
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিআরটি প্রকল্পের কারণে টঙ্গী-আব্দুল্লাহপুর সহজ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় তুরাগ নদের টঙ্গীবাজার-আব্দুল্লাহপুর অংশে বেইলি ব্রিজ নির্মাণের দাবিতে বেশ কিছু দিন যাবত আন্দোলন করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী ও বাজারের ব্যবসায়ীরা।
শনিবার তৃতীয় দফায় আন্দোলনের অংশ হিসেবে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিআরটি উড়াল সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শণ করেন ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী। ঢাকার আব্দুল্লাহপুর-টঙ্গী সংযোগস্থলে এ অবরোধ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে প্রায় পৌনে এক ঘন্টার অবরোধ কর্মসূচিতে মহাসড়কের উভয়পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন হাজারো যাত্রীসাধারণ। পরে খবর পেয়ে গাজীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নিবার্হী প্রকৌশলি কে এম শরিফুল আলম ঘটনাস্থলে পৌঁছে তুরাগ নদের উপর দু’টি বেইলি ব্রিজ নির্মাণের আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্দরা অবরোধ ও মানববন্ধন তুলে নেন।
মানববন্ধন ও অবরোধ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সভাপতি সরকার জাবেদ আহমেদ সুমন, সাবেক সভাপতি রাশেদুল ইসলাম কিরণ, বিএনপি নেতা ইসমাইল সিকদার বসু, আব্দুর রহিম খান কালা, জসিম উদ্দিন ভাট, মিজানুর রহমান, বি এম শামীম, জি এম হাসান, শিশির সরকার, তৈয়ব আলী, হানিফ মিয়াসহ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ।
এসময় বক্তারা বলেন, টঙ্গীবাজারে প্রায় ২৫ হাজার ছোট বড় বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এখানে শত শত লোকের রুজি-রোজগার জড়িত। ঐতিহ্যবাহী টঙ্গীবাজারে আব্দুল্লাহপুর হয়ে উত্তরা, উত্তরখান, হরিরামপুর (তুরাগ). পূবাইল, কালীগঞ্জ, আশুলিয়াসহ আশপাশ এলাকার হাজার হাজার মানুষ প্রয়োজনীয় মালামাল বেচা-কেনা করতে আসেন। টঙ্গীবাজার ও আব্দুল্লাহপুরের সাথে সংযোগ স্থাপনকারী তুরাগ নদের বেইলি ব্রিজটি বিআরটি কর্তৃপক্ষ খুলে নিয়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
তাই অনতিবিলম্বে তুরাগ নদের উপর বেইলি ব্রিজ পুনরায় স্থাপন করে সকলের যাতায়াত সুগম করার দাবি জানান এলাকাবাসী। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তুরাগ নদে বেইলি ব্রিজ নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি করেন। টঙ্গী বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও স্থায়ী বাসিন্দা বিএনপি নেতা রাশেদুল ইসলাম কিরণ বলেন,বাজার থেকে মাল-ছামানা নিয়ে উড়াল সড়কে উঠা-নামা অনেক কষ্টকর ব্যাপার। তাছাড়া অনেক দূর ঘুরে বাজারে আসা-যাওয়া করতে হয়। তুরাগ নদে যেহেতু বড় নৌযান চলাচল করে না, তাই বিদ্যমান বা আগের সমতল সেতু ব্যবস্থা ফিরিয়ে দিতে হবে। অন্যথায় জনভোগান্তি নিরসনে আমরা যে কোনো কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো। তিনি বলেন, বিআরটি কর্তৃপক্ষ তথা বিগত ফ্যাসিবাদ সরকারের ভুলের কারণে অত্র এলাকাবাসী চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। এটি মেনে নেয়া যায় না। বিআরটি নকশা সংশোধন করে জনদুর্ভোগ লাঘব করতে হবে।
গাজীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার মোহাম্মদ শরিফুল আলম বলেন, বিআরটি প্রকল্পের উড়াল সড়ক অবরোধ করে ব্যবসায়ীরা অবস্থান করছেন এমন খবর পেয়ে এখানে এসেছি। তুরাগ নদের উপর বিআরটি প্রকল্পের অধীনে একটি এবং সড়ক ও জনপদের অধীনে আরো দুইটি বেইলি ব্রিজ ছিলো। গত ফেব্রুয়ারি মাসে এক দুর্ঘটনায় একটি বেইলি ব্রিজ ভেঙ্গে পড়ে যায়। বাংলাদেশ অভ্যন্তরিন নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) অনুমতি দিলে তুরাগ নদের উপর আমরা (সওজ) স্থায়ীভাবে দুইটি বেইলি ব্রিজ স্থাপনের ব্যবস্থা করবো।