
ব্যারিস্টার নিহাদ কবির একজন বাংলাদেশি নারী ব্যবসায়ী, আইনজীবী এবং শিক্ষিকা। ১৯৮৮ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে বিএ ডিগ্রি অর্জন করে ওই বছরই তিনি ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের বারে যোগদান করেন। ইংল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে ফেরার পর যোগদান করেন সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের চেম্বারসে।
বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট নারী আইনজীবী হিসেবে সুপরিচিত নিহাদ ১৯৯০ সালে একজন আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন এবং ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। একই বছর তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন।
মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সাবেক সভাপতি নিহাদ কবির কাদেরপুর টি, ব্র্যাক ব্যাংক, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার এবং পল্লী কর্ম-সহায়কের মতো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ল’ ফার্ম সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস চেম্বারসের সিনিয়র পার্টনার নিহাদ কবির সম্প্রতি জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন। পেশাগত জীবনে নারীরা কী ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন সেসব তথ্য তুলে ধরার পাশাপাশি পিছিয়ে পড়া নারীরা কীভাবে সফলতা অর্জন করেতে পারেন দিয়েছেন সেই পরামর্শও। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন জাগো নিউজের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সাঈদ শিপন।
জাগো নিউজ : আপনি একজন সফল নারী ব্যবসায়ী, আইনজীবী এবং শিক্ষাবিদ। পেশাগত জীবনে কীভাবে পদার্পণ করেন?
নিহাদ কবির : বাংলাদেশে সফল নারী ব্যবসায়ী, আইনজীবী এবং শিক্ষাবিদরা পেশাগত জীবনে বিভিন্ন পথে আমার মতো অনেকেই পদার্পণ করেন। তাদের মধ্যে অনেকেই আমার মতো উচ্চশিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু করেন। উদাহরণস্বরূপ, কেউ কেউ আইন বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে তারা ব্যবসা ও শিক্ষাক্ষেত্রে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেন। আবার কেউ কেউ ব্যবসায় প্রশাসন বা অর্থনীতিতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে প্রবেশ করেন।
আরও পড়ুন
এছাড়াও, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির (আইসিটি) ব্যবহার নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে সহায়তা করছে, যা আমাদের নারীদের পেশাগত জীবনে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। সফল নারী পেশাজীবীদের এ পথচলা প্রমাণ করে যে, উচ্চশিক্ষা, পেশাগত দক্ষতা এবং প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে নারীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করতে পারেন।
বাংলাদেশে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা বাড়লেও তা এখনো পুরুষের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। এর পেছনে আইনগত, প্রতিষ্ঠানিক এবং সামাজিক মানসিকতার বাধাগুলো বড় হয়ে দেখা দেয়।- নিহাদ কবির
আমি আমার মা-বাবার প্রেরণায় প্রথমত আইন পেশায় নিয়োজিত হই এবং এটিই আমার প্রধান পরিচয়। প্রখ্যাত আইনজীবী সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ এবং মাহমুদুল ইসলামের হাত ধরে এ পেশায় হাতখড়ি। পারিবারিকভাবে চা-বাগানের মালিকানা সূত্রে ছোটবেলা থেকেই ব্যবসায়ের সঙ্গে পরিচয়। পরবর্তীকালে মা লায়লা কবিরের পদাঙ্ক অনুসরণ করে মেট্রোপলিটন চেম্বারে টানা পাঁচ বছর সভাপতির দায়িত্বে ছিলাম।
বাবা আহমদুল কবির পাকিস্তান আমলে উচ্চপদস্থ সরকারি চাকরি ছেড়ে ব্যবসায় নেমে পড়েন। তিনি সত্যিকার অর্থে একজন উদ্যোক্তা ছিলেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে প্রথম কিছু শিল্প গড়ে তোলেন, এসেন্সিয়াল ইন্ডাস্ট্রিজ নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে প্রথম পেনসিল ফ্যাক্টরি স্থাপন করেন। বেঙ্গল বেভারেজ কোম্পানি ও ইস্টার্ন মার্কেন্টাইল ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় অংশ নেন। তাদের উদাহরণই জীবনের পাথেয়। এটিকেই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় মেন্টরশিপ বলা যায় এবং আমার অনেক বড় সম্পদ।
জাগো নিউজ : ব্যবসার শুরুর দিকে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছেন?
