ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে গতিসীমা বাড়লো

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে সর্বোচ্চ গতিসীমা ৬০ থেকে বাড়িয়ে ৮০ কিলোমিটার করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে এই গতিসীমা কার্যকর করা হয়েছে। বিষয়টি জানিয়েছেন ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) কোম্পানি লিমিটেডের যান চলাচল, সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক ক্যাপ্টেন (অব.) হাসিব হাসান খান। গতকাল শনিবার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে বৈদ্যুতিক সাইনবোর্ডে যানবাহন চলাচলের নতুন গতিসীমায় ৮০ কিলোমিটার লেখা সংকেত দেখা গেছে। এছাড়া সড়ক বরাবর সামনে বৈদ্যুতিক বোর্ডে ৮০ কিলোমিটার গতিসীমা মেনে চলতেও নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। এর আগে, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে বেপরোয়াভাবে চালানো গাড়িগুলোকে বাগে আনতে নীতিমালা তৈরি করে কর্তৃপক্ষ। সে অনুযায়ী সর্বোচ্চ গতিসীমা ৮০ কিলোমিটার বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
হাসিব হাসান খান বলেন, গত দেড় বছর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পরিচালনা করার পর আমরা দেখলাম নির্ধারিত গতি ৬০ কিলোমিটার কম। এক্সপ্রেসওয়ের ডিজাইন সুন্দর, ওয়াইড। স্মুথ এই এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ির জানালার কাচ বন্ধ করে গাড়ি চালালে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গড়ি বেড়ে যায়। এ কারণে আমরা বলেছি সর্বোচ্চ গতিসীমা ৮০ কিলোমিটার হওয়া উচিত। আমরা বিষয়টি বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম। তারা অনুমোদন দেওয়ার পর আমরা গতিসীমা ৮০ কিলোমিটার করে দিয়েছি। এখন ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটারের অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালালে ট্রাফিক পুলিশ মামলা করবে।
২০২৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর এক্সপ্রেসওয়ে চালুর পর থেকে গতিসীমা ৬০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হলেও কখনো তা মেনে চলতে দেখা যায়নি। যানবাহন দ্রুত চলার জন্য যে পথ তৈরি করা হয়েছে, সেখানে এত কম গতিসীমা নির্ধারণ করা নিয়ে সমালোচনা ছিল। কোনো যানবাহনকেই সেই গতিসীমা মেনে চলতে দেখা যায়নি। গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সেন্ট্রাল কন্ট্রোল বিল্ডিংয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে অতিরিক্ত গতিতে যানবাহন চালালে ভিডিও দেখে ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে মামলা দেবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এর পর থেকে এক্সপ্রেসওয়ের কয়েকটি স্থানে গতিসীমা নজরদারির যন্ত্র স্পিডগান নিয়ে পুলিশের একাধিক দলকে অবস্থান করে অনেক যানবাহনকে মামলা করতে দেখা গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে হাসিব হাসান খান জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় কমান্ড সেন্টারে সার্বক্ষণিক পুলিশ কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকা সম্ভব নয়। সে জন্য তারা একটা কেব্লের মাধ্যমে পুলিশের দপ্তরে সংযোগ দেবেন, যাতে পুলিশ সেখানে বসেই তদারক করতে পারেন। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের যাত্রা শুরুর পর থেকে তারা মূলত পাঁচটি সমস্যা মোকাবিলা করছেন। এগুলো হলো ওভারহিট গাড়ি, চাকা পাংচার হওয়া, জ্বালানি শেষ হয়ে যাওয়া, বিমানবন্দরের যাত্রীসেবা, দুর্ঘটনা। চালুর পর থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত বড় আকারের ১০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে দিনে গড়ে ৫৫ হাজার গাড়ি চলাচল করে। এর বেশির ভাগ ব্যক্তিগত। এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ এখনো শেষ হয়নি। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে কাওলা থেকে রেললাইন ধরে তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর হয়ে যাত্রাবাড়ীর কাছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালীতে গিয়ে শেষ হবে এই সড়ক। পুরো সড়কের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।