Facebook Bio Status

পাবনায় গণডাকাতি, যা বললেন ভুক্তভোগীরা


পাবনার সাঁথিয়ায় সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতির ঘটনায় দুই প্রবাসীর মাইক্রোবাস থেকে সোনাসহ অন্তত ২০ লাখ টাকার মালামাল লুট হয়েছে। এনিয়ে সাঁথিয়া থানায় লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এক প্রবাসী শরীফুলের বড়ভাই সামিউল হক মোবাইলে জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এ ঘটনায় আরও কয়েকটি গাড়ি থেকে একইভাবে মোবাইল ও অন্যান্য মূল্যবান মালামালসহ নগদ অর্থ ডাকাতি হয়েছে।

সামিউল জানান, বাহরাইন থেকে দেশে ফিরছিলেন শরিফুল ও তার বন্ধু উজ্জ্বল। উভয়ের বাড়ি পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামে। ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে মাইক্রোবাস যোগে বাসায় ফিরছিলেন তারা।

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পাবনা-সাঁথিয়া সড়কের ছেচানিয়া ব্রিজের পাশে আসতে সড়কে গাছ ফেলে গতিরোধ করে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মাইক্রোবাসে হামলা করে। এসময় তাদের বাধা দিলে সামিউলের ডান পায়ে ও উজ্জ্বলকে কুপিয়ে জখম করে। এরপর তাদের সঙ্গে থাকা স্বর্ণালংকার, মোবাইল ও নগদ টাকাসহ অন্তত ২০ লাখ টাকার ডাকাতি হয়।

আরও পড়ুন:

সামিউল বলেন, মাইক্রোতে আমরা পাঁচজন ছিলাম। আমাদের সঙ্গে বিদেশ থেকে আনা ৯০ গ্রাম স্বর্ণ, ওদের (প্রবাসী) একজনের কাছে ৫০৩ ও অন্যজনের কাছে ৩৩ দিনার ছিল। সবই নিয়ে গেছে ডাকাতরা। আমার কাছে নগদ ৪৮ হাজার ও আরেকজনের কাছে পাঁচ হাজার টাকা ছিল সবই নিয়ে গেছে। আমরা খালি হাতে ফিরেছি।

পাবনায় গণডাকাতি, যা বললেন ভুক্তভোগীরা

তিনি আরও বলেন, গাড়িতে যারা ডাকাতি করেছে তাদের সবার মুখ খোলা। অল্পবয়সী সব ছেলে। তাদের বয়স ২৫-৩০ বছর হবে। হাতে বিভিন্ন রকম দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের গাড়িতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। গাড়িতে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে দ্রুত দরজা খুলতে বলে। পরে সব লুটে নেয়। কাউকে গাড়ি থেকে নামতে দেয়নি। কথা না শুনলে মারধর করেছে।

একই ঘটনার শিকার সিএনজি ড্রাইভার রফিকুল ইসলাম। তিনি সাঁথিয়ার দক্ষিণ বোয়াইলমারির বাসিন্দা। ঘটনার বর্ণনায় তিনি বলেন, সাঁথিয়ার দিকে গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি সামনের ট্রাক আটকে আছে। ঘটনা বুঝে না উঠতেই মুখে মাস্ক পরা ও মাথায় কাপড় বাধা কয়েকজন এসে ছুরি চাকু ধরে সব দিতে বলল। আমার কাছে কিছু না থাকলেও যাত্রী তোফাজ্জলের কাছে থাকা কিছু টাকা ও মোবাইল নিয়ে আমার পেছনে থাকা প্রবাসীদের গাড়িতে আক্রমণ করলো। তখন তারা বলে- বিদেশি পার্টি চলে আইছে। এ কালু তাড়াতাড়ি এদিক আয়। এরপর তাদের অনেক মারধর করে সব নিয়ে গেছে।

এভাবে মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন গাড়িতে ডাকাতি চালানোর পর অনেকে বলতে লাগলেন কার কী ডাকাতি হয়েছে। পেছনে একটা হুজুরের গাড়ি ছিল। তার থেকে ৩০-৩২ হাজার ও ড্রাইভারের থেকে ২২০০ টাকা নিয়েছে। আরেক প্রাইভেটকার ওয়ালা বলল তাদের থেকে প্রায় ৬০ হাজার টাকার মত ডাকাতি করছে। দুই মোটরসাইকেল আরোহীকে কোপ মারছে। লাগছে কি না জানি না, লুকিং গ্লাসে আমি দেখলাম।

সিএনজির যাত্রী তোফাজ্জল বলেন, দুইপাশে ৪০-৫০টি গাড়ি আটকে ছিল। তবে কয়টি গাড়িতে ডাকাতি হয়েছে সেটি নিশ্চিতভাবে বলা মুশকিল। আমার অল্পকিছু টাকা ও মোবাইল নিয়েছে। সেই মোবাইলের বিষয়ে জিডি করে বের হলাম। নিরাপত্তা না থাকলে রাস্তাঘাটে চলা তো কঠিন। এসময় জননিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।

এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে পাবনা র‍্যাবের কোম্পানি কমান্ডার মোহাম্মদ ইলিয়াস খান বলেন, জননিরাপত্তা নিশ্চিতে আমরা অন্য এলাকায় তৎপর ছিলাম। এদিকে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে এ কাজের সঙ্গে যারাই জড়িত তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

র‍্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, কারা এগুলো করছে কিছু বলতে পারছি না। তবে চরমপন্থিদের বিষয়টিও আমরা উড়িয়ে দিচ্ছি না। তারাও জড়িত থাকতে পারে। আমরা সব বিষয়ই খতিয়ে দেখছি।

এ ব্যাপারে সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন। ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে একজন বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত চলছে। দ্রুতই ডাকাতদের আইনের আওতায় আনা হবে।

আলমগীর হোসাইন/আরএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।



Source link

Leave a Reply

Back to top button