
বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে রিভিউ শুনানির জন্য আগামী ৮ মে তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আপিল বিভাগের আদালত রাজনৈতিক দল এবং ছয় ব্যক্তির করা চারটি আবেদনের শুনানি গ্রহণ করবে। এটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায়ের পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।
রোববার (২ মার্চ) আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। গত ১১ ফেব্রুয়ারি তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে রাজনৈতিক দল ও ছয় ব্যক্তির করা আবেদনের শুনানি মুলতবি করা হয়েছিল। এরপর নতুন তারিখ হিসেবে ৮ মে নির্ধারণ করা হয়েছে। এই শুনানির মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
উল্লেখযোগ্য যে, ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হলে এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে। এরপর ২০০৫ সালে আপিল আদালতে এ রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করা হয়।
২০১১ সালে সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে এবং ৩০ জুন, ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনী আইন জাতীয় সংসদে পাস হয়। পরবর্তী সময়ে ৩ জুলাই এই সংশোধনী সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়। এরপর, কিছু ব্যক্তি এবং রাজনৈতিক দল পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেছেন।
তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা হলেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভুঁইয়া, এবং জাহরা রহমান। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারও এই আবেদন করেছেন।
এখন, ৮ মে তারিখে অনুষ্ঠিত রিভিউ শুনানির পর, এই ঐতিহাসিক বিষয়টির ওপর আদালতের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার ভবিষ্যত পরিষ্কার হতে পারে। এটি দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে নতুন আলোচনার জন্ম দিতে পারে।