
চাঁদে মোবাইল নেটওয়ার্ক! একসময় যা ছিল নিছক কল্পবিজ্ঞান, তা হতে চলেছে এখন বাস্তব। নোকিয়া ও ইনটুইটিভ মেশিনস যৌথভাবে নোকিয়ার ‘লুনার সারফেস কমিউনিকেশন সিস্টেম’ চাঁদের বুকে স্থাপনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এই প্রযুক্তি ইনটুইটিভ মেশিনসের আইএম-২ মিশন ল্যান্ডার ‘অ্যাথেনা’-তে সংযুক্ত করা হয়েছে, যা ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে উৎক্ষেপণের অপেক্ষায় রয়েছে। মিশনটির লক্ষ্য চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে অবতরণ করে রোভার ও ‹হপার› মোতায়েন করা। একইসঙ্গে এটি চাঁদের কক্ষপথে একটি যোগাযোগ উপগ্রহও স্থাপন করবে।
নোকিয়ার এই মিশনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য চাঁদের পৃষ্ঠে প্রথমবারের মতো ফোরজি/এলটিই নেটওয়ার্ক স্থাপন করা। এতদিন মহাকাশযানগুলোর মধ্যে যোগাযোগের জন্য সাধারণত রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হলেও নাসার আর্টেমিস কর্মসূচির ভবিষ্যৎ অভিযানে আরও কার্যকর ও উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন নেটওয়ার্ক প্রয়োজন। নোকিয়া বেল ল্যাবস সলিউশনস রিসার্চের প্রেসিডেন্ট থিয়েরি ক্লেইন বলেন, ‘আমরা দেখাতে চাই যে সেলুলার প্রযুক্তি চাঁদ ও মঙ্গলের মতো অভিযানের জন্য নির্ভরযোগ্য, উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন ও কার্যকর যোগাযোগ ব্যবস্থা দিতে পারে।’ লুনার সারফেস কমিউনিকেশন সিস্টেম নেটওয়ার্কটি অ্যাথেনার কার্বন-কোম্পোজিট প্যানেলে সংযুক্ত করা হয়েছে। মহাকাশের কঠোর পরিবেশ সহ্য করতে এটি থার্মাল প্রোটেকশন সিস্টেমের মাধ্যমে সুরক্ষিত রাখা হয়েছে। ল্যান্ডারের সৌর প্যানেল থেকে এটি বিদ্যুৎ পাবে, আর অ্যাথেনার অ্যান্টেনার মাধ্যমে ল্যান্ডার ও চন্দ্রযানগুলোর মধ্যে সংকেত আদান-প্রদান করা হবে।
এছাড়া দুটি ছোট চন্দ্রযানে অতিরিক্ত যোগাযোগ মডিউল সংযোজন করা হয়েছে। মাইক্রো-নোভা হপার (গ্রেস) ইনটুইটিভ মেশিনসের তৈরি একটি যান, যা চাঁদের চিরস্থায়ী ছায়াচ্ছন্ন গহ্বর অন্বেষণ করে পানি বরফ খুঁজবে। মোবাইল অটোনোমাস প্রসপেক্টিং প্ল্যাটফর্ম রোভার লুনার আউটপোস্টের নির্মিত একটি রোভার, যা চাঁদের পৃষ্ঠের মানচিত্র তৈরি ও পরিবেশগত তথ্য সংগ্রহ করবে।