
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোর্শেদ আহমেদের (৫৮) বিরুদ্ধে এক নারী উদ্যোক্তাকে সরাসরি ও ফোনে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই কর্মকর্তার বাসভবনে গোপনে একান্তে সাক্ষাৎ না করলে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সব সুবিধা থেকে বঞ্চিত এবং ঋণ পাস না করার হুমকি দিয়েছেন।
এ ঘটনায় বুধবার (৫ মার্চ) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই নারী উদ্যোক্তা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর কুমারখালী উপজেলাতে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন মোর্শেদ আহমেদ। তিনি কুষ্টিয়া ডিসি কোর্টের সামনে সাদ্দাম বাজার এলাকার বাসিন্দা। এর আগে তিনি পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেখানেও একাধিক নারীকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। ২০২৪ সালের ২৪ মার্চ থানায় এক নারী ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ করেছিলেন।
বুধবার লিখিত অভিযোগে ওই নারী উদ্যোক্তা বলেন, সাত বছর ধরে উদ্যোক্তা হিসেবে সুনামের সঙ্গে কাজ করছি। বর্তমানে আমার কারখানায় প্রায় ৫০০ জন নারী কাজ করছেন। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ২০২৪ সালে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে শ্রেষ্ঠ আত্মকর্মী পুরস্কার এবং মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে শ্রেষ্ঠ জয়িতার পুরস্কার পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, গত ১০ ফেব্রুয়ারি কুমারখালী যুব উন্নয়ন কার্যালয়ে বেসিক কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে উদ্বোধনের নিমন্ত্রণ জানাতে কর্মকর্তা মোর্শেদ আহমেদের কার্যালয়ে সালাম বিনিময় করতে গিয়েছিলাম। তখন তিনি অশোভন আচরণ করেন। বোরকা ও হিজাব খুলে কথা বলতে বলেন। একপর্যায়ে আমাকে সরাসরি অনৈতিক প্রস্তাব দেন। রাজি না হলে লাগাতার ফোন দিয়ে বাসায় ডাকছেন এবং অনৈতিক প্রস্তাব ও বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। এসবের কয়েকটি কল রেকর্ড আমার কাছে আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাবনার ঈশ্বরদীতেও একাধিক নারীকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছিলেন মোর্শেদ আহমেদ। সেখানে ঝাঁড়ু মিছিল ও থানায় লিখিত অভিযোগের ঘটনা ঘটেছিল বলে জানিয়েছেন ঘটনার শিকার ওই নারী উদ্যোক্তা। তিনি বলেন, বিষয়টি ধামাচাপা দিতে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন লোকজন ও নেতাদের আমার বাড়িতে পাঠাচ্ছেন। ঠিকানা বদল হলেও কর্মকর্তার চরিত্র বদলায়নি। আমি তার উপযুক্ত বিচার চাই।
এ ঘটনার বিষয়ে জানতে বুধবার বিকেলে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে গেলে প্রতিবেদককে দেখে কর্মকর্তা মোর্শেদ আহমেদ ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ শুরু করেন। এসময় তিনি বলেন, ‘সৌজন্যমূলক আচরণ হিসেবে ওই নারীকে উদ্যোক্তা ফোন করে বাসায় ডাকা হয়েছে। কোনো কুপ্রস্তাব দেওয়া হয়নি। আর ঈশ্বরদীর ঘটনাটি তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগটি দেখতে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। কয়েকটি ফোনকল পাওয়া গেছে। সবকিছু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আল-মামুন সাগর/এসআর/জেআইএম