
অন্তর্র্বতী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংগঠিত গণহত্যার বিচার দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর করতে হবে। বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ফয়সালা এই বাংলার মাটিতে করতে হবে।’
আজ মঙ্গলবার সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের এই ভূখণ্ডের জনপদের মানুষের যে লড়াইয়ের ইতিহাস রয়েছে—১৯৪৭ থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং ২০২৪ সালের ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থান—সেইসব লড়াইয়ের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করেই আমরা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করব এবং সেই লক্ষ্যেই এনসিপি কাজ করে যাচ্ছে।’
‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পেলেও আমাদের সার্বভৌমত্ব বারবার হুমকির মুখে পড়েছে। আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো বারবার ভেঙে পড়েছে। আমরা গণতান্ত্রিক সংবিধান গড়ে তুলতে পারিনি। একদলীয় সংবিধানের মাধ্যমে ফ্যাসিজম ও একদলীয় স্বৈরতন্ত্রের বীজ বপন করা হয়েছিল। ফলে, একটি নতুন প্রজাতন্ত্র আমাদের করতে হবে এবং তার জন্য একটি নতুন সংবিধান ও গণপরিষদ নির্বাচনের প্রয়োজন। সেই জায়গা থেকে আমরা সেকেন্ড রিপাবলিকের কথা বলেছি। আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি।’
জাতীয় নাগরিক পার্টি বর্তমানে সাংগঠনিকভাবে কার্যক্রম বিস্তৃত করার দিকে মনোযোগী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘(নির্বাচন কমিশনে) নিবন্ধন নিতে যেসব শর্ত পূরণ করতে হয়, সেগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে পূরণ করব। এ মাসের মধ্যে আমরা গঠনতন্ত্র প্রণয়নের কাজ শুরু করব।’
তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বারবার দীর্ঘায়িত করা হয়েছে। এবার যেন আর দীর্ঘায়িত না হয়, ২৪’এর গণঅভ্যুত্থান যেন ব্যর্থ না হয় সেজন্য পুরনো সংবিধান ও পুরনো শাসন কাঠামো রেখে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব নয়। কেবলমাত্র সরকার পরিবর্তন করে জনগণের কল্যাণ সম্ভব নয়। গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রজনতা রক্ত দিয়েছে কেবল সরকার পরিবর্তনের জন্য নয়, বরং শাসন কাঠামোসহ পুরো সাংবিধানিক পরিবর্তন এনে নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু করতে- যেখানে প্রকৃত গণতন্ত্র, ইনসাফ ও সাম্য নিশ্চিত করা সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘অভ্যুত্থানে আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিল এবং অন্তর্র্বতী সরকারের প্রতিও আহ্বান, যারা জুলাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত এবং যারা গত ১৫ বছর এই বাংলার মাটিতে জুলুম করেছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে এর বিচার বাংলাদেশের মানুষ দেখতে চায়। বিচারের পরে সংস্কার কার্যক্রমের জন্য গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দ্রুত জাতীয় সংলাপে গিয়ে জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্রের দ্রুত বাস্তবায়ন করবে, সেটা আমরা দেখতে চাই।’