Status

ছাগলনাইয়া বেলাল হত্যা মামলায় ৩ বন্ধু গ্রেফতার

ফেনীর ছাগলনাইয়ার দক্ষিণ সতর এলাকার বেলাল হোসেন মাদক সেবন নিয়ে দ্বন্দ্বে খুন হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। মৃত বেলালের তিন বন্ধুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

 

পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাদক নিয়ে দ্বন্দ্বে নিজেদের মধ্যে মারামারির কথা তারা স্বীকার করেছে। তবে কার মারধরে বেলাল হোসেনের মৃত্যু হয়েছে তা স্বীকার করেনি কেউ।

 

আরও ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বৃহস্পতিবার দুপুরে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে পুলিশ তিন আসামিকে ফেনীর আদালতে পাঠায় । শুনানি শেষে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (ছাগলনাইয়ার আমলি আদালত) অপরাজিতা আসামি আসলাম উদ্দিন ও রাফিকুল ইসলাম হৃদয়ের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

 

বুধবার রাতে বেলাল হোসেনের বাবা নুরুল আলম মিন্টু তিনজনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওইদিনই তিন আসামিকে গ্রেফতার করে।

 

তারা হলো- ছাগলনাইয়া পৌরসভার ২ নাম্বার ওয়ার্ডের আলি আহাম্মদ ভেন্ডার বাড়ির আলাউদ্দিনের ছেলে আসলাম উদ্দিন (২২) একই ওয়ার্ডের মোচ্ছদী বাড়ির মৃত নুর হোসেনের ছেলে রাফিকুল ইসলাম হৃদয় এবং ফুলতলী আলমগীর বাড়ির আলমগীরের ছেলে জিহাদ উদ্দিন (১৮)।
পুলিশ বলছে, মৃত বেলালসহ গ্রেফতার তিনজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তারা সবাই মাদকসেবি।

 

বেলাল হোসেন দক্ষিণ সতর এলাকার মোচ্ছদী বাড়ির নুরুল আলম মিন্টুর একমাত্র ছেলে। তার চার বছর বয়সে মায়ের সংসার বিচ্ছিন্ন হয়।
আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মোঃ সালাউদ্দিন রাশেদ জানান, মঙ্গলবার রাত ১১ টা দশ মিনিটে ঘর থেকে বের হয়ে তুলাতুলি বাজারে যায় বেলাল হোসেন। এসময় সেখানে অপেক্ষা করছিল তার বন্ধু আসলাম ও রাফিকুল ইসলাম হৃদয়। তারা তিনজন মিলে তুলাতলি বাজারের দোকানের পেছনে বসে ইয়াবা সেবন করে।

 

তিনি জানান, ইয়াবা সেবনের আগে তাদের আরেক বন্ধু জিহাদ গাজা সেবনের জন্য আসলামকে টাকা দেয়। গাজা নিয়ে তাকে দক্ষিণ সতর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আসতে বলেছিল জিহাদ। কিন্তু বেলাল ও রাফিকুলের সঙ্গে ইয়াবা সেবন করায় জিহাদের জন্য গাজা কিনে সেখানে যায়নি আসলাম। জিহাদ বারবার ফোন করলেও আসলাম ফোন রিসিভ করেনি। বারবার ফোন করায় ক্ষিপ্ত হয় আসলাম। ইয়াবা সেবন করার সময় তারা তিনজন যুক্তি করে জিহাদকে শায়েস্তা করার। তার মোবাইল ও টাকাপয়সা ছিনতাই করার প্ল্যান করে তারা। তখন রাত তিন টার কাছাকাছি। পরামর্শ অনুযায়ী প্রথমে আসলাম যায় জিহাদের কাছে। পরে বেলাল ও রাফিকুল যেয়ে কিছু বুঝে ওঠার আগেই জিহাদকে মারধর শুরু করে। ছিনিয়ে নেয় তাঁর মোবাইল ফোন। জিহাদকে বেশি মারধর করে বেলাল। পরে জিহাদও পালটা মারধর করে বেলালকে। চলে নিজেদের মধ্যে মারামারি।

 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতার তিনজন এখনও মুখ খুলেনি যে সুনির্দিষ্ট কার আঘাতে বেলাল হোসেনের মৃত্যু হয়েছে। তারা ওই প্রশ্নের জবাব এডিয়ে যায়। মৃত্যুর বিষয় তারা একেক সময় একেক কথা বলছে। তাদের দেয়া সব তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে।
আরও অধিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত দুজনের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। জিজ্ঞাসাবাদ মৃত্যুর মূল রহস্য উদঘাটন হবে বলে মনে করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
এদিকে বুধবার রাতে বেলাল হোসেনকে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এর আগে দুপুরে ফেনী হাসপাতাল মর্গে তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।

 

মঙ্গলবার রাত ১১ টা দশ মিনিটে ঘর থেকে বের হয় বেলাল হোসেন। রাতে আর ঘরে ফিরেনি। সকালে বাড়ির পাশে ফসলি খেতে তার মরদেহ পড়ে থাকে।
বেলাল হোসেনের চার বছর বয়সে তার মায়ের সংসার বিচ্ছিন্ন হয়। সে থেকে বাবার কাছেই ছিল। বেলাল ছাগলনাইয়া বাজারে একটি ক্রোকারিজ দোকানে চাকরি করতেন।

Source link

Leave a Reply

Back to top button