চড়া দামের বিদেশি ফলে সয়লাব বাজার

রমজান মাস আসতেই ফলের বাজারে বড় ধরনের মূল্যবৃদ্ধি দেখা গেছে। বিশেষ করে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ফলের দাম বাড়ায় ভোক্তাদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। রোজার ইফতারিতে ফল একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান হলেও, বাজারদর বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের জন্য তা ক্রয় করা কঠিন হয়ে পড়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিশেষ করে পাকা পেঁপে ও বিদেশি ফলের দাম অতিরিক্ত বেড়েছে।
রমজান মাসে ফলের চাহিদা স্বাভাবিকভাবেই বাড়ে। তবে এবার বাড়তি শুল্ক ও আমদানির সীমাবদ্ধতার কারণে বিদেশি ফলের দাম আকাশচুম্বী হয়ে গেছে। পাশাপাশি দেশি ফলের বাজারেও বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজার থেকেই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, তাই খুচরা বাজারেও ফলের দাম বেশি। অন্যদিকে, ক্রেতারা দাবি করছেন, বাজার মনিটরিংয়ের অভাব এবং অতি মুনাফার প্রবণতার কারণে এ মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আপেল, আঙুর, নাশপাতি, কমলা ও মাল্টার দাম আগের তুলনায় ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বিশেষ করে কমলা ৩৫০, সবুজ আঙুর ৩৫০, লাল আঙুর ৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মাঝারি আকারের বেদানা ৪৫০, মাল্টা ৩০০ থেকে ৩২০ এবং সবুজ আপেল ৪০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। নাশপাতির দামও বেড়ে ৩৫০ টাকা কেজি হয়েছে।
পাইকারি বাজারের বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফল আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করার ফলে বিদেশি ফলের দাম বেড়েছে। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১০০ টাকার ফল আমদানি করতে ১৩৬ টাকা শুল্ক-কর দিতে হচ্ছে, যা সরাসরি খুচরা বাজারে প্রভাব ফেলছে।
দেশি ফলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে পাকা পেঁপের। কয়েকদিন আগেও ৯০-১০০ টাকা কেজিতে পাওয়া গেলেও, এখন তা ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। থাই পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ২৩০ টাকায়। ফল বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজার থেকেই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, তাই বাধ্য হয়ে তারা উচ্চ মূল্যে বিক্রি করছেন।
রাজধানীর সেগুনবাগিচা, গুলিস্তান, ভিক্টোরিয়া পার্কসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ বিদেশি ফলের দাম কয়েকদিনের ব্যবধানে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এক ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘কয়েকদিন আগেই ২৭০ টাকায় মাল্টা কিনেছি, আজ তা ৩০০ টাকা। অথচ নতুন আমদানি হয়নি, দাম কেন বাড়লো?’
তবে দেশি ফলের মধ্যে কিছু ফল আগের দামে বিক্রি হচ্ছে। তরমুজ ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, আনারস প্রতি পিস ৩০ থেকে ৪০ টাকা এবং বাঙ্গিও তুলনামূলকভাবে কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। তবে বেলের দাম কিছুটা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
ফলমূল স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে রোজার সময় শরীরে পানিশূন্যতা রোধ করতে ফলের ভূমিকা অপরিসীম। তবে বাজার মনিটরিং বাড়ানো না হলে সাধারণ মানুষের জন্য ফল ক্রয় করা আরও কঠিন হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন ভোক্তারা। তথ্যসূত্র : ঢাকা মেইল