নিহাদ কবির : নারী উদ্যোক্তারা ব্যবসা শুরু করার সময় বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন। কিন্তু বংশগতভাবে ব্যবসা থাকায় সেই চ্যালেঞ্জগুলো আমাকে সেভাবে মোকাবিলা করতে হয়নি। তবে বহু চেষ্টা সত্ত্বেও নারীরা এই চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন এখনো হন, যা দুঃখজনক।
>>পুঁজি বা অর্থের অভাব: অনেক নারী উদ্যোক্তা পর্যাপ্ত পুঁজি ছাড়াই ব্যবসা শুরু করতে বাধ্য হন, যা তাদের উদ্যোগের স্থায়িত্ব ও সম্প্রসারণে বাধা সৃষ্টি করে।
>> পণ্যের বাজারজাতকরণে সমস্যা: নারী উদ্যোক্তাদের জন্য তাদের পণ্য বা সেবা বাজারে পৌঁছানো একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে করপোরেট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে তারা সমস্যার সম্মুখীন হন।
>> প্রশিক্ষণ ও পরিকল্পনার অভাব: সঠিক প্রশিক্ষণ ও কার্যকর পরিকল্পনার অভাবে অনেক নারী উদ্যোক্তা ব্যবসায় কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জনে ব্যর্থ হন।
>> প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও বাজার বিশ্লেষণের অভাব: আধুনিক প্রযুক্তি ও বাজার বিশ্লেষণের অভাবে নারী উদ্যোক্তারা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়েন।
>> সামাজিক ও পারিবারিক প্রতিবন্ধকতা: অনেক ক্ষেত্রে সামাজিক ও পারিবারিক বাধা নারী উদ্যোক্তাদের এগিয়ে যাওয়ার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।
এখনো লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য ও সামাজিক প্রতিকূলতা রয়েছে, যা নারীদের পেশাগত উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করে। সম্প্রতি খবরে এরকম কয়েকটি ন্যক্কারজনক ঘটনা আমরা দেখেছি।- নিহাদ কবির
এই চ্যালেঞ্জগুলো সত্ত্বেও নারীরা উদ্যম পরিশ্রমের মাধ্যমে ব্যবসায় সফলতা অর্জন করছেন এবং দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছেন।
জাগো নিউজ : আমাদের দেশে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা এখনো অনেক কম। এর পেছনে কী কারণ থাকতে পারে? কীভাবে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা বাড়ানো যায়?
