Facebook Bio Status

দূষণ থেকে ময়মনসিংহের বানার নদী রক্ষায় হাইকোর্টের রুল


দূষণ থেকে ময়মনসিংহের বানার (পুরাতন ব্রহ্মপুত্র) নদী রক্ষায় রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। বিবাদীর ব্যর্থতা, সংবিধান, প্রচলিত আইন ও আদালতের রায়ের লঙ্ঘন বিধায় তা কেন বিধি-বহির্ভূত, বেআইনি ও জনস্বার্থবিরোধী ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে এই রুল জারি করা হয়।

একই সঙ্গে বানার নদীকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা ও নিয়ন্ত্রণ করার সিএস ম্যাপ ও মূল প্রবাহ অনুযায়ী নদীর সীমানা নির্ধারণ করে যথাযথ সংরক্ষণ ও দূষণ প্রতিরোধ করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না রুলে তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।

রুল জারির পাশাপাশি আদালত জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ময়মনসিংহ জেলার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালককে আইন অনুযায়ী তদন্ত করে নদী দূষণকারীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত করার জন্যে নির্দেশে দিয়েছেন।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) কর্তৃক জনস্বার্থে দায়ের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে রোববার (২ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে এদিন বেলার পক্ষে আজ মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আশরাফ আলী এবং তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট রুমানা শারমিন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জনাব তানিম খান।

ময়মনসিংহের ত্রিশালের ডেসডেন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অনতিবিলম্বে কারখানার বর্জ্য নদীতে ফেলা বন্ধ করার এবং বানার নদীর পার্শ্ববর্তী সব শিল্প-কারখানাসমূহে ইটিপিসহ দূষণ নিয়ন্ত্রক যন্ত্রাদি চালু আছে কি না তা ২৪ ঘণ্টা মনিটরিং করার জন্য জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ময়মনসিংহ জেলার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

একই সঙ্গে আদালতের আদেশ প্রতিপালন করে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আগামী ৩ মাসের মধ্যে দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার বিবাদীরা হলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব; ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব; জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান; পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক; বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক; ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপার (এসপি) ; ময়মনসিংহের ত্রিশালের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা; ময়মনসিংহের পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এবং ময়মনসিংহের ত্রিশালের ডেসডেন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

জানা গেছে, জামালপুর জেলার সদর উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নে পুরোনো ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে উৎপন্ন হয়ে ৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ বানার আপার নদী, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার আমিরবাড়ি ইউনিয়নে খিরো (ত্রিশাল) নদীতে পতিত হয়েছে। ৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বানার লোয়ার নদী, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার অন্তর্গত টেংগাবা ইউনিয়নে পুরোনো ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে উৎপন্ন হয়ে গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নে শীতলক্ষ্যা নদীতে পতিত হয়েছে। দেশের ৫৬টি দূষিত নদীর মধ্যে বানার লোয়ার নদী অন্যতম।

শিল্পবর্জ্যরে দূষণে এ নদীর পানিতে ডিও, বিওডি,সিওডির মাত্রা পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালায় বর্ণিত গ্রহণযোগ্য মানমাত্রার বাইরে। অব্যাহত রাসায়নিক বর্জ্যের দূষণে বানার লোয়ার নদী জলজ প্রাণী ও মাছশূন্য হয়ে পড়েছে। নদীর পানি দূষিত ও দুর্গন্ধযুক্ত হওয়ায় এর পানি ব্যবহারকারীরা পড়ছেন মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে এবং আক্রান্ত হচ্ছেন চর্মরোগসহ নানা অসুখে।

এফএইচ/এমআইএইচএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।



Source link

Back to top button