Status

নিরাপদ পানি মানুষের মৌলিক অধিকার

নিরাপদ পানযোগ্য ও ব্যবহারযোগ্য পানিকে নাগরিকের ‘মৌলিক অধিকার’ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।
রিটের শুনানি শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি আশরাফুর কামাল এবং বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলামের ডিভিশন বেঞ্চ এ রায় দেন। এ রায়কে ‘ঐতিহাসিক’ ও ‘যুগান্তকারী’ বলে আখ্যায়িত করেছেন রিট সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা। রায়ে আদালত স্পষ্টতই বলেছেন যে, সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপদ এবং বিশুদ্ধ পানযোগ্য পানি পাওয়া একটি মৌলিক অধিকার। নিরাপদ পানির অধিকার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। নিরাপদ পানযোগ্য পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য আদালত বেশ কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছেন। আগামী এক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক স্থান অর্থাৎ আদালত, ধর্মীয় উপাসনালয়, হাসপাতাল, রেল স্টেশন, হাট বাজার, এয়ারপোর্টসহ প্রত্যেক পাবলিক প্লেসে নিরাপদ পানযোগ্য পানি প্রত্যেক নাগরিকের জন্য নিশ্চিত করতে হবে। আগামী ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য নিরাপদ এবং পানযোগ্য পানি সাশ্রয়ী মূল্যে নিশ্চিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

২০২৬ সালের মধ্যে সব পাবলিক প্লেসে নিরাপদ বিনামূল্যে সরবরাহ পানির কি ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে-এই মর্মে একটি রিপোর্ট সরকারকে আদালতে দাখিল করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ রায় একটি চলমান আদেশ হিসেবে থাকবে। হাইকোর্ট ঘোষিত তুরাগ নদীর রায়, সোনারগাঁওয়ের রায় ও হাতিরঝিলের রায়ের নির্দেশনাগুলোও এই রায়ের নির্দেশনার অন্তর্ভুক্ত হবে। বাংলাদেশের যত পানির উৎস য়েছে, এই পানির উৎস যাতে ক্ষয়িষ্ণু না হয় অর্থাৎ পানি শুকিয়ে না যায়, পানি অনিরাপদ না হয়, পানি দূষিত না হয়, সেগুলোকে সংরক্ষিত করার জন্য সরকারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

দেশের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য নিরাপদ খাবার ও ব্যবহারযোগ্য পানি নিশ্চিত করতে ২০২০ সালে সুমোটো রোল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট।

সেখানে বাংলাদেশের সকল নাগরিকের জন্য নিরাপদ পানযোগ্য পানি সরবরাহ করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব কি না, অথবা এই নিরাপদ পানি পাওয়ার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণা করা যায় কি না, এই মর্মে রুল জারি করা হয়েছিল। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে গতকাল হাইকোর্ট উপরোক্ত রায় দেন।

রিটের রুল শুনানিতে আদালত সহায়ক আইনজীবী (অ্যামিকাস কিউরি) হিসেবে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনায় এই মামলায় কয়েকজন আইনজীবীকে এমিক্যাস কিউরি নিয়োগ দেয়া হয়।

আদালতের সহায়ক হিসেবে বক্তব্য উপস্থাপন করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী সিনিয়র অ্যাডভোকেট মঞ্জিল মোর্শেদ, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায় কবির প্ল্লব, মানবাধিকার সংগঠন বেলার পক্ষ থেকে মিনহাজুল ইসলাম মিনহাজ।

ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক রায়। রায়টি বাস্তবায়িত হলে দেশের বৃহত্তম জনগোষ্ঠী উপকৃত হবে ও পানিবাহিত রোগ থেকে মানুষ রক্ষা পাবে। আদালতে সরকারপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো: মঞ্জুর আলম, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মো: ওবায়দুর রহমান (তারেক), সোয়েব মাহমুদ ও আবুল হাসান।

Source link

Leave a Reply

Back to top button