চট্টগ্রাম ওয়াসার পানিতে অতিরিক্ত লবণাক্ততা

চট্টগ্রাম ওয়াসার পানিতে মাত্রাতিরিক্ত লবণের কারণে সঙ্কটে পড়েছে নগরবাসী। বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে নগরীর বিভিন্ন স্থানে চট্টগ্রাম ওয়াসার সরবরাহকৃত পানিতে বেড়েছে লবণাক্ততা। ফলে পানির উৎপাদন কমানো হয়েছে, আর এতে করে পানি নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন সংখ্যক নগরবাসী।
এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে অতিদ্রুত সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়েছেন দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের জাতীয় প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্টান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিবাগ ও নগর কমিটির নেতৃবৃন্দ।
গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ম সম্পাদক মো. সেলিম জাহাঙ্গীর, দক্ষিণ জেলা সভাপতি আবদুল মান্নান ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেন, ক্যাব চট্টগ্রাম পবিত্র মাহে রমজানে নিরবিচ্ছন্ন পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতে সংস্লিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানের আগাম প্রস্তুতির দাবি করে আসলেও কর্তৃপক্ষ সে বিষয়ে কর্ণপাত না করে বিগত সরকারসমুহের আমলের ন্যায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সবকিছু স্বাভাবিক আছে বলে প্রতিবেদন দিয়ে বাহবা নিয়েছেন। আর সংকটে পড়েছেন সেবাগ্রহীতারা।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, নগরীর হালদা ও কর্নফুলী নদীতে প্রতি লিটারে ২ হাজার ৫০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত লনাক্ততা দেখা দিয়েছে, আর সহনীয় মাত্রা হলো ২৫০ মিলিগ্রাম। শুকনা মৌসুম শুরু হবার সময় থেকে বেশ কয়েক বছর যাবৎ এসমস্যাটি দেখা দিচ্ছে। লবনাক্ততার কারণে ওয়াসার চারটি প্রকল্পে পানির উৎপাদন ছয় কোটি লিটার পর্যন্ত কমেছে। এ কারণে রমজান মাসে পানি সংকটে পড়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকার গ্রাহকরা। এমনিতেই নগরীর একচতুর্থাংশ এলাকায় সরবরাহকৃত পানিতে ময়লা ও ঘোলা পানি এবং লাইনে পানি না থাকার মতো নানা সংকটে গ্রাহকরা বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহে চরম দুর্ভোগ পড়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে রমজানে বিভিন্ন মসজিদের মুসল্লীদেরকে টিউবওয়েল থেকে পানির জোগান দিতে হচ্ছে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, এবছরে বৃষ্টি কম হওয়ায় নদীতে সাগরের পানি ঢুকছে। জোয়ারের পাশাপাশি অমাবস্যা-পূর্ণিমায় এ সমস্যা বহুগুণ বেড়ে যায়। কাপ্তাই পানিবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে পর্যাপ্ত পানি না ছাড়ায় জোয়ারের সময় লবণাক্ত পানি ওপরের দিকে উঠে যাচ্ছে। এছাড়াও কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পর্যাপ্ত পানি ছাড়া হচ্ছে না। সে সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টিও হচ্ছে না। কাপ্তাই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে পর্যাপ্ত পানি ছাড়া হলে এবং বৃষ্টি হলে লবণাক্ত পানি নদীতে প্রবেশ হতো না। আর এসমস্যা বেশ কয়েক বছর ধরে প্রকট হলেও চট্টগ্রাম ওয়াসা নানা তালবাহনায় কিছুই না করে নানা প্রকল্প নিয়ে ব্যস্ত দিন কাটাচ্ছেন।