নিহাদ কবির : বাংলাদেশে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা বাড়লেও তা এখনো পুরুষের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। এর পেছনে আইনগত, প্রতিষ্ঠানিক এবং সামাজিক মানসিকতার বাধাগুলো বড় হয়ে দেখা দেয়।
নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা কম থাকার কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে-
>> সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বাধা: লিঙ্গবৈষম্য, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সীমাবদ্ধতা নারী উদ্যোক্তা হওয়ার পথে বড় চ্যালেঞ্জ।
>> আর্থিক প্রতিবন্ধকতা: নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পুঁজি হিসেবে ঋণ বা অনুদান পাওয়া সহজ নয়।
>> প্রশিক্ষণ ও দক্ষতার অভাব: ব্যবসায়িক প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা অর্জনের জন্য বাংলাদেশের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সীমিত, যা সফলভাবে ব্যবসা শুরু ও পরিচালনার ক্ষেত্রে বাধা।
>> নেটওয়ার্কিং ও মেন্টরশিপের অভাব: অধিকাংশ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান পুরুষকেন্দ্রিক হওয়ায় নারীদের নেটওয়ার্কিং ও মেন্টরশিপের সুযোগ সীমিত, যা উদ্যোক্তা হওয়ার পথে অন্তরায়।
>> শিক্ষার অভাব: গ্রামাঞ্চলে নারীদের শিক্ষার হার কম, যা উদ্যোক্তা হওয়ার পথে বড় বাধা।
মনে রাখা প্রয়োজন—নারীরা শক্তি, সাহস আর সম্ভাবনার প্রতীক। একটু সহায়তা আর দৃঢ় মানসিকতায় তারা আকাশ ছুঁতে পারে।- নিহাদ কবির
নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা বাড়ানোর উপায়-
>> সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি: লিঙ্গবৈষম্য দূর করতে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সচেতনতা বাড়াতে হবে।
>> আর্থিক সহায়তা প্রদান: নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ ও অনুদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
>> প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন: নারীদের জন্য ব্যবসায়িক প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি বাড়াতে হবে।
>> নেটওয়ার্কিং ও মেন্টরশিপ: নারী উদ্যোক্তাদের জন্য নেটওয়ার্কিং ও মেন্টরশিপের সুযোগ বাড়াতে হবে।
>> শিক্ষার প্রসার: গ্রামাঞ্চলে নারীদের শিক্ষার সুযোগ বাড়াতে হবে।
এসব পদক্ষেপ গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা যেমন বাড়বে, একই সঙ্গে তারা দেশের অর্থনীতিতে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে আমি মনে করি।
জাগো নিউজ : আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে কতোটা উপযুক্ত?
নিহাদ কবির : বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা সামগ্রিকভাবে উন্নতির দিকে এগোলেও শুধু নারী নয়, উদ্যোক্তা তৈরিতেই এখনো প্রচুর সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় এখনো মুখস্থ বিদ্যার প্রাধান্য রয়েছে। কোনো একটি বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ দিক চিহ্নিত করা, সমস্যা চিহ্নিত ও বিশ্লেষণ করে সমাধান করা, মৌলিক চিন্তা করা, এগুলোকে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় মোটেই প্রাধান্য দেওয়া হয় না। কমিউনিকেশন স্কিল বা প্রবলেম সলভিংয়ের দিকে দৃষ্টি নেই। পরীক্ষানির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা আজকের যুগে অন্তত ব্যবসার ক্ষেত্রে কোনো মূল্য সংযোজন করে না।
আরও পড়ুন
জাগো নিউজ : দেশের পিছিয়ে পড়া নারীদের জন্য আপনার কী পরামর্শ থাকবে?
নিহাদ কবির : পিছিয়ে পড়া নারীদের সামনে এগিয়ে নিতে নিজের অভিজ্ঞতা থেকে সামান্য কিছু যা শিখেছি বা দেখেছি, তা ভাগ করে নিতে পারি। যেগুলো সেসব নারীর জীবনে হয়তো ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।
শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন-
>> বুনিয়াদি শিক্ষা: যদি প্রাথমিক বা মাধ্যমিক শিক্ষার ঘাটতি থাকে, স্থানীয় শিক্ষাকেন্দ্র বা এনজিওর মাধ্যমে তা পূরণ করা যেতে পারে।
>> কারিগরি ও ডিজিটাল প্রশিক্ষণ: ফ্রিল্যান্সিং বা ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা গেলে ঘরে বসেই আয়ের সুযোগ তৈরি হতে পারে। কৃষি কিন্তু আমাদের দেশে অনেকাংশে নারীশ্রম নির্ভর। এখানে নারীদের দক্ষতা বৃদ্ধির অনেক সুযোগ আছে।
মানসিক দৃঢ়তা ও আত্মবিশ্বাস-
>> নিজেকে ভালোবাসা ও সম্মান করা: আত্মবিশ্বাস থাকলে যেকোনো প্রতিকূলতা মোকাবিলা করা সহজ হয়। নিজের স্বপ্নকে যতটা সম্ভব বাস্তবায়নের চেষ্টা করতে হবে, উজান স্রোত ঠেলেই সামনে এগোতে হবে।
>> ইতিবাচক নেটওয়ার্ক: অন্য সফল নারীদের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করে অনুপ্রেরণা নেওয়া যেতে পারে।
আত্মবিশ্বাস থাকলে যেকোনো প্রতিকূলতা মোকাবিলা করা সহজ হয়। নিজের স্বপ্নকে যতটা সম্ভব বাস্তবায়নের চেষ্টা করতে হবে, উজান স্রোত ঠেলেই সামনে এগোতে হবে।- নিহাদ কবির
সামাজিক সচেতনতা-
>> অধিকার জানা: নারীদের নিজস্ব অধিকার সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি— যেমন আইনি সুরক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও মাতৃত্বকালীন সুবিধা ইত্যাদি।
>> পারিবারিক সহায়তা: পরিবারের সদস্যদের সমর্থন পেলে নারীরা সহজেই এগিয়ে যেতে পারেন।
পরামর্শ-
>> ছোট ছোট পদক্ষেপ নিন, কিন্তু থামবেন না।
>> ব্যর্থতা এলেও নতুন করে শুরু করুন—প্রতিটি চেষ্টাই শেখার সুযোগ দেয়।
>> অন্য নারীদের পাশে দাঁড়ান, কারণ নারীরা একে অন্যকে শক্তিশালী করতে পারে।
একটি কথা মনে রাখা প্রয়োজন—নারীরা শক্তি, সাহস আর সম্ভাবনার প্রতীক। একটু সহায়তা আর দৃঢ় মানসিকতায় তারা আকাশ ছুঁতে পারে।
জাগো নিউজ : আপনি যখন পেশাগত জীবনে পদার্পণ করেন সে সময় নারীদের জন্য পরিবেশ কেমন ছিল? আপনার দৃষ্টিতে বর্তমান সময় এবং তখনকার মধ্যে মিল ও পার্থক্য কি কি?
নিহাদ কবির : বাংলাদেশে নারীদের পেশাগত পরিবেশ গত কয়েক দশকে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছে। আমাদের পেশাগত জীবনের শুরুর সময়ে নারীদের জন্য কর্মপরিবেশ ছিল বেশ চ্যালেঞ্জিং। সে সময়ে নারীদের কর্মজীবনে অংশগ্রহণ সীমিত ছিল এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বাধা তাদের পেশাগত উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতো। নারীদের প্রতি বৈষম্য, কটুক্তি ও যৌন হয়রানির মতো আচরণ তাদের সম্মান ও সম্ভাবনার প্রতি হুমকি সৃষ্টি করতো।
বর্তমান সময়ে পরিবর্তন-
>> কর্মসংস্থানে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি: বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে, যা অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
>> নীতিগত উন্নয়ন: সরকার ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন নীতি ও আইন প্রণয়ন করেছে, যা নারীদের পেশাগত জীবনে নিরাপত্তা ও সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে সহায়তা করছে।
তবে এখনো কিছু চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান-
>> সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বাধা: এখনো লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য ও সামাজিক প্রতিকূলতা রয়েছে, যা নারীদের পেশাগত উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করে। সম্প্রতি খবরে এরকম কয়েকটি ন্যক্কারজনক ঘটনা আমরা দেখেছি।
>> কর্মপরিবেশে হয়রানি: কর্মক্ষেত্রে নারীদের প্রতি হয়রানি ও অসম্মানজনক আচরণ এখনো একটি বড় সমস্যা, যা তাদের মানসিক ও পেশাগত উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
সার্বিকভাবে, নারীদের পেশাগত পরিবেশে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। তবে আরও উন্নতির জন্য সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন, নীতিমালার কার্যকর বাস্তবায়ন এবং সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।
এমএএস/এমকেআর/এমএস