দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজমুক্ত দেশ গঠন করতে চায় জামায়াত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজমুক্ত বাংলাদেশ গঠন করতে চায় উল্লেখ করে দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, সৎ, যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্বের অভাবে বাংলাদেশ বারবার পথ হারাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে রাজধানীর ইস্কাটনের ঢাকা লেডিস ক্লাবে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিল পূর্বক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীতে রয়েছে সৎ, যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্ব। যার দৃষ্টান্ত জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ও সেক্রেটারি জেনারেল শহীদ আলী আহসান মুজাহিদ। যেই দলের আমির ও সেক্রেটারি তিনটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেও দুই পয়সা দুর্নীতি করেনি। যে দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজের অভিযোগ নেই। সেই দলই পারবে জাতির প্রত্যাশিত একটি কল্যাণ ও মানবিক রাষ্ট্র গঠন করতে। জনগণ যদি জামায়াতে ইসলামকে একবার সেই সুযোগ দেয়, জামায়াত একটি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ জাতিকে উপহার দেবে।
এসময় তিনি আরও বলেন, জাতি হিসেবে আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা বৃটিশদের ২০০ বছরের শাসন-শোষণ থেকে মুক্ত হয়েও স্বাধীনতা পাইনি। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের শাসন-শোষণ থেকে মুক্ত হয়েও স্বাধীনতা পাইনি। সবশেষ ২০২৪ সালে ২য় স্বাধীনতা যেই ঐক্যের ভিত্তিতে অর্জন হয়েছে সেই স্বাধীনতাও ৫/৬ মাসের ব্যবধানে হুমকির মুখে পড়তে যাচ্ছে বলে মনে হয়। যেই ঐক্যের মাধ্যমে আমরা ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছি, সেই ঐক্যে ফাটল দেখা যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, দেশ ও জাতির স্বার্থে সব দলকে বুঝতে হবে ঐক্যবদ্ধ জাতিকে পরাজিত করা যায় না।
তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে সাংবাদিকদের ভূমিকা প্রশংসনীয়। সাংবাদিকদের নৈতিক দায়িত্ব বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করা। সাদাকে সাদা বলতে হবে, কালোকে কালো বলতে হবে। ন্যায়কে ন্যায় এবং অন্যায়কে অন্যায় হিসেবে তুলে ধরতে হবে। পক্ষপাতিত্বের সাংবাদিকতা পরিহার করতে হবে।
তিনি নতুন বাংলাদেশ গঠনে জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গীকার বাস্তবায়নে সাংবাদিকদের সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জামায়াতে ইসলামী প্রতি বছর সাংবাদিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিলের আয়োজনের মাধ্যমে পরস্পর সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করে। কিন্তু বিগত সময়ে আওয়ামী লীগ আমাদের এসব আয়োজন করতে দেয়নি। আমরা ভিন্ন নামে ভিন্ন ব্যানারে এসব অনুষ্ঠান করতে হয়েছে।
এসময় তিনি আরও বলেন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ স্লোগান দিয়ে হবে না, মিছিল করে হবে না। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবার ওপরে দেশ এই চেতনায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে হবে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দৈনিক সংগ্রামের সাবেক সম্পাদক আবুল আসাদ, দৈনিক নয়া দিগন্তের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সালাহউদ্দিন বাবর, দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আজম মীর শহিদুল আহসান, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্লাহ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, দ্য নিউ নেশনের সাবেক সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি এবং প্রচার ও মিডিয়া বিভাগীয় সম্পাদক মুহাম্মদ দেলাওয়ার হোসেন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দ্য নিউ নেশনের সম্পাদক মোকাররম হোসেন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভুঁইয়া, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, ঢাকা রিপোর্টারর্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকন, ঢাকা রিপোর্টারর্স ইউনিটির সহ-সভাপতি গাজী আনোয়ার, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক মহাসচিব এম. এ আজিজ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এলাহি নেওয়াজ খান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুন্সি আব্দুল মান্নান, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ. কে. এম মহসীন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসেন, বাংলা নিউজ টুয়েন্টিফোরের সম্পাদক লুৎফর হরমান হিমেলসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাত শতাধিক সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।
এএএম/এমআইএইচএস