Status

নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় না ভারতের তৃতীয়?

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নবম আসরে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে আজ মুখোমুখি হচ্ছে ভারত ও নিউজিল্যান্ড। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টায় টুর্নামেন্টের ফাইনালে মাঠে নামবে দু’দল। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে টানা তৃতীয়বার ফাইনালে উঠা ভারতের লক্ষ্য শিরোপা পুনরুদ্ধার করা।

অন্যদিকে ২৫ বছর ধরে টুর্নামেন্টের শিরোপা জিততে না পারার বন্ধ্যাত্ব ঘোচানোর চ্যালেঞ্জ নিউজিল্যান্ডের সামনে। চলতি আসরে একই গ্রুপে ছিল ভারত ও নিউজিল্যান্ড। ‘এ’ গ্রুপে তিন ম্যাচে পূর্ণ ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ সেরা হয়েই শেষ চারে নাম লেখায় ভারত। সমান ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হিসেবে সেমিতে জায়গা করে নেয় নিউজিল্যান্ড। একই গ্রুপে থাকায় টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বেই দেখা হয়েছিল দু’দলের। গ্রুপের শেষ ম্যাচে ভারত ৪৪ রানে হারিয়েছিল নিউজিল্যান্ডকে। ওই ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ২৪৯ রান তুলেছিল ভারত। মূলত কিউই পেসার ম্যাট হেনরির গতির সামনে আড়াইশ’র আগেই থামতে হয় ভারতকে। হেনরি ৮ ওভার বল করে ৪২ রান খরচায় ৫ উইকেট শিকার করেন। জবাবে ভারতের স্পিনার বরুণ চক্রবর্তীর স্পিন তোপে ২০৫ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নেমেই ৪২ রানে ৫ উইকেট শিকার করেছিলেন বরুণ। তবে তিনি হেনরির চেয়ে দুই ওভার বেশি বল করেছিলেন। এরপর প্রথম সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৪ উইকেটে হারিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো ফাইনালে উঠে ভারত। সবশেষ দুই আসরের (২০১৩ ও ২০১৭ সাল) ফাইনালে খেলেছিল টিম ইন্ডিয়া। ২০১৩ সালে বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ৫ রানে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মত শিরোপা ঘরে তুলে ভারত। এরপর ২০১৭ সালে ফাইনালে উঠলেও শিরোপা জিততে পারেনি রোহিত শর্মার দল। লন্ডনের ওই ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে ১৮০ রানের বড় ব্যবধানে হেরে শিরোপা হাতছাড়া করে ভারতীয়রা।

এর আগে ২০০২ সালে শ্রীলঙ্কাকে সঙ্গে নিয়ে যুগ্ম-চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা। বৃষ্টির কারণে ওই আসরের ফাইনাল পরিত্যক্ত হয়েছিল। এবার ভারতের সামনে শিরোপা পুনরুদ্ধারের মিশন। এ মিশনে সাফল্য পেয়ে তৃতীয় শিরোপা ঘরে তুলতে চান রোহিত শর্মারা। এবারের ফাইনাল নিয়ে ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা বলেন, ‘আমাদের সামনে আরও একটি ফাইনাল। টানা তিন বছর আইসিসির তিনটি ফাইনাল (ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি) খেলছি। ওয়ানডে বিশ্বকাপে ব্যর্থ হলেও টি-টোয়েন্টির শিরোপা জিতেছি আমরা। এবার লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা ঘরে তোলা। গত আসরে আমরা শিরোপা জিততে পারিনি। তাই এবার শিরোপা পুনরুদ্ধার করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।’ ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে বড় প্রতিপক্ষ মানছেন রোহিত। তার কথায়, ‘এবারের আসরে দারুণ পারফরমেন্স করেছে নিউজিল্যান্ড। গ্রুপ পর্ব ও সেমিফাইনালে ভালো খেলেছে তারা। বিশেষভাবে সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে লড়াই করার সুযোগই দেয়নি দলটি। ফাইনালে কিউইদের সমীহ করতেই হবে। আমাদের সর্তক থাকতে হবে এবং জিততে হলে ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে।’

এদিকে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ভারতের কাছে হারলেও দ্বিতীয় সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে উড়িয়ে দেয় নিউজিল্যান্ড। আগে ব্যাট করে রাচিন রাবিন্দ্রা ও কেন উইলিয়ামসনের জোড়া সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৬২ রানের পাহাড়ে চড়ে কিউইরা। জবাবে ডেভিড মিলারের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ৯ উইকেটে ৩১২ রান তুলতেই নির্ধারিত ওভার শেষ করে প্রোটিয়ারা। ফলে ৫০ রানে হেরে ফাইনালে খেলার স্বপ্নভঙ্গ হয় দক্ষিণ আফ্রিকার। আর শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে ভারতের সঙ্গি হয় নিউজিল্যান্ড। তবে গ্রুপ পর্বে ভারতের কাছে হারলেও ফাইনালে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদি নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার। ফাইনালের আগে গতকাল তিনি বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত ভালো ক্রিকেট খেলেছি। এই ধারা অব্যাহত রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। আমাদের লক্ষ্য শিরোপা জেতা। ভারতকে হারাতে হলে তাদের চেয়েও ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। যেটা খেলতে শতভাগ প্রস্তুত আমরা।’

নিউজিল্যান্ড সবশেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জিতেছিল ২০০০ সালে। কেনিয়ার নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত ওই আসরের ফাইনালে ক্রিস কেয়ার্নসের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ভারতকে ৪ উইকেটে হারিয়েছিল কিউইরা। ১১৩ বলে অপরাজিত ১০২ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলেছিলেন কেয়ার্নস। ২০০৯ সালেও এই টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেছিল কিউইরা। দক্ষিণ আফ্রিকার সেঞ্চুরিয়ানে অনুষ্ঠিত ওই ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৬ উইকেটে হেরে যায় নিউজিল্যান্ড। ১০৫ রানের দারুণ ইনিংস খেলে নিউজিল্যান্ডকে শিরোপা বঞ্চিত করেন অস্ট্রেলিয়ার শেন ওয়াটসন। তাই ২৫ বছর ধরে শিরোপা জিততে না পারার বন্ধ্যাত্ব ঘোচাতে চায় কিউইরা। স্যান্টনার বলেন, ‘আমরা ২৫ বছর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জিততে পারিনি। এবার ট্রফি জয়ের সেরা সুযোগ আমাদের সামনে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। দলের সবাই শিরোপার জন্য মুখিয়ে আছে। আশা করি সাফল্য নিয়েই মাঠ ছাড়তে পারবো।’

ওয়ানডে ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত ১১৯ বার মুখোমুখি হয়েছে ভারত ও নিউজিল্যান্ড। এর মধ্যে ভারত ৬১ ম্যাচ জিতেছে এবং নিউজিল্যান্ডের জয় ৫০ ম্যাচে। ১ ম্যাচ টাই ও ৭টি পরিত্যক্ত হয়।

Source link

Leave a Reply

Back to top button