তবে, সোশ্যাল ডেমোক্রেটিকরা তাদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন ফলাফল ১৬.৪ শতাংশ পেয়েছে, তারপরও তারা কোয়ালিশন সরকারের অংশীদার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
উল্লেখযোগ্য যে, মের্জ এবং সোশ্যাল ডেমোক্রেটরা আশা করছেন, তারা এপ্রিলে ইস্টার ছুটির আগে সরকার গঠন করতে সক্ষম হবেন, কারণ তাদের সামনে জরুরি অর্থনৈতিক এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি