
পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট জাভেদ জারিফ। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তিনি তার পদত্যাগপত্রটি পোস্ট করেছেন।
তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, জাভেদ জারিফের নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই বিতর্ক চলছিল। অবশেষে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে সেই বিতর্কের অবসান ঘটালেন তিনি। জাভেদ জারিফ বলেন, বিচার বিভাগের প্রধানের ‘উপদেশ’ মেনে তিনি পদত্যাগ করেছেন।
ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে সমালোচকেরা তার বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করতে শুরু করে। সমালোচকদের মতে, জাভেদকে ভাইস প্রেসিডেন্ট নিয়োগ দেওয়ার মাধ্যমে সংবিধান লঙ্ঘিত হয়েছে। কারণ, তার সন্তানেরা যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেছে। তারা জন্মসূত্রে ওই দেশের নাগরিক।
জাভেদ জারিফ জানান, বিচার বিভাগীয় প্রধান গোলাম হোসেন মোহসেনি এজেই তাকে পদত্যাগ করতে উপদেশ দিয়েছেন। দেশের চলমান টালমাটাল পরিস্থিতিতে সরকারের ওপর আরও চার তৈরি করা থেকে বিরত থাকতে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় ফিরে যাওয়ার উপদেশ দেন বিভাগীয় প্রধান গোলাম হোসেন।
ইরানের সাবেক শীর্ষ এই কূটনীতিক লেখেন, আশা করছি, আমার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে জনগণের ইচ্ছা ও সরকারের সফলতার পথে বাধা দূর হবে।
এদিকে, জারিফের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রেসিডেন্টের দপ্তর তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সরকারের ওপর চাপ কমাতে তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হবে।
পদত্যাগপত্রে জাভেদ জারিফ আরও লিখেছেন, গত ৯ মাস ধরে তিনি প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে নিবেদিতভাবে কাজ করছেন। তবে এরমধ্যে গত ছয় মাস ধরে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে ‘জঘন্য অপমান, অপবাদ ও হুমকি সহ্য করতে হয়েছে।
জাভেদ জারিফ সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিত। নির্বাচনী প্রচারের সময় তিনি মাসুদ পেজেশকিয়ানের পক্ষে ভোট চেয়েছিলেন। পরে প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান তাকে সরকারের কৌশলগত পরামর্শদাতা হিসেবে বেছে নেন।
ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির আমলে আট বছর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন জাভেদ জারিফ। তিনি ২০১৫ সালে পশ্চিমাদের সঙ্গে করা ইরানের পরমাণু চুক্তিতে প্রধান ভূমিকা রেখেছিলেন।
তবে নিজের রাজনৈতিক জীবনের দীর্ঘ ৪০ বছরের মধ্যে গত ছায় মাস সবচেয়ে তিক্ত ছিল বলে পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করেছেন জাভেদ।
সূত্র: আনাদোলু
এসএএইচ