চাল আমদানির ভালো উৎস পাকিস্তান

চট্টগ্রাম বন্দরে পাকিস্তান থেকে আমদানি করা চাল খালাস কার্যক্রম গতকাল বৃহস্পতিবার শুরু করেছে। এই কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর। এসময় তিনি বলেন, চাল আমদানির ক্ষেত্রে পাকিস্তান বাংলাদেশের জন্য একটি ভালো উৎস। এ ধরনের বিকল্প উৎস যত থাকবে, ক্রেতা হিসেবে আমাদের তত সুবিধা হয়। সরবরাহ যত বেশি হবে, সঙ্কট তত কমবে। দুপুরে বন্দরের চট্টগ্রাম কনটেইনার টার্মিনাল (সিসিটি-১) জেটিতে চাল খালাস কার্যক্রম পরিদর্শনে যান মহাপরিচালকসহ খাদ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কমকর্তারা।
মহাপরিচালক আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর সাংবাদিকদের বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির চুক্তি হয়েছে। মোট ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল আসবে। এর মধ্যে এখন যে জাহাজটা এসেছে, সেখানে ২৬ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন এসেছে। পাকিস্তানে ভালো চাল উৎপাদন হয়। গত ১৪ জানুয়ারি ঢাকায় সরকারি পর্যায়ে পাকিস্তান থেকে ৫০ হাজার টন চাল আমদানির সমঝোতা স্মারক সই হয়। এর আওতায় মঙ্গলবার পাকিস্তানের কাসিম বন্দর থেকে প্রথম চালানের চাল নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছে পাকিস্তানি পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি সিবি’। বুধবার জাহাজটি সিসিটি-১ জেটিতে ভেড়ানো হয়।
জাহাজটির স্থানীয় প্রতিনিধি রেনু শিপিং লাইন্সের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আরফান জানিয়েছেন, পাকিস্তান থেকে প্রথম চালানের বাকি চাল রমজানের মধ্যেই চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছবে। গত দেড় দশকে সরকারি চুক্তির আওতায় চাল নিয়ে পাকিস্তান থেকে এই প্রথম একটি জাহাজ বাংলাদেশে এসেছে বলে শিপিং ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। এতদিন বেসরকারি পর্যায়ে পাকিস্তানের বিখ্যাত বাসমতি চাল আমদানি হলেও এ প্রথম সরকার খাওয়ার জন্য আতপ চাল আমদানি করছে।
খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক জানান, এ মুহূর্তে ১৫ লাখ ১৫ হাজার মেট্রিক টনের মতো চাল মজুত আছে। আমরা এখন স্টেবল পজিশনে আছি। চাহিদা এবং মজুত যথাযথ আছে। ১৩ লাখ, সাড়ে ১৩ লাখের নিচে মজুত থাকলে, আমরা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকি। বর্তমানে বিভিন্ন দেশ থেকে আমাদের মোট সাড়ে ৭ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির চুক্তি আছে জানিয়ে তিনি বলেন, চাহিদা ও মজুত পরিস্থিতি দেখে প্রয়োজনে আবারও চুক্তি করবো, আবার চাল নিয়ে আসবো। তিনি আরো জানান, চুক্তির বিপরীতে এ পর্যন্ত ৩ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন চাল, এটা শুধু পাকিস্তান না, বিভিন্ন দেশ থেকে রিসিভ করেছি। ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, ভিয়েতনাম থেকে চাল এসেছে। আশা করছি, রমজানের মধ্যে আরও ১ লাখ মেট্রিক টনের মতো আমাদের এখানে আসবে, যেগুলো পাইপলাইনে আছে।
এত আমদানির পরও চালের দাম কমছে না কেন- জানতে চাইলে মহাপরিচালক বলেন, সারাদেশে ওএমএস কার্যক্রম চলমান আছে। ১০ হাজার ৪৩ জন আমাদের ওএমএস ডিলার আছেন। এর বাইরে খাদ্যবান্ধব যে কর্মসূচি আছে, সেখানে ৫০ লাখ কার্ডহোল্ডার আছে, যারা মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাচ্ছেন। আমাদের যে অবজারভেশন, মার্কেটটা এখন ডাউন আছে আগের তুলনায়। হতদরিদ্রদের চাল ও গম বিতরণের পরিমাণ কমেছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কাছে যে পরিসংখ্যান আছে, দরিদ্র মানুষকে চাল ও গম দেয়ার পরিমাণ কমেনি।

Source link

Exit mobile version