পাকিস্তানে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ২১ জন নিহত

পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ার ডেরা ইসমাইল খান জেলার একটি সেনানিবাসে ভয়াবহ জোড়া আত্মঘাতী বোমা হামলা ঘটেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রোজা ভাঙার সময় এ হামলা চালানো হয়, যাতে ২১ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৬ জন হামলাকারী, আর বাকি ১৫ জন নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিক, যাদের মধ্যে ৪ জন শিশু ও ২ জন নারীও ছিলেন।
হামলাটি ঘটে ইফতারের সময়, যখন বিস্ফোরকভর্তি দুটি গাড়ি সেনানিবাসের ভেতরে প্রবেশ করে এবং পরপর দুটি বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের শক্তিশালী ধাক্কায় কাছের একটি মসজিদ ও একটি বাড়ির ছাদ ধসে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শী এক সেনা কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, ঘটনাটি পরিকল্পিতভাবে সেনানিবাস ও আশপাশের নিরীহ মানুষদের লক্ষ্য করে ঘটানো হয়েছে। হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল অস্থিতিশীলতা তৈরি করা।
পাকিস্তানের নিষিদ্ধ ঘোষিত রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) এই হামলার সঙ্গে যুক্ত। নিহত ৬ হামলাকারীর পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে, এবং তারা টিটিপির সদস্য ছিলেন। হামলার পরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করে। আহতদের দ্রুত স্থানীয় ডিস্ট্রিক্ট হেডকোয়ার্টার হাসপাতালে নেওয়া হয়, যেখানে চিকিৎসাধীন আরও ২৫ জনের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের এক মুখপাত্র।
এই হামলার আগের দিন সোমবার, খাইবার পাখতুনখোয়ার একটি মাদ্রাসায় আরেকটি আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটে। সে ঘটনায় এক শীর্ষ তালেবান নেতাসহ ৬ জন নিহত হন। ধারাবাহিক এসব হামলা পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে এবং সাধারণ মানুষকে আরও আতঙ্কিত করে তুলেছে।
এ ধরনের সহিংসতা শুধু নিরপরাধ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয় না, বরং গোটা অঞ্চলে অস্থিরতা বাড়িয়ে তোলে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, সরকারকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলোকে রুখে দেওয়া সম্ভব হয় এবং নিরীহ মানুষের জীবন রক্ষা করা যায়। তথ্যসূত্র : রয়টার